পথে পথে বাড়িফেরা মানুষের চাপ, যানজট আর জনজটে বিড়ম্বনা

সাজউদ্দীন খোকা। রাজধানী ঢাকার উত্তরার একটি সরকারি হাইস্কুলের অফিস সহায়ক হিসেবে কর্মরত। করোনার প্রেক্ষিতে বছরব্যাপী স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় গ্রামের বাড়িতেই ছিলেন, মাঝে মধ্যে স্কুল সংক্রান্ত জরুরী কাজের জন্য কয়েকদিন করে থাকতে হয় কর্মস্থলেও। সম্প্রতি কয়েকদিন স্কুলেই ছিলেন, ১৪ এপ্রিল থেকে ‘কঠোর লকডাউন’ আর সাধারণ ছুটি ঘোষনায় আবারো নাড়ির টানে সোমবার গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ফিরতে যাত্রা তার। রাজধানীর মধ্যে গণপরিবহন চললেও সাভার পেরুলেই বন্ধ সেগুলো। না, একেবারেই বন্ধ নয়, সুযোগ বুঝে কিছু কিছু যাত্রীবাহী বাহন চলছে। তবু অগত্যা ভিন্ন যানবাহনে ঝুলতে হলো তাকে। বালির ট্রাকে, ইটের ট্রাকে, কখনো খাদ্যপরিবহনে, আবার কখনো অন্য কোন যানবাহনে পথচলা তার। তবে দুঃখজনক ঢালওভাবে গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও যানজটের বিড়ম্বনা ছাড়লো না পথে পথে। ফেরিঘাটে যানজটের চেয়ে জনজটের ঠেলা সামলে কোনমতে নদী পার হলো। যানজট আর জনজটে নাকাল হয়ে অবশেষে মঙ্গলবার বাড়ির আঙিনায় পৌছুলো মিস্টার খোকা।

এমনই চিত্র দেশব্যাপী বিভিন্ন এলাকার পথে পথে।

দেশব্যাপী বুধবার থেকে কঠোর লকডাউনের খবরে বাড়িফেরা মানুষের চাপে মঙ্গলবার সকাল থেকেই সড়ক ও মহাসড়কে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ছাড়াও ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে তীব্র যানজট দেখা গেছে।

মঙ্গলবার সকাল থেকেই শনিরআখড়া থেকে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল পর্যন্ত ভয়াবহ যানজট শুরু হয়।

এ সময় অনেক যাত্রীকে পায়ে হেঁটে বাস টার্মিনালের দিকে আসতে দেখা যায়। দূরপাল্লার বাস চলাচল না করলেও অনেকে পরিবার নিয়ে প্রাইভেটকার ভাড়া করে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছেন। আর এ সুযোগে ৩-৪ গুণ বেশি ভাড়া আদায় করছেন গাড়িচালকরা।

নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকা থেকে সোনারগাঁওয়ের মেঘনা টোল প্লাজা পর্যন্ত মহাসড়কের উভয় পাশে ২০ কিলোমিটারেরও বেশি দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।

প্রচণ্ড গরমে যানজটে আটকেপড়া মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েন। এ সময় অনেককে প্রচণ্ড রোদের মধ্যে পায়ে হেঁটে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা করতে দেখা গেছে।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান জানান, হাইওয়ে থানা পুলিশ মহাসড়কে যানজট নিরসনে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু অতিরিক্ত গাড়ির চাপে একটু পরই আবার ভয়াবহ যানজট শুরু হয়।

ধারণা করা হচ্ছে, কঠোর লকডাউনের খবরে অনেকেই রাজধানী ছেড়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। এতে করে সোমবার ও মঙ্গলবার ঢাকা-সিলেট এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে প্রচণ্ড গাড়ির চাপ রয়েছে।