নেত্রকোনার আটপাড়ায় সেচ মেশিন স্থাপনে বাঁধার অভিযোগে কৃষকদের মানববন্ধন
নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার সুখারি ইউনিয়নের করারধূপ গ্রামের সেচ মেশিন স্থাপনে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে একই গ্রামের প্রভাবশালী কয়েকজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে। সেচ মেশিন স্থাপন করতে না পারায় গ্রামের প্রায় দেড় শতাধিক কৃষকের শতাধিক একর বোরো ক্ষেত চাষ করা যাচ্ছে না। এতে করে কৃষকদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার সৃষ্টি হচ্ছে।
তারই প্রতিবাদে শনিবার (২১ জানুয়ারী) বিকেলে বিক্ষুব্ধ লোকজন গ্রামের সামনের মাঠে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এর আগে স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করে।
এসময় এলাকার কৃষক সমাজের ব্যানারে কর্মসূচি চলাকালে বক্তব্য দেন, সুখারি ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য ও করারধূপ গ্রামের বাসিন্দা আবদুর রহিম, কৃষক ইকবাল মিয়া, জামাল মিয়া, বাবুল মিয়া, আলতু মিয়া, আফতাব উদ্দিন, কৃষাণি রুমেলা খাতুন, ফুলেসা আক্তার, আদালত খাতুন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, করারধূপ গ্রামের সামনের মাঠে কৃষকদের প্রায় শতাধিক একর বোরো ফসলি জমি রয়েছে। অন্যান্য বছর কৃষরা মাঠে শ্যালো মেশিন বসিয়ে ক্ষেতে পানি দিয়ে বোরো ধান আবাদ করতেন। কিন্তু এবার ডিজেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় শ্যালো মেশিন না বসিয়ে এলাকার প্রায় ১৬ জন মিলে এল এল পি সেচ পাম্প স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। সে অনুযায়ী গ্রামের আনোয়ার হোসেনকে কমিটির প্রধান করে সেচ পাম্প ক্রয়, পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি, ট্রান্সফরমারসহ প্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয় করেন কৃষকরা। এ ছাড়া বৈধভাবে সেচ মেশিন স্থাপনের অনুমোদন আনা হয়। এতে করে সব মিলে কৃষকদের প্রায় আড়াই লাখ টাকার মতো খরচ হয়।
কিন্তু অভিযোগ ওঠেছে গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে সেচ পাম্পে পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ দিতে কার্যালয়ের লোকজন এলে গ্রামের আবদুল হাই, তাঁর স্বজন এরশাদ মিয়া, আলী আহম্মদ, আবুল কাশেমসহ কয়েকজন এতে বাধা দেন। পরে কৃষকরা আটপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। কিন্তু প্রতিকার না পেয়ে শনিবার বিকেলে তাঁরা মানবন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
আনোয়ার হোসেন বলেন, আবদুল হাই ও তাঁর লোকজন দাবি জানান, সেচ পাম্প থেকে যা আয় হবে তার অর্ধেক আবদুল হাইদেরকে দিতে হবে। তাঁদের অনৈতিক দাবি না মানায় প্রভাব খাটিয়ে আমাদেরকে সেচ পাম্প বসাতে দিচ্ছে না। দুই তিন দিনের মধ্যে ক্ষেতে পানি দিয়ে চাষ না করতে পারলে এবার আর বোরো আবাদ করা যাবে না। শতাধিক একর ফসলি জমি পতিত থাকবে।’ এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আবদুল হাই বলেন, ‘আমাদেরকে না রেখে তারা পাম্প বসিয়ে নদী থেকে পানি দিতে চাইছে। আমরাও টাকা দিয়ে সামিল হতে চেয়েছিলাম।’
এ ব্যাপারে আটপাড়ার ইউএনও মো. শাকিল আহমেদ বলেন, এখন সেচের সময় চলছে। অভিযোগ পেয়ে আমি কিছু দিন আগে আবদুল হাই ও আনোয়ার হোসেন বিবদমান দুই পক্ষকে নিয়ে বসে সমাধান করেছিলাম। কিন্তু এখন শুনছি আবার ঝামেলা। কৃষকদের জমি যেন পতিত না থাকে সে ব্যবস্থা করা হবে। রোববার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সেচ পাম্প বসানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন