পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভুলে বিজ্ঞানের ছাত্র পেল মানবিকের প্রবেশপত্র
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় বুড়াবুড়ি মির্জা গোলাম হাফিজ উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভুলে বিজ্ঞান পড়ুয়া ছাত্রের প্রবেশপত্র মিলেছে মানবিক বিভাগের। এই ঘটনাটি উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের মন্ডলপাড়া গ্রামের বাবুল হোসেনের ছেলে মনিরুজ্জামের।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, মনিরুজ্জামান ২০২১-২০২২ সেশনের ২০২৩ সালের দিনাজপুর বোর্ডের এসএসসি পরীক্ষার্থী। সে পড়ালেখা করেছে বিজ্ঞান বিভাগে। তবে পরীক্ষার আগে প্রবেশপত্র হাতে পেয়ে জানতে পারে তার নিবন্ধন হয়েছে মানবিক বিভাগে। এজন্য তাকে বিজ্ঞান বিভাগে পড়ালেখা করেও মানবিক বিভাগের হয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়েছে। যা মেনে নিতে পারছেন না পরিবারের মা ও বোন।
মনিরুজ্জামানের মা শাহিদা বেগম বলেন, আমার ছেলে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পড়াশোনা করে আসছে। স্কুল কর্তৃপক্ষের ভুলের কারণে ছেলের নিবন্ধন মানবিক বিভাগে হয়েছে। এখন আমার ছেলে কিভাবে পরীক্ষা দিবে। বিভাগ পরিবর্তণের কারণে আমাদের কাছে প্রথমে সাড়ে ৪ হাজার টাকা নিয়েছে মঙ্গলবার (২ মে) আরোও সাড়ে ৫ হাজার টাকা নেয়ার জন্য ছেলের বাবাকে স্কুলে ডাকছে। আজকে না দিলে ছেলের প্রবেশপত্র পরিবর্তন হবে না। আমরা গরীব মানুষ এটার সমাধান চাই।
মনিরুজ্জামানের বোন মুনিরা পারভীন বলেন, ‘আমার ভাই বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পড়াশোনা করেছে। স্কুল কর্তৃপক্ষের ভুলের কারণে মানবিক বিভাগ চলে এসেছে। আমরা আশা করে পড়াশোনা করালাম বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এখন আমাদের আশাটাই যেন ভঙ্গ হয়ে গেল। মনিরুজ্জামানের সহপাঠীরাও বিজ্ঞানের ছাত্র হয়ে মানবিক বিভাগে পরীক্ষা দেওয়া মেনে নিতে পারছেনা।
স্থানীয় অনেকেই জানান, ‘দুই বছর ধরে একটি ছেলে বিজ্ঞান বিভাগে পড়ালেখা করলে তার মানবিক এলো কিভাবে, এটি স্কুল কর্তৃপক্ষের মারাত্মক ভুল, মেনে নেয়ার মতো না। আরোও জানান, মনিরুজ্জামান বিজ্ঞান বিভাগে পড়ালেখা করে হঠাৎ মানবিক বিভাগে পরীক্ষা দেয়া বোধ হয় ভেঙে পড়ার মতো।’
বুড়াবুড়ী মির্জা গোলাম হাফিজ উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা জাহানারা বেগম বলেন, ‘অনেক প্রতিষ্ঠানে এই ধরণের ভুল হয়েছে, বিভাগ পরিবর্তনের বিষয়টি সমাধানের চেষ্ঠা চলছে। অতিশীঘ্রই এটার সমাধান হবে। প্রবেশপত্র সংশোধন বিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের কাছে থেকে ১০ হাজার টাকা নেয়ার কথা জিজ্ঞাসা করলে, টাকা নেয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।
এ বিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শওকত আলীর সাথে মুঠোফোনে কথা বলা হলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাকে কোন কিছু জানানো হয়নি।’
তেঁতুলিয়ার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদুল হক বলেন, ‘এ বিষয়ে অবগত করা হয়নি, আমাকে ওই প্রতিষ্ঠান প্রধানের মোবাইল নম্বর দিয়েন। কিছুক্ষণ পর তিনি জানান, বিষয়টির ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে দ্রুত সমাধান আশা করছি।’
এ ব্যাপারে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কামরুল হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘নানান ভুলের কারণে মানবিক দৃষ্টিতে শিক্ষার্থীদের ভুল সংশোধন চলমান আছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ নিয়ে আসলে ভুল সংশোধন করে দেওয়া হবে। তবে ভুল সংশোধনের জন্য এত টাকার প্রয়োজন নেই।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন