নেত্রকোনার দুর্গাপুরে অন্তঃসত্তা স্ত্রীকে পাষবিক নির্যাতনের অভিযোগ স্বামীর বিরুদ্ধে
নেত্রকোনার দুর্গাপুরে ৩ মাসের অন্তঃসত্তা এক গৃহবধূকে ঘরের ভিতর আটকে রেখে মুখে কসটেপ পেঁচিয়ে কয়েলের আগুন দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছ্যাঁকা ও মারধর করার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। বর্তমানে ভুক্তভোগী ঐ নারী সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।
ভুক্তভোগী গৃহবধূর নাম মিনা আক্তার (২৪)। সে দুর্গাপুর উপজেলার গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নের ভাদুয়া গ্রামের মৃত চাঁন মিয়া ফরাজীর কন্যা। অভিযুক্ত স্বামীর নাম ইব্রাহীম মিয়া(২৯)।পার্শ্ববর্তী ধোবাউড়া উপজেলার বহরভিটা গ্রামের রহমত আলীর ছেলে সে।
মিনা আক্তারের স্বজনরা জানান, মাদরাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থী ছিল মিনা। ভাদুয়া গ্রামের জামে মসজিদে ইমামতি করতেন ইব্রাহীম মিয়া। মসজিদের কাছাকাছি মিনার বাড়ি ছিল। প্রায় সময়ই নানা অযুহাতে তাদের বাড়িতে আসতো। এক পযার্য়ে মিনার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে ইব্রাহীম। প্রেমের সম্পর্ক এলাকায় জানাজানি হলে উভয় পক্ষের সম্মতিতে দেড় বছর পূর্বে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয় তারা।
ভুক্তভোগী মিনা আক্তার জানান, বিয়ের পর তাঁকে নিয়ে কুমিল্লা চলে যান ইব্রাহীম। সেখানে গিয়ে ৬ দিনের মাথায় মিনাকে তাঁর বাবার বাড়ি থেকে যৌতুকের টাকা এনে দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। টাকা এনে দিতে অপারগতার এক পর্যায়ে নরসিংদীতে গার্মেন্টে চাকরি নেন মিনা।এ অবস্থায় মিনা’গর্ভবতী হয়ে উঠায় ওই চাকরি ছেড়ে দেয় সে।
চাকরি ছেড়ে দেওয়ায় যেন কাল হয়ে দাঁড়ালো মিনার। এরপর থেকে শুরু হয় অমানবিক নির্যাতন। গত ১০মে শুক্রবার সকাল থেকেই ঘরে আটকে রেখে মিনার দুই হাত ও পা বেঁধে, মুখে কসটেপ পেঁছিয়ে মারধর ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কয়েলের আগুন দিয়ে ছ্যাঁকা দেয় ইব্রাহিম। পরবর্তীতে ১৭ মে শুক্রবার ইব্রাহিমের অগোচরে এক প্রতিবেশীর সহযোগিতায় নরসিংধী থেকে পালিয়ে গুরুতর অবস্থায় ভাদুয়া বাবার বাড়িতে চলে আসে। এরপর গত বুধবার তাঁর পরিবারের লোকজন তাকে দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে ভর্তি করে।
মিনা আরো বলেন, আমার গর্ভে সন্তান আসায় কাজ ছেড়ে দেই আমি। এর পর থেকেই আমার উপর চরম নির্যাতন শুরু হয়। আমাকে প্রানে মেরে ফেলার কথাও বলেছে সে। এই কথা প্রান বাঁচাতে আমি পালিয়ে আসি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত স্বামী ইব্রাহিম মিয়ার সঙ্গে কথা বলতে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোছাম্মৎ জেবুন্নেসা জানান, ওই নারী দুইদিন যাবত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতনের ক্ষত আছে। সে তিন মাসের অন্ত:সত্বা বলে জানাগেছে।
দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উত্তম চন্দ্র দেব জানান, ঘটনাটি বিষয়ে এখনো কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন