নেত্রকোনার মদনে বরফকলে অস্বাস্থ্যকরভাবে তৈরি হচ্ছে আইসক্রীম

নেত্রকোনার মদন উপজেলায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বরফকলের আড়ালে তৈরি হচ্ছে শিশুদের প্রিয় খাবার আইসক্রীম।

আইসক্রিম তৈরির জন্য আলাদা পরিবেশ ও নিয়মনীতি থাকলেও তা মানছেন না কলের মালিকরা। প্রশাসন কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় কলের মালিকরা আরো হয়ে উঠেছে বেপরোয়া।

শুধু শিশু কিশোর নয় উত্তপ্ত রৌদে প্রচন্ড গরমে তৃষ্ণা মিটাতে আইসক্রিম সবারই প্রিয়। অস্বাস্থকর পরিবেশে তৈরিকৃত এসব নিম্নমানের আইসক্রীম খাওয়ার ফলে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে উপজেলার কোমলমতি শিশুরা। তৈরিকৃত এ আইসক্রীম কাঠের বক্সে করে সাইকেল-রিক্সায় মাইক লাগিয়ে আকর্ষণীয় প্রচারের মাধ্যমে নিয়ে যাওয়া হয় গ্রাম-পাড়া-মহল্লার অলিতে-গলিতে, হাট-বাজারে এবং বিভিন্ন বিদ্যালয়ের সামনে।

প্রত্যেকটি আইসক্রীম বিক্রি হয় ৩ টাকা থেকে ৫ টাকায় । প্রচন্ড তাপদাহে পিপাসা মিটানোর জন্য শিশুদের পাশাপাশি বড়রাও খাচ্ছে এই আইসক্রীম। ফলে প্রতিনিয়তই আমাশয়, ডায়রিয়া, সর্দি-কাশিসহ নানা ধরণের পানি বাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে সাধারন মানুষ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পৌরসদরের মহিউদ্দিন মার্কেটের ডায়মন্ড বরফ কলে অস্বাস্থ্যকর পরিবশে আইসক্রীম তৈরি হচ্ছে। আইসক্রিমের স্বাদ বাড়ানোর জন্য মিশানো হচ্ছে সেগারিনসহ বিভিন্ন ফ্লেভারের ক্ষতিকারক কেমিক্যাল। যা স্বাস্থের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক। অপরিচ্ছন্ন বালতির মধ্যে খালি হাতেই মেশানো হচ্ছে আইসক্রীমের উপকরণ। পানি রাখার হাউজও রয়েছে অপরিষ্কার। ঢাকনা দেয়া হয়েছে কাঠ দিয়ে। এমনকি হাউজের ভিতরের পানি অনেক দিন আগের। তৈরিকৃত আইসক্রীম চাঁচ থেকে তুলে ময়লা হাতেই রাখা হচ্ছে বাঁশের তৈরি ঝুঁড়ির মধ্যে। আইসক্রীম তৈরির কারিগরদের জন্য নির্দিষ্ট কোন পোশাক নেই। জুতো পায়ে ঘর্মাক্ত শরীরে প্রতিটি মিলেই শ্রমিকরা কাজ করে যাচ্ছে সারাবেলা। মিলের কারিগরদের পাশাপাশি আইসক্রিম বিক্রেতারাও তৈরি করছে এ আইসক্রীম।

মদন পুরাতন বাস স্ট্যান্ডের জননী বরফ কলের মালিক রুহিদাস জানান, বরফ কলের জন্য আমার কাগজপত্র আছে। কিন্তু আইসক্রিম তৈরির কোন ছাড়পত্র নেই।

ডায়মন্ড বরফ কলের মালিক সুব্রত রায় আইসক্রিম তৈরির ছাড় পত্র না থাকার কথা স্বীকার করে জানান, সবাই আইসক্রিম বানাচ্ছে তাই আমিও বানাচ্ছি। সবাই আইসক্রিম বানানো বন্ধ করে দিলে আমিও বন্ধ করে দিব।

স্যানিটারি ইন্সপেক্টর মিতু সাহা জানান, বরফ কল গুলোতে উচ্চ মাত্রায় ক্ষতিকারক কেমিক্যাল ব্যবহার করে আইসক্রিম তৈরি করায় আমি আইক্রিম তৈরির সরঞ্জাম জব্দ করেও তাদের থামাতে পারছি না।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার একে এম লুৎফর রহমান জানান, নিরাপদ খাদ্য অফিসারকে নিয়ে খুব শিগগিরই ফুড গ্রেড কেমিক্যাল ব্যবহার করছে কি না তা দেখে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিব।