পুলিশের পোশাক-জুতা ক্রয়ে বছরে খরচ ৮০ কোটি!
পুলিশের পোশাক, জুতা ও হেলমেটসহ বেশ কিছু নিরাপত্তা সামগ্রী ক্রয়ে এক বছরে ৮০ কোটি টাকা খরচ করার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ সদর দফতরের লজিস্টিক শাখা সূত্র জানায়, অধিক গুনগতমান বজায় রাখতে নতুনভাবে এসব পন্য ক্রয় করায় বেশি টাকা খরচ হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে পুলিশ সদর দফতরের শীর্ষ কর্মকর্তারা বলছেন, আগে পুলিশের সরবরাহ করা পোশাক ব্যবহারের ২/৩ মাসের মধ্যে রং জ্বলে যেতো। এ কারণে বেশি টাকা দিয়ে মানসম্মত পোশাকের কাপড় ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই ঘটনা ঘটেছে অন্যসব সামগ্রী কেনাকাটার ক্ষেত্রে।
পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক (লজিস্টিক) রেজাউল করিম বলেন, প্রতি বছর পুলিশের এসব সামগ্রী ক্রয়ের জন্য দরপত্র দেয়া হয়। দরপত্রে অংশগ্রহণকারী ঠিকাদারদের মধ্যে যারা ক্রয় আদেশ পান না, তারাই এসব অভিযোগ পুলিশ সদর দফতরে জমা দেন।
আগে পুলিশের পোশাক তৈরির জন্য কাপড় কেনা হতো, সেগুলোর অল্প দিনের মধ্যে রঙ নষ্ট হয়ে যেতো। এখন মানসম্মত কাপড় কেনায় একটু দাম বেশি পড়েছে। তবে এখন পুলিশের আইজি যেমানের কাপড়ের পোশাক পড়েন, কনস্টেবলদের মধ্যেও ঐ মানের কাপড়ের পোশাক সরবরাহ করা হচ্ছে। আগে যেসব জুতা সরবরাহ করা হতো তা অত্যন্ত ভারি ছিল।
এখন আমেরিকার সৈনিকরা যেসব জুতা ব্যবহার করে- সেই মানের জুতা দেয়া হচ্ছে। একইভাবে অন্যান্য সামগ্রীর মান উন্নত করা হয়েছে। যেসব ঠিকাদার অনুন্নত সামগ্রী সরবরাহের জন্য দরপত্র দিয়েছিলেন, তাদেরকে ক্রয় আদেশ দেয়া হয়নি।
পুলিশ সদর দফতরের লজিস্টিক শাখার একজন কর্মকর্তা জানান, ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে পুলিশের প্যান্ট তৈরির জন্য ডার্ক ব্লু টিসি ফেবরিক কাপড় কেনা হয় প্রতি মিটার ১৯৮ টাকা দরে। পরবর্তী অর্থবছরে (২০১৫-১৬) এই কাপড় কেনা হয়েছে ৩৫৯ টাকা দরে।
আগে কমব্যাট টিসি ফেবরিক কাপড় কেনা হয় ২১৪ টাকা দরে। পরবর্তী অর্থ বছরে কেনা হয়েছে ৩৯৮ টাকা দরে। আগে লাইট অলিভ টিসি ফেবরিক কেনা হয় ১৯১ টাকা দরে। পরের অর্থ বছরে কেনা হয়েছে ৩৪২ টাকা দরে।
ডিপ গ্রে টিসি ফেবরিক (বিশেষ পুলিশের জন্য) কেনা হয় ১৮৭ টাকা দরে। পরবর্তী বছর কেনা হয়েছে ৩৪২ টাকা দরে।
পুলিশ সদর দফতরের লজিস্টিক শাখার অপর এক কর্মকর্তা জানান, আগে চামড়ার তৈরি জুতা পুলিশ ব্যবহার করলেও সেগুলো ছিল অত্যন্ত ভারি। বৃষ্টির পানিতে ভিজলে তা ব্যবহারের অনুপযোগি হয়ে পড়ে।
আমেরিকার সৈনিকরা মানসম্মত জুতা ব্যবহার করেন। তাদের ব্যবহৃত জুতার আদলে জুতা এখন ২৩৪০ টাকা দরে কেনা হয়েছে। পুলিশের ব্যায়ামের জন্য ১৩৩৬ টাকা দরে কেনা জুতা সরবরাহ করা হচ্ছে।
অপরদিকে, পুলিশের লজিস্টিক শাখা থেকে উন্নত প্রযুক্তির তৈরি হেলমেট, ভিআইপি হেলমেট, হ্যান্ডক্যাপ, গ্যাস মাস্ক, রিওসেন্টসহ একশরও বেশি আইটেম কেনা হয়েছে। এসব সামগ্রী আগের বছরের তুলনায় মানসম্মত এবং আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন কেনা হয়েছে বলে পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা দাবি করেছেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন