ফেসবুকে ‘আল বিদা’ লিখে ঢাবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন ইমাম হোসাইন নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আই.ই.আর) এক শিক্ষার্থী। সোমবার সকালে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।
ইমাম হোসাইন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী। থাকতেন কবি জসীমউদ্দীন হলে। তার বাড়ি বরিশালের উজিরপুর উপজেলার গাজীপার গ্রামে। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে ইমাম ছিলেন সবার ছোট।
পুলিশ জানায়, আত্মহত্যা করার আগেরদিন ইমাম ফেসবুকে ‘আল বিদা’ (বিদায়) লিখে একটি পোস্ট করেন।
উজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল আহসান ইমামের আত্মহত্যার কথা নিশ্চিত করে জানান, ওই শিক্ষার্থী বেশ কিছুদিন ধরে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। তার মানসিক বিপর্যয় প্রেম সংক্রান্ত কারণে বলে জানান তিনি।
নিহত ইমামের বড়ভাই আরিফুল ইসলাম বলেন, তার ভাইয়ের আচরণ অস্বাভাবিক ছিল। লকডাউনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্কে অবনতির কারণে মানষিকভাবে ভেঙে পড়েছিল সে। তিনি জানান, সোমবার মাগরিবের নামাজের পর ইমামের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
ইমাম হোসেনের একাধিক বন্ধুর কাছ থেকে জানা যায়, তিনি দীর্ঘদিন ধরে হতাশায় ভুগছিলেন। কি কারণে তিনি হতাশায় ছিলেন তা জানতে চাইলে তারা জানান, প্রেমঘটিত সমস্যা হতে পারে। মেয়েটি আগের মতো তার সঙ্গে সম্পর্ক রাখতো না। এই কারণে তার মাঝে হতাশা চলে এসেছিল। প্রতিদিন তার কাছে কিছু স্থানীয় শিক্ষার্থী প্রাইভেট পড়তে আসতো। সোমবার সকালে তারা এলে ইমাম হোসেন বলেন, ‘তোমাদের তো অনেক দিন ধরে কোন ছুটি দিচ্ছি না। একটু রেস্ট নেওয়া দরকার। তোমরা আগামী দুই দিন আসিও না।’ এ কথা বলার পর তারা চলে যায় এবং ইমাম বাড়ির ভিতরে চলে যান। এরপর তার মরদেহ উদ্ধার হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. আব্দুল মালেক বলেন, ‘বিষয়টি একজনের কাছে শুনেছি। তবে কোন আত্মীয়, শুভাকাঙ্খী আমাকে ঘটনার ব্যাপারে কোন তথ্য দেয়নি। তাই ঘটনা সম্পর্কে স্পষ্ট কিছু জানি না। খোঁজ-খবর নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
কবি জসিম উদ্দীন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আব্দুর রশিদ বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। সে তার গ্রামের বাড়িতে আত্মহত্যা করেছে।’
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়েছি। বিশ্বস্ত সূত্র থেকে তথ্য পাওয়ার চেষ্টা করছি। বিষয়টির সত্যতা যাচাইয়ের প্রক্রিয়ায় আছি। সত্যি যদি হয়ে থাকে, তাহলে এটি মর্মান্তিক এবং বেদনাদায়ক। আমাদের মেধাবী ছাত্রদের এখন বেঁচে থাকার সময়। এটি সত্যিই অনেক দুঃখজনক।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন