প্রথম দিনেই তিনতলা যানজটের কবলে ফ্লাইওভার
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2017/10/23e32.jpg)
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2025/02/475351977_1256003665483861_2959209934144112011_n.jpg)
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হলো মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার। আটটি এলাকার মধ্যে সংযোগ স্থাপনের জন্য নির্মিত ফ্লাইওভারটি এই এলাকার তীব্র যানজট কমাতে সহায়ক হবে বলে প্রত্যাশা ছিল সবার। কিন্তু উদ্বোধনের কিছু সময় পর থেকেই যানজটের কবলে পড়ে খোদ ফ্লাইওভারটিই। এর বিভিন্ন লুপের শুরুর দিকে যানবাহনের চাপ খানিকটা কম থাকলেও লুপগুলো থেকে নামার পথের চিত্র সম্পূর্ণ বিপরীত। ফ্লাইওভারের এসব অংশের এক থেকে দেড় কিলোমিটার তো বটেই, যানজট ছড়িয়ে পড়ে ফ্লাইওভারের পরের সংযোগ সড়কেও। তিন তলাবিশিষ্ট এই ফ্লাইওভারের উদ্বোধনের দিনেই তাই দেখা গেছে তিন তলা যানজট।
বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় পুরো ফ্লাইওভারটি। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে যানবাহনের চাপ। বিকাল ৩টার পর থেকেই তা পরিণত হয় তীব্র যানজটে। বিশেষ করে ফ্লাইওভার থেকে নামার অংশে এমন চিত্র বেশি।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সরেজমিনে ফ্লাইওভারে গিয়ে দেখা যায়, এর ইস্কাটন অংশ থেকে শুরু হয়ে মৌচাক মোড়ের সিগন্যাল পর্যন্ত যানজট ছড়িয়ে পড়েছে। এ পথটি দিয়েই মাইক্রোবাস চালিয়ে যাচ্ছেন শারাফত হোসেন। তিনি বলেন, ‘কী জ্যাম, দেখছেন? পৌনে এক ঘণ্টা হয়েছে। মৌচাক অংশ থেকে ইস্কাটনে নামতে পারিনি। সামনে কখন যে সিগন্যাল ছাড়বে, বলা যাচ্ছে না।’
যানজটের কবলে সদ্য উদ্বোধন করা মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারফ্লাইওভারের রামপুরা থেকে শান্তিনগর ও রাজারবাগ অংশের রাজারবাগ থেকে মালিবাগ হয়ে মৌচাক ট্রাফিক সিগন্যাল পর্যন্তও দেখা গেছে একই চিত্র।
শাহজাহানপুরের বাসিন্দা আরমার হোসেন বলেন, ‘সাত রাস্তা থেকে উঠে মগবাজার হয়ে একটানে মগবাজার হয়ে ওয়্যারলেসে চলে আসি। সেখান থেকে ফ্লাইওভারের দ্বিতীয় তলার মৌচাক অংশে আসতে না আসতেই যানজটের শুরু। এরপর রাজারবাগ পর্যন্ত আসতে প্রায় আধাঘণ্টা লেগেছে।’
মালিবাগ ট্রাফিক সিগন্যালে দাঁড়িয়ে থাকা তমা গ্রুপের একজন কর্মী বলেন, ‘ফ্লাইওভারের একেকটা তলায় ওঠার পর কিছু দূর যেতে না যেতেই যানজট শুরু হয়। দুপুরের দিকে গাড়ির চাপ কিছুটা কম ছিল। কিন্তু বিকালের পর থেকেই চাপ বেড়েছে।’ নিজের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেন, ‘ফ্লাইওভার থেকে নামার পর ট্রাফিক সিগন্যালে আটকে যায় গাড়ি। এ কারণেই ফ্লাইওভারের নামার অংশে দীর্ঘ যানজট লেগেই থাকে।’
ফ্লাইওভার থেকে নামার অংশেই যানজট বেশিফ্লাইওভারের দ্বিতীয় তলার মৌচাক ও মালিবাগ অংশে ট্রাফিক সিগন্যাল পয়েন্টে গিয়ে দেখা যায়, স্থির দাঁড়িয়ে আছে কয়েকশ গাড়ি। বাংলামোটরের ট্রাফিক সিগন্যালের কারণে ইস্কাটন থেকে মৌচাক পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে এই যানজট।
শুধু ফ্লাইওভারে নয়, যানজট দেখা গেল নিচের সড়কেও। প্রতিটি সড়কেই গণপরিবহন ও রিকশাসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন সিগন্যাল ছাড়ার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে রয়েছে।
সন্ধ্যার দিকে যানজটের এমন তীব্রতা দেখা গেলেও দুপুরের দিকে ছিল ভিন্ন চিত্র। ওই সময় চোখের পলকেই ফ্লাইওভার ব্যবহার করা যানবাহন ছুটেছে গন্তব্যে। ওই সময় ফ্লাইওভার থেকে নামার পর সিগন্যালগুলোতে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে যানবাহনকে। দুপুর দেড়টার দিকে নিউ ইস্কাটন থেকে বাংলামোটর পর্যন্ত সড়কে একেকটা সিগন্যাল ছাড়তে গড়ে আট থেকে ১০ মিনিট পর্যন্ত সময় লেগেছে।
ফ্লাইওভারের নিচের সড়কেও ছিল তীব্র যানজটঅন্যদিকে, সাতরাস্তা-মাগবাজার-হলি ফ্যামিলি অংশে আগের চিত্রই দেখা গেছে। এ অংশটি দিয়ে স্বাভাবিকভাবে ফ্লাইওভারে ওঠার পর মগবাজার থেকে হলি ফ্যামিলি হসপাতাল পর্যন্ত যানজট লেগে ছিল। একই চিত্র দেখা যায় হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল থেকে সাতরাস্তা পর্যন্ত অংশেও। আবার শান্তিনগর থেকে মালিবাগ-মৌচাক হয়ে হাজী পাড়ার শহীদী মসজিদে যাওয়ার সময় মৌচাক সিগন্যালে কিছু সময়ের জন্য অপেক্ষার পর দ্রুত চলে যেতে পেরেছে যানবাহনগুলো।
ইস্কাটনের বাসিন্দা নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘অনেকদিন দুর্ভোগ সহ্য করার পর মনে করেছিলাম ফ্লাইওভার চালু হওয়ার পর যানজট থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। কিন্তু উদ্বোধনের পর থেকে যে চিত্র দেখছি, তাতে মনে হচ্ছে দুর্ভোগ আমাদের ছাড়বে না। চিরচেনা সেই যানজট আমাদের ভোগ করতেই হবে।’ ফ্লাইওভারে যানজটের বিষয়ে জানার জন্য প্রকল্প পরিচালক ও এলজিইডির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুশান্ত কুমার পালকে বারবার ফোন করেও তার নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।-প্রতিবেদন বাংলা ট্রিবিউনের সৌজন্যে প্রকাশিত।
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2024/12/469719549_122234398946008134_2936380767280646127_n.jpg)
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন