পিরোজপুর-৩ আসনের কলার ছড়ি প্রতীকের সমর্থককে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ

পিরোজপুর -৩ (মঠবাড়িয়া) আসনে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ডাঃ রুস্তুম আলী ফরাজীর সমর্থকদের হামলায় স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম শাহনেওয়াজের কলার ছড়ি প্রতীকের ১ সমর্থককে পরিকল্পিতভাবে কুঁপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।

বুধবার (৩ জানুয়ারি) বিকাল ৪ টার দিকে মিরুখালী ইউনিয়নের বাদুরা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এর আগে ওই একই ইউনিয়নের মনির আকন নামে কলার ছড়ি প্রতীকের এক সমর্থককে পিটিয়ে হাত ভেঙ্গে দেয় ঈগল সমর্থকরা। আহত মনির বর্তমানে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

হত্যাকান্ডের শিকার জাহাঙ্গীর পঞ্চায়েত (৫০) বাদুরা গ্রামের তোতাম্বর পঞ্চায়েতের ছেলে। তিনি একসময় সৌদি প্রবাসী ছিলেন। দেশে ফিরে আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হন। হত্যাকান্ডের পর তার স্ত্রী, ৩ ছেলে ও ১ মেয়েসহ পরিবারে চলছে শোকের মাতম।

মিরুখালী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুস সোবহান শরীফের ছেলে শাহিন শরীফ জানান,বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আবু হানিফ ও তার ভাই মোস্তফার নেতৃত্বে পরিকল্পিতভাবে জাহাঙ্গীর পঞ্চায়েতের উপর হামলা চালানো হয়। ওইদিন সকালে তারা এলাকার কিছু চিহ্নিত অপরাধী ও কুখ্যাত ডাকাতদের সাথে নিয়ে প্রথমে নাগ্রাভাঙ্গা এলাকায় তান্ডব চালায়। কলার ছড়ি প্রতীকের সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দেয়। কিছু নীরিহ মানুষদের টাকা দিয়ে ঈগল প্রতীকের পক্ষে আনার চেষ্টা করে। এতে কলার ছড়ি প্রতীকের সমর্থকরা বাধাঁ দিলে তাদের উপর হামলা চালিয়ে মনির নামে একজনের হাত ভেঙ্গে দেয়। এরপর ঈগল প্রতীকের লোকজন বাদুরা গ্রামের কুখ্যাত ডাকাত বশির ফরাজীর বাড়িতে আসে এবং সেখানে তারা দুপুরের খাবার খায়। ওই বাড়িতে বসেই হানিফ – মোস্তফার নেতৃত্বে জাহাঙ্গীর পঞ্চায়েতকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী জাহাঙ্গীর পঞ্চায়েত তার নিজ বাড়ী থেকে বাদুরা বাজারে যাওয়ার পথে তার ওপর এ হামলা চালানো হয়। হানিফ চেয়ারম্যানের ভাই মোস্তফা পুুলিশে চাকরি করতো। অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে চাকরিচ্যুত হন তিনি।
জানা গেছে,হামলার শিকার জাহাঙ্গীর পঞায়েতকে প্রথমে মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে বরিশাল শেবাচিমে রেফার করা হয়। সেখানে নিউরো সার্জারি করার পর অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়।

বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) সকাল সোয়া ৮ টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৌছালে কর্তব্যরত চিকিৎসক জাহাঙ্গীর পঞ্চায়েতকে মৃত ঘোষনা করেন। এ ঘটনার পর পিরোজপুর জেলার রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ জাহেদুর রহমান, পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম পিপিএম, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুল কাইয়ূম,মঠবাড়িয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ সাখাওয়াত হোসেন, মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাঃ ফেরদৌস ইসলাম জানান, বুধবার সাড়ে ৫ টায় জাহাঙ্গীর পঞায়েত নামে ওই ব্যাক্তিকে মঠবাড়িয়া হাসপাতালে আনা হয়। তার মাথার তালুতে গুরুতর কোপের জখম ছিল।

এসময় তিনি বার বার বমি করতেছিলেন। এছাড়াও তার মাথায় একাধিক ফুলা জখম ছিল। তার অবস্থার অবনতি দেখে বরিশালে রেফার করা হয় মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল কাইয়ূম জানান, এঘটনায় মামলা হয়েছে। তদন্ত অব্যহত আছে।