নির্বাচনের সময় বিদেশিদের নিরাপত্তা দিতে জাতিসংঘের সুপারিশ

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় জাতিসংঘসহ বিদেশি পর্যবেক্ষকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের অনুরোধ জানিয়েছেন সফররত জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব উনাইসি লুতু ভুনিওয়াকার নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল।

রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে বৈঠক করে এ অনুরোধ জানান।

পরে ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিস্তারিত জানান।

মন্ত্রী বলেন, ‘এখানে জাতিসংঘ ও বিদেশি মানুষ যারা থাকবেন, তাদের যেন কোনো ধরনের নিরাপত্তার সমস্যা না হয় সে বিষয়ে অনুরোধ জানিয়েছেন। আমরা সফররত দলটিকে জানিয়ে দিয়েছি, আমাদের দেশে যে বিদেশি বন্ধুরা কাজ করছেন ইউনাইটেড নেশন ও অন্যান্য বন্ধু দেশের লোক এবং আমাদের উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে কাজ করছেন তারা নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারবেন। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী অবশ্যই তাদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন।’

মন্ত্রী বলেন, ‘পাশাপাশি আমরা এটিও বলেছি, আমাদের বাঙালি সমাজ একটি ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ এটি আমরা কারও সঙ্গে কোনো সময়ই ঝগড়াঝাটি করি না। আমরা একে অপরের পাশে দাঁড়াই। আমাদের সেই সামাজিক অবস্থাটা রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশ কোনো বিদেশিদের ওপর কোনোদিনই অত্যাচার করে না। কিংবা কোনো বিদেশিকে আক্রমণ করে না। সেটিও আমরা মনে করে দিয়েছি। কাজেই এ ধরনের আশঙ্কা তাদের করা উচিৎ হবে না। আমরা আমাদের নিরাপত্তাবাহিনীসহ এদেশের জনগণ তাদের সুরক্ষা দেবেন এটিই আমি স্পষ্ট বলেছি। আমাদের দেশে এমন কিছু ঘটবে না যার জন্য তারা আতঙ্কিত হতে পারে বা অসুবিধায় পড়তে পারেন।’

আরও বলেন, ‘নির্বাচনের সময় সবাই নির্বাচনে অংশ নেবে। সেখানে আনন্দের আমেজ আসবে। একটা উৎসবের আমেজ আসবে। কার দল কিভাবে জিতবে এটি শুধু আমাদের দেশ নয় উপমহাদেশে এ ধারা চলে আসছে। নির্বাচনটা আনন্দঘন পরিবেশের মধ্য দিয়ে হয়। দুই-এক জায়গায় সহিংসতা হয় না সেটি নয়। তবে আমাদের নিরাপত্তাবাহিনী অত্যন্ত দক্ষ তারা সহিংসতা নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম। এবং নির্বাচনের সময় আমাদের নির্বাচন কমিশনের আওতায় থাকবেন নিরাপত্তাবাহিনী। এই বাহিনী এ পর্যন্ত অনেকগুলো জাতীয় নির্বাচন ও স্থানীয় সরকারের নির্বাচন করেছে। তাদের অভিজ্ঞতা রয়েছে। কাজেই আমি মনে করি, কোনো রকমের অসুবিধা বা অনিরাপত্তার মতো অবস্থায় কেউ পড়বে না। সেটিই আমরা জানিয়ে দিয়েছি।’

আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘কোনো ধরনের আশঙ্কা বা কোনো কিছু তারা প্রকাশ করেনি। তারা বলেছেন আমাদের ইউনাটেড নেশনের অফিসারগুলো এখানে বিভিন্ন পর্যায়ে কাজ করছেন তাদের কোনো অসুবিধা হবে কিনা? তারা সেটি জানতে চেয়েছেন। আমি বলেছি, প্রশ্নই আসে না। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর ডিউটিই হলো তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। তাই আশঙ্কার কোনো কারণ নেই। তিনি আমাদের দেশের অবকাঠামো উন্নয়নসহ অন্যান্য উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। পাশাপাশি আসরা নারীর ক্ষমতায়নের কথা বলেছি৷ আমরা ইউনাইটেড স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো কি সেবা দিচ্ছে এবং কোভিড নিয়ন্ত্রণে অভূতপূর্ব সেবা দিয়েছে।’

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে জাতিসংঘকে কি আহ্বান করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী আসার পরে আমাদের ট্যুরিস্ট হাব ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সেখানে স্থানীয় লোকজন মাইনরিটি হয়ে গেছে। সংরক্ষিত বনাঞ্চল ছিল সেটি শেষ হয়ে গেছে। সেখানকার লোকজন নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তারপর আশঙ্কার যে জায়গা, এখানে আমরা কোনো মাদক তৈরি করি না। কিন্তু মিয়ানমার মাদক তৈরি করে। রোহিঙ্গাদের কেউ কেউ মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে।’

তিনি বলেন, ‘এখানে আমাদের বিশাল বর্ডার সে জন্য দুইটি হেলিকপ্টার বিজিবিকে দিয়েছি। কোস্টগার্ড শক্তিশালী করেছি। তারপরও মাদক আমাদের দেশে চলে আসছে। সেটি আমাদের আতঙ্কের জায়গা। আমরা সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে চাই। আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি৷ একইসঙ্গে তাদের সহযোগিতা চেয়েছি। যেন রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী খুব শিগগির প্রত্যাবাসন করতে পারে জাতিসংঘ যেন সেই ব্যবস্থা নেয়।’