সময় নিউজ টিভি’র প্রতিবেদন

পেঁয়াজের পথেই ভ্যাকসিন!

অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার ফর্মুলায় ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি করোনার ভ্যাকসিন রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ভারত সরকার। প্রতিবেশী দেশে অনুমোদন পাওয়ার পর এই ভ্যাকসিন নিয়ে আশার আলো দেখছিল বাংলাদেশ।

এদিকে অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা ভ্যাকসিন ভারত রফতানি না করার বিষয়ে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানে না পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

সংবাদ মাধ্যমকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেন, অক্সফোর্ডের টিকা রফতানি বন্ধের বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলেছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সরকারের কাছ থেকে জেনে বিষয়টি বিস্তারিত বাংলাদেশকে জানানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এর আগে সেরাম ইনস্টিটিউটের সিইও আদর পুনাওয়ালার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এপি জানায়, আপাতত আগামী কয়েক মাসের জন্য ভ্যাকসিন রফতানির অনুমতি দেবে না ভারত সরকার। ভারতীয়রা যাতে যথাযথভাবে ভ্যাকসিন পায় সেটি নিশ্চিতেই এমন সিদ্ধান্ত বলে জানান সেরাম ইনস্টিটিউটের এ প্রধান কর্মকর্তা। প্রতিবেশী দেশের এমন সিদ্ধান্তে দ্রুত বাংলাদেশের ভ্যাকসিন পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

এর আগে ভারতে তৈরি অক্সফোর্ডের টিকা বাংলাদেশকে দিতেও রাজি হয় সেরাম ইনস্টিটিউট। যার কারণে টিকা পাওয়ার খুব কাছাকাছি ছিল বাংলাদেশ। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক আশাও প্রকাশ করেছিলেন, জানুয়ারির মধ্যে টিকা পাওয়া যাবে।

২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে কোভ্যাক্সের ২০ কোটি থেকে ৩০ কোটি ডোজ টিকা বাংলাদেশকে দেওয়ার পরিকল্পনাও করেছিল সেরাম। অক্সফোর্ডের তৈরি কোভিডশিল্ড টিকার ৩ কোটি ডোজ পাওয়ার জন্য ৫ নভেম্বর সেরাম ইনস্টিটিউট এবং বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশ। বেক্সিমকোর মাধ্যমে প্রথম ধাপের ছয় মাস, প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল সেরাম।

এদিকে করোনা ভ্যাকসিনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার বিষয়টি সংকট ও মূল্যবৃদ্ধির অজুহাত দেখিয়ে পেঁয়াজ রফতানিতে ভারত যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল তেমনই কূটকৌশল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। গত বছর ১৪ সেপ্টেম্বর বিনা নোটিশে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয় ভারত। এরপরেই বাংলাদেশের বাজারে পেঁয়াজের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি হয়। আবার যখন দেশের বাজারে নতুন পেঁয়াজ উঠতে শুরু করেছে ঠিক তখনই পেঁয়াজ রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে ভারত।

ভ্যাকসিন পেতে দিল্লির সঙ্গে যোগাযোগ করেছে ঢাকা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ভারতের কাছ থেকে করোনার ভ্যাকসিন পেতে দিল্লির সঙ্গে যোগাযোগ করেছে ঢাকা। শিগগিরই এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।
সোমবার (৪ জানুয়ারি) সকালে তিনি এ কথা জানান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা ভ্যাকসিন ভারত রফতানি না করার বিষয়ে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানে না পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানতে পারে।

তিনি আরও বলেন, সকালে আমি সাংবাদিকদের ফোনে বিষয়টি জানতে পারি। কিছুক্ষণ পর মন্ত্রণালয়ে জিজ্ঞেস করব, তারা কিছু জানে কি না।

অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা রফতানিতে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউটের ওপর নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত নেয় ভারত। কয়েক মাস এ নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত থাকবে বলেও জানানো হয়।

ভারতের এ নিষেধাজ্ঞার কারণে দরিদ্র দেশগুলোর সাধারণ মানুষের কাছে টিকা পৌঁছাতে সম্ভবত কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হবে।

তথ্যসূত্র: সময় নিউজ ডট টিভি