পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় বিদ্যালয় প্রধান, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার বুড়াবুড়ি মির্জা গোলাম হাফিজ উচ্চ বিদ্যালয়ে পাসের হার সর্বনিন্ম হওয়ায় বিদ্যালয় প্রধান, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ ওঠে পরে এক অভিভাবক হাতে ব্যানার ধরিয়ে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেন।

সোমবার (১৩ মে) দুপুরের দিকে উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের বুড়াবুড়ি বাজারের জাতীয় মহাসড়কের পাশ্বে দাঁড়িয়ে এই মানববন্ধন ও সমাবেশ করা হয়। ব্যানারে স্থানীয় সচেতন মানুষ ও অভিভাকবৃন্দের আয়োজনে হওয়ার কথা থাকলে সটকে যায় অনেকেই তবে নুর আলম নামে ওই অভিভাবককে সটকে যেতে দেখা য়ায়নি। তিনি তাঁর ধীরতার সহিত সামনে ব্যানার ধরিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির অবহেলার অভিযোগ এনে বক্তব্য তুলে ধরেন।

জানা যায়, দেশব্যাপী সেকেন্ডারি স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষা-২০২৪ এর ফলাফল প্রকাশ পেয়েছে ১২ মে গত রোববার। তারই ধারাবাহিকতায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার উপজেলায় অবস্থিত মাধ্যমিক, মাদ্রাসা ও কারিগরি বিদ্যালয়ের নামানুসারে ফলাফল প্রকাশ করেন।

ফলাফল প্রকাশের পর দেখা যায়, এই বিদ্যালয়টি সর্বনিন্ম পাসের হার অর্জন করেন। দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ওয়েবসাইটে যার পাসের হার শতকরা ২০ দশমিক ৬৯।

আরোও জানা যায়, ওই বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী সংখ্যা ছিলেন ২৯ জন, পাস করেন ৬জন। এর মধ্যে গত বছরের তিন পরীক্ষার্থী ছিলেন বলে জানা গেছে।

বীরমুক্তিযোদ্ধা সন্তান অভিভাবক বাবুল হোসেন ও অভিভাবক নুর আলম হোসেন বলেন, প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটি অভিভাবকদের নিয়ে কোন অভিভাবক সমাবেশ করেন নাই। তাঁরা শুধু নিয়োগ নিয়ে ব্যস্ত।

এই স্কুলের শিক্ষকরা অবহেলিত, শিক্ষকরাই ঠিকমত স্কুলে আসেনা বলে অভিযোগ তুলেছে।

এদিকে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আগে স্কুলটি ভালোই ছিল কয়েকবছর ধরে শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধ্বস নেমে এসেছে। শিক্ষক থাকতেও শিক্ষক নেই চালানো হতো প্রক্সি দিয়ে। তবে ইতোপূর্বের শিক্ষক নিয়োগের তথ্যেও রয়েছে জালজালিয়াতি বলে জানা গেছে।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল মতিন বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক নিজেকে খুব বড় মনে করেন, আমি যে ওই বিদ্যালয়ের একজন সভাপতি সেই মূল্যায়ন তিনি দিচ্ছেন না। শুধু তাই নয়, প্রধান শিক্ষক ঠিকমত দায়িত্ব পালন করছেন বলে আমার মনে হচ্ছেনা।

বিদ্যালয়ে ৫ লাখ টাকার বরাদ্দ আসলে সে বরাদ্দের কোনো কাজ তিনি আদৌ করেননি। আমি তার বিরুদ্ধে জেলা শিক্ষা অফিস ও এমপি মহোদয়কে জানিয়েছি যতটুকু ব্যবস্থা নেওয়ার উনারা ব্যবস্থা নিবেন আশা করছি। বিদ্যালয়ে যথেষ্ট শিক্ষক নেই তা নিয়োগের ব্যবস্থা নিতে গেলেই বাধা প্রদান করেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক।

এ বিষয়ে বুড়াবুড়ি মির্জা গোলাম হাফিজ উচ্চ বিদ্যায়য়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা জাহানারা বেগম বলেন, শিক্ষার্থীদের মোবাইল ব্যবহার ও ক্লাসে থাকতেই বিয়ে হওয়ার কারণে এই সমস্যাটি হয়েছে। আমরা অভিভাবক সমাবেশে অভিভাবকদের অনেকবার আসার জন্য চেষ্টা করলে অভিভাবকদের নিয়ে আসতে পারিনি। আপনি এবং আপনার অন্যান্য শিক্ষকগণ সময়মত বিদ্যালয়ে উপস্থিত হননা বলে অভিযোগ উঠেছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, যারা এ সমস্ত কথা বলেছে তাঁরা ভুল বলেছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শওকত আলী বলেন, তিনি মানববন্ধন ও সমাবেশের বিষয়ে অবগত নন। সর্বনিন্ম পাসের হার হওয়ায় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই মাত্র রেজাল্ট হল আমাদের অফিসিয়াল যতটুকু ব্যবস্থা নেওয়ার তা আমরা ব্যবস্থা নিব।