পদ্মাসেতু গুজবের পেছনে বিএনপি : ওবায়দুল কাদের

পদ্মাসেতু তৈরিতে এক লাখ মানুষের মাথা লাগবে বলে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে যে গুজব ছড়ানো হচ্ছে, তার পেছনে বিএনপির হাত দেখছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বলেছেন, বিএনপি দৃশ্যত দুর্বল হলেও তলেতলে ষড়যন্ত্র করছে। এই গুজব তারই অংশ।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কর্মী সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এই প্রসঙ্গটি উঠে।
গত কয়েক মাস ধরেই পদ্মাসেতু নিয়ে এই গুজব ছড়ানো হচ্ছে। ফেসবুকের পাশাপাশি ইউটিউবে নানা ভিডিও তৈরি করে ছড়ানো হচ্ছে। অবিশ্বাস্য হলেও এই কথা সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। বিভিন্ন এলাকায় আতঙ্কও ছড়িয়েছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গেছে যে সরকারকে রীতিমতো বিবৃতি দিয়ে বলতে হয়েছে এটা অসত্য। পাশাপাশি যারা গুজব ছড়াচ্ছে, তাদেরকে গ্রেপ্তারে মাঠে নেমেছে পুলিশও।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থায়নে হচ্ছে এটা তারা (বিএনপি) সহ্য করতে পারছে না। গায়ে জ্বালা ধরছে। তাই তারা বলে লক্ষ মানুষের মাথা ও রক্তের প্রয়োজন।’

‘আমাদের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ। দৃশ্যপট যতই দুর্বল হোক তলে তলে ষড়যন্ত্র বাড়ছে। সরকারকে বিপদে ফেলতে গুজবের ডালপালা বিস্তার করছে।’

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর পদ্মাসেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়ার পর থেকে নানা ধরনের ঘটনা ঘটেছে। দুর্নীতি চেষ্টার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন চুক্তি বাতিলের কারণে কয়েক বছর পিছিয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় সেতু প্রকল্পটি।

বিশ্বব্যাংক এই অভিযোগ তোলার পর থেকে বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনতে থাকে। তবে কানাডা আদালতে করা মামলায় অভিযোগটি ‘গালগপ্পো’ প্রমাণ হওয়ার পর বিএনপি আর সে কথা বেশি তোলেনি। যদিও দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া পদ্মাসেতু ‘জোড়াতালি দিয়ে বানানো হচ্ছে’ অভিযোগ করে দেশবাসীকে এই সেতুতে না উঠার আহ্বান জানিয়েছেন।

পদ্মাসেতু নিয়ে গুজব প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বিএনপির কড়া সমালোচনা করে বলেন, ‘আপনারা কি বিভ্রান্ত হয়েছেন যে মানুষের কল্লা লাগবে? এতো রক্ত দরকার? এসকল অপপ্রচার, কি নির্মম নিষ্ঠুর এদের রাজনীতি। আন্দোলনে ব্যর্থ, নির্বাচনে ব্যর্থ এখন শুরু করেছে অপপ্রচার। অপপ্রচার ছাড়া এদের কোন পুঁজি নেই। এই অপপ্রচারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’

‘এই সকল অপপ্রচারের বিরুদ্ধে ফেসবুকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটিভ হতে হবে। সর্বেমুখী সাইবার অ্যাটাক হচ্ছে, এরও পাল্টা জবাব দিতে হবে। অপশক্তির অপপ্রচারের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।’

‘গত নির্বাচনে সাইবার এ্যাটাক করতে না পারায় শন্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে। আজকের এই শান্তিপূর্ণ অবস্থা সব সময় এক থাকবে, এমন মনে করার কিছু নেই। নিরবতার মধ্যে হলি আর্টিজান ঘটবে না, এ কথা মনে করার কিছু নেই। সতর্ক থাকতে হবে। সাহস নিয়ে এগিয়ে যাবেন।’

বর্তমান সরকারের জনগণের প্রতি কোন দায় নেই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্যেরও জবাব দেন আওয়ামী লীগ নেতা। বলেন, ‘দেশের জনগণের প্রতি আওয়ামী লীগেরই দায়বদ্ধতা আছে। আওয়ামী লীগই এদেশের জনগণের স্বার্থে কাজ করে। জনস্বার্থকে মাথায়ে রেখে আওয়ামী লীগের ও শেখ হাসিনার সমস্ত কর্মকাণ্ড।’

‘যারা জনস্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়েছে, জনস্বার্থে কিছু করেনি, যারা নেতিবাচক রাজনীতি করে, তারা নেতিবাচক রাজনীতির কারণে ক্রমেই জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তাদের পক্ষেই (বিএনপি) এ ধরনের বক্তব্য শোভা পায়।’