পাহাড়ে সামাজিক উৎসব বৈসাবি পালন ক্ষুদ্র পরিসরে, ঘরোয়াভাবে
খাগড়াছড়ি রাংগামাটি বান্দরবান কক্্রবাজারসহ পার্বত্য জেলার পাহাড়ে এবার বৈসাবি পালন হবে ক্ষুদ্র পরিসরে সামাজিক উৎসবটি পারিবারিক ভাবে পালিত হবে। করোনা প্রভাবে উৎনব মুখর ছাড়া বৈসাবির আগমনী বার্তা লগ্নেই পাহাড় জুড়ে বয়ে চলে খুশির জোয়ার। পাহাড়ে ত্রিপুরাদের বৈসু, মারমাদের সাংগ্রাই ও চাকমা সম্প্রায়ের বিঝু নিয়েই ঐতিহ্যবাহী বৈসাবি উৎসব।
করেনাভাইরাস প্রভাবে এই দ্বিতীয় কোন আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া সীমিত আকারে সামাজিকতা ও ঘরোয়াভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসু-সাংগ্রাইং-বিজু(বৈসাবি), বিষু, ব্হিু, প্রহেলা বৈশাখ পালন করা হচ্ছে। সরকারি-বেসরকারী, সামাজিক সংগঠন দেশের মহামারি করোনাভাইরাস কারনে সপ্তাহ, মাসিকব্যাপী কর্মসূচী বাতিল করে নিজ নিজ এলাকা লকডাউন করে এলাকার সুষ্ঠভাবে কঠোর অবস্থানে রাখা হয়েছে। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ, জেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম(বিএএফ), মারমা উন্নয়ন সংসদ, মারমা ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ ত্রিপুরা কল্যান সংসদ, চাকমা একাডেমী, ক্লাব, যুব সংগঠন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন বৈসাবি কর্মসূচী থেকে বিরত রাখা হয়েছে। শুধুমাত্র বৌদ্ধ ও সনাতন(হিন্দু) ধর্মীয় সম্প্রদায়ে যার যার ধর্মীয় রীতি-নীতি অনুযায়ী দুরত্ব বজায় রেখে করোনাভাইরাস থেকে পরিত্রান পেতে মন্দিরে প্রার্থনা ও মোমবাতি প্রজ্জলন করবে। এর মধ্যে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সীমাবদ্ধতায় থেকে যাচ্ছে।
ত্রিপুরা, মারমা ও চাকমা ছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রামে তঞ্চঙ্গ্যা, বম, খিয়াং, লুসাই, পাংখোয়া, ম্রো, খুমি, আসাম, চাক ও রাখাইনসহ অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীগুলো নিজস্ব বৈশিষ্ট্য নিয়ে তাদের ভাষা-সংস্কৃতি ও অবস্থানকে বৈচিত্রময় করে করে তুলতে প্রতি বছর চৈত্রের শেষ দিন থেকে ‘বৈসাবি’ উৎসব পালন করে থাকে। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে গত বছর থেকে এ উৎসব-আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে পাহাড় আর সমতলের মানুষ।
বৈসাবী উৎসবকে সামনে রেখে খাগড়াছড়ি জেলার বৃহস্প্রতিবা বড় হাট-বাজারে কেনা-কাটা বেড়ে যেতো। বিপনী বিতানগুলোতে এখন পাহাড়িদের পাশাপাশি বাঙ্গালী তরুনীদেরও উপচে পড়া ভীর লেগে থাকতো। বৈসাবি উৎসবকে ঘিরে খাগড়াছড়ির হোটেল-মোটেলগুলো আগাম বুকিং হয়ে যেতো। কিন্তুু এ বছর পুরো ভিন্ন চিত্র।
প্রতি বছর প্রথমে ১২ই এপ্রিল নদীতে ফুল ভাসানো ও বসত ঘর সাজানো মধ্য দিয়ে মূল উৎসব শুরু হয় পাহাড়ের ঐতিহ্যবাহী বৈসাবি উৎসব। পুরাতন বছরকে বিদায় আর নতুন বছর বরণকে সামনে রেখে গ্রামে-গ্রামে চলে নানা আয়োজন। পাহাড়ি জনগোষ্ঠীগুলোর ঐতিহবাহী নানা খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও অতিথি আপ্যায়ন। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠী ও প্রতিষ্ঠান পর্যায়ক্রমে আনন্দ র্যালি, মারমাদের ঐতিহ্যবাহী ওয়াটার ফেস্টিবল বা পানি উৎসব, ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের গড়িয়া নৃত্য’র ও চাকমাদের খেইগ্রং উৎসব আয়োজন করে থাকে।
১৩ই এপ্রিল দ্বিতীয় দিন পালন হয় মূল বিঝু। এই দিনে ঘরে ঘরে রান্না হয় সাইত্রিশ প্রকার সবজি আর কাঁচা কাঁঠালের মিশ্রণে মজাদার পাঁচন। পাঁচন রান্না করে ধর্মীয় গুরুদের জন্য মন্দিরে পৌঁছে দিয়ে পরিবারের সকলের জন্য প্রার্থনা চায় সবাই। তাছাড়া এলাকার বয়ো:জৈষ্ঠ্যদের বাড়িতে ডেকে পাঁচন দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়।
১৪ই এপ্রিল তৃতীয় দিনটি হলো গজ্জ্যেপজ্জ্যে। এই দিনটি বেশি আনন্দের। কেউ কেউ মজা করে কেউবা মন্দিরে গিয়ে ধর্মগুরুদের কাছে ধর্মদেশনা শুনে। তাইতো পাহাড়ের সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী উৎসবটি নাম বৈসাবি।
এবারের বৈসাবি উদযাপনে ৮ই এপ্রিল থেকে ১২ই এপ্রিল পর্যন্ত নানান ঐতিহ্যবাহী খেলাধূলা আর মঞ্চায়িত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রস্তুুতি পর্ব দারুণভাবে সাজানো হয়েছিল। কিন্তু সারা দেশে কোভিড-১৯ এর কারণে ঘোষিত লকডাউনে অনুষ্ঠানসূচী পরিবর্তন করে ক্ষুদ্রাকার করা হয়েছে।
উদযাপন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব অনিল চন্দ্র চাকমা প্রেস বিজ্ঞপ্তিমূলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। বৈসাবি উদযাপন কমিটির প্রধান শান্তি জীবন চাকমা জানান, বাউরা পাড়া অনুপম-হিমাংশু ভ্যানুতে ব্যাপক কর্মসূচি নিয়ে জুম ঘর বা মোন ঘরসহ বিশালাকার মঞ্চ তৈরি করা সম্পন্ন করা হয়েছে। কিন্তু লকডাউনের কারণে অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করায় মঞ্চ আর মনের মতো জমে উঠবেনা। এই লকডাউনের খবরে পাহাড়ের প্রতিটি এলাকায় খুশির পরিবর্তে বইছে হতাশা। তারপরও বিশ্ব মহামারীর কারণে দেশে লকডাউন দেয়াতে স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্যই আমাদের এই উদ্দ্যেগ। উপজেলার পূজগাং দেবেন্দ্র পাড়ায় ওয়েল চাকমার নেতৃত্বে বানানো হয়েছে দৃষ্টিনন্দন জুমঘর। দেবেন্দ্র পাড়া এলাকার আবাল-বৃদ্ধ-বনিতারা জানায় মনে খুব দু:খ গতবছরের ন্যায় এবছরও তো মজা হবেনা।
পানছড়ি চৌধুরী পাড়ার সামাজিক সংগঠনের প্রধান ক্যপ্রæুচাই মারমা জানান, ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাই পালনের কার্যাদি প্রায় সম্পন্ন। সরকারী নির্দেশনাকে সম্মান জানিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সংক্ষিপ্ত করা হবে। তবে ধর্মীয় অনুষ্ঠানটা যথারীতি পালন করা হবে। অনুষ্ঠান ক্ষুদ্রপরিসরে হলেও সবাই করোনার মহামারী থেকে মুক্তি পাক এটাই সকলের প্রার্থনা বলে জানালেন।
খাগড়াছড়ি আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা জানান, সমিতির আওতায় জেলায় মোট ২৬টি হোটেল রয়েছে। করোনা ভাইরাসের কারণে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার পর হোটেলগুলোতে পর্যটকদের সব বুকিং বাতিল করা হয়েছে। অনেক হোটেল ইতোমধ্যে বন্ধ করে দিয়েছে।
বাংলাদেশ ত্রিপুুরা কল্যান সংসদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অনন্ত ত্রিপুরা জানান, করোনার এমন পরিস্থিতিতে উৎসব আয়োজনের কোন সুযোগ নেই। এবারও আমরা কোন আনুষ্ঠানিকতা রাখিনি। সকলকে ঘরে ঘরে ছোট পরিসরে দিনটি উদযাপনের জন্য বলছি। এখন পরিবার পরিজন নিয়ে সুস্থভাবে বেঁচে থাকাটা জরুরী।
মারমা উন্নয়ন সংসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মংপ্রæু চৌধুরী বলেন, এই মুহুর্তে উৎসব পালনের চেয়ে নিজেরা বেঁচে থাকাটা জরুরী। প্রশাসন থেকেও জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞা আছে। আগামীতে করোনার প্রকোপ কমে গেলে আমরা দ্বিগুণ আনন্দে উৎসব আয়োজন করবো।
যারা বৈসু-সাংগ্রাই-বিজু (বৈসাবি) , বিষু, বিহু ও পহেলা বৈশাখ শুভেচ্ছা জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম ভারত প্রত্যাগত শরনাথী বিষয়ক টাস্কফোর্স’র চেয়ারম্যান(প্রতিমন্ত্রী সমমর্যাদা) কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি, ঘরোয়াভাবে বৈসাবি ও পহেলা বৈশাখ পালনের আহ্বান জানিয়েছেন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মংসুইপ্রæু চৌধুরী। বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের পার্বত্য চট্টগ্রাম ’ক’ অজ্ঞলের খাগড়াছড়ির সভাপতি প্রফেসর মধুমংগল চাকমা, সহ-সভাপতি শিক্ষাবিদ প্রজ্ঞাবির চাকমা, সম্পাদক সম্মনয়ক চাইথোয়াই মারমা, নারীনেত্রী নমিতা চাকমা, মারমা উন্নয়ন সংসদের সভাপতি মংপ্রæ চৌধুরী, বাংলাদেশ ত্রিপুরা কল্যান সংসদের সম্পাদক অনন্ত ত্রিপুরা, চাকমা একাডেমী’র সভাপতি সন্তোষিত চাকমা বকুল, বাংলাদেশ মারমা ঐক্য পরিষদের উপদেষ্টা ¤্রাসাথোয়াই মারমা, সভাপতি কংচাইরী মাষ্টার প্রমূখ।
বৃহষ্পতিবার(৮ই এপ্রিল) খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ জনসংযোগ কর্মকর্তা চিংলামং চৌধুরীর মাধ্যমে প্রেরিত এক বার্তায় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ আহ্বান জানান। প্রেরিত বার্তায় তিনি বলেন, প্রতি বছর ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা ও আনন্দ-উচ্ছ্বাসের মধ্য দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসু-সাংগ্রাইং-বিজু(বৈসাবি) ও পহেলা বৈশাখ পালন করা হয়। কিন্তু এবারের চিত্র আলাদা। সারাবিশ্বে এখন করোনাভাইরাস মহামারী আকার ধারণ করেছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশেও এটা ভয়াবহ আকার নিচ্ছে। তাই দেশ ও জাতির স্বার্থে করোনা ভাইরাসজনিত রোগ(কোভিড-১৯) এর বিস্তার রোধকল্পে জনসমাগম পরিহার করার লক্ষে আসন্ন পাহাড়ের প্রাণের উৎসব বৈসাবি ও পহেলা বৈশাখের সকল ধরনের অনুষ্ঠান/কার্যক্রম বন্ধ রাখতে সরকার নির্দেশ দিয়েছে ।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদও এবারে বৈসাবি ও পহেলা বৈশাখ সংক্রান্ত তার সকল বর্ণাঢ্য আয়োজন জনস্বার্থে স্থগিত রেখেছে। এই অবস্থায়, প্রাণঘাতি কোভিড-১৯ এর বিস্তার রোধকল্পে জনসমাগম পরিহার করার লক্ষে বৈসাবি ও পহেলা বৈশাখের সকল ধরনের অনুষ্ঠান/কার্যক্রম স্থগিত রেখে সকলকে শুধুমাত্র নিজ পরিবারের সদস্য নিয়ে ঘরোয়াভাবে বৈসাবি ও পহেলা বৈশাখ পালনের আহ্বান জানিয়েছেন। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে জনসমাগম আরও বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। কোন উৎসব পালনে জনসমাগম হয় তেমন কিছু করা উচিত হবে না।
তিনি বলেন, যতদিন না আমরা সবাই এই পরিস্থিতি থেকে পুরোপুরি মুক্ত হচ্ছি, করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে দেশ ও জাতির স্বার্থে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র মুখ্য সচিব কায়কাওয়াজ স্বাক্ষরিত প্রেরিত প্রথমে ৩১দফা ও দ্বিতীয়(২৯মার্চ) ১৮দফা নির্দেশনা সম্পূর্ণভাবে অনুসরণ করি। সরকার ঘোষিত সকল নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি সম্পূর্ণভাবে মেনে চলি। আশা রাখি, সৃষ্টিকর্তার অপার কৃপায় ও সকলের মিলিত প্রচেষ্টায় এই পরিস্থিতি আমরা দ্রæত কাটিয়ে উঠব।
এদিকে পার্বত্য চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মহান সামাজিক উৎসব বৈসাবি(বৈসু, সাংগ্রাই, বিঝু) উপলক্ষে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ) সভাপতি প্রসিত বিকাশ খীসা জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল অধিবাসীসহ দেশবাসী, বিদেশে প্রবাসী পাহাড়ি ও কারাগারে আটক পার্টির নেতাকর্মী ও সমর্থকদের প্রতি শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এবং সকলের সুখ, সুস্বাস্থ্য, সমৃদ্ধি ও নিরাপদ জীবন কামনা করেছেন।
বৃহষ্পতিবার দেয়া বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, ‘এ বছর এমন সময়ে বৈসাবি উৎসবের আগমন ঘটেছে যখন বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে করোনাভাইরাস(কোভিড-১৯) মহামারী তার করাল থাবা বিস্তার করে ইতিমধ্যে লক্ষাধিক মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। এই ভাইরাসের কারণে দেশে রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান বন্ধ রাখতে হয়েছে এবং জনগণকে অবরুদ্ধ অবস্থায় দিনযাপন করতে হচ্ছে।’
‘পার্বত্য চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসের ভয় ও আতঙ্ক ছাড়াও জনগণকে সব সময় দমনপীড়ন ও গ্রেফতারের ভয়ে ত্রটস্থ থাকতে হয়’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘এ পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবে উৎসব ¤øান হতে বাধ্য।’
ইউপিডিএফ নেতা তা সত্বেও জাতীয় ঐতিহ্য ধরে রাখার স্বার্থে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা মেনে পারিবারিক গন্ডির মধ্যে সীমিত আকারে বৈসাবি উপলক্ষে খানাপিনা আয়োজনের আহ্বান জানান। তিনি বৈসাবি উৎসবে এমন কিছু না করতে অনুরোধ করেন, যাতে করোনা-পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়।
প্রসিত খীসা পার্বত্য চট্টগ্রামে করোনাভাইরাস মহামারী মোকাবিলার জন্য সেনা অপারেশন বন্ধ, সেটেলার কর্তৃক অবৈধ ভূমি দখলসহ সকল দমনমূলক কাযক্রম বন্ধ করে ও আটক সকল রাজবন্দীদের মুক্তি দিয়ে জনগণের সকল শক্তিকে সমাবেশ করার দাবি জানান।
পরিশেষে তিনি পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক ২৬শে মার্চ জারিকৃত সার্কুলারে বর্ণিত নির্দেশনা অনুসরণ করে করোনা মোকাবিলায় সব সময় জনগণের পাশে থাকার জন্য পার্টির সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন। ইউপিডিএফ’র প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগের নিরন চাকমা স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
উরেøখ্য মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে গত বছরের ন্যায় এবারও পাহাড়ে হচ্ছেনা বৈসাবি’র সামাজিক উৎসব। ইতিমধ্যে সাংস্কৃতিক, সামাজিক সংগঠনগুলো উৎসব না করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে ঘরে ঘরে পালন করা হবে দিনটি। গেল বছরও একই কারণে পাহাড়ে বৈসাবী উৎসবের আয়োজন ছিল না। বাংলা নববর্ষের পাশাপাশি পাহাড়ে ঐতিহ্যবাহী ‘বৈসাবি’ উৎসবকে কেন্দ্র করে পাহাড়ে পাহাড়ি-বাঙালির মিলন মেলায় পরিণত হয়।
১৯৮৫সাল থেকে খাগড়াছড়িসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত তিন সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠনের সম্মিলিত উদ্যোগে ‘বৈসাবি’ নামে এ উসব পালন করে আসছে। যা সময়ের ব্যবধানে নিজ নিজ সম্প্রদায়ের লোকদের কাছে ‘বৈসাবি’ শব্দটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ত্রিপুরা, মারমা ও চাকমা সম্প্রদায় তাদের নিজস্ব নামে ‘ত্রিপুরা ভাষায় বৈসু, মারমা ভাষায় সাংগ্রাই এবং চাকমা ভাষায় বিজু’ নামে এ উৎসব পালন হয়ে থাকে। পাহাড়ে প্রধান এ তিন সম্প্রদায়ের নিজস্ব ভাষার নামের প্রথম অক্ষর নিয়ে ‘বৈসাবি’ নামকরণ করা হয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন