‘ফেসবুক ব্যবহারে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া জাহান্নামে যাচ্ছে’

শিক্ষার্থীদের মধ্যে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ায় শিক্ষা ব্যবস্থা ‘ধ্বংসের মুখে’ পৌঁছেছে বলে মনে করছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রী বিশেষ দূত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এ জন্য সাবেক এই রাষ্ট্রপতি আঙ্গুল তুললেন ফেসবুক-গুগলের দিকে। একই সঙ্গে এসব বন্ধ করার কথাও বললেন।

ফেসবুক-গুগল ব্যবহারে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া জাহান্নামে যাচ্ছে এমন দাবি করে সাবেক এই জেনারেল আরো বললেন, ‘আমাদের ছেলেরা আজ ভুল পথে। লেখাপড়া আজ জাহান্নামে গেছে। ফেসবুক, মোবাইল ফোন, আর পর্নো ছবি, ধর্ষণের ছবি ক্লাসের মধ্যে দেখে।’

বৃহস্পতিবার (২৫ মে) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) ‘শরীয়াহ আন্দোলন বাংলাদেশ’ নামে একটি সংগঠনের আয়োজনে ‘নৈতিকতা বিবর্জিত সমাজ ব্যবস্থাই সকল সন্ত্রাসের জন্মদাতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন এরশাদ।

শিক্ষকদের দিকে আঙ্গুল তুলে এরশাদ বললেন, ‘আর শিক্ষকরা ছাত্রদের দিয়ে নকল করায়। বলা হয়েছে, সবাইকে পাস করতে হবে। গরু হোক, গাধা হোক, পাস করতে হবে। জিপিএ-৫ পেতে হবে। তাই শিক্ষকরা সাহায্য করেন ছাত্রদের অনৈতিক কাজে, অনৈতিক কাজ নকল করতে।’

সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ আরো বলেন, ‘একটা বাচ্চার পিঠে বোঝা। কিন্তু পড়ার বই কিছু নেই। পিছনে একটা মোবাইল ঠিকই আছে। কী পড়বে সে? ফেসবুক দেখে, পর্ন ছবি দেখে, ক্লাসে শিক্ষক ক্লাস নিচ্ছেন আর ছাত্র পিছনে বসে পর্নো ছবি দেখছে।

মোবাইল–ইন্টারনেটের বহুল ব্যবহারে স্পষ্টত ক্ষুব্ধ ৮৭ বছরের সাবেক এই জেনারেল বলেন, ‘আমার মনে হয়,এই ফেসবুক বন্ধ করা প্রয়োজন। ইন্টারনেট, গুগল বন্ধ করা প্রয়োজন। চীনে এসব নেই। তারা সফল হচ্ছে না? এগিয়ে যাচ্ছে না? যেভাবে আমাদের সমাজে শিশুরা আছে, ভুলপথে ধাবিত হচ্ছে, এটা দুঃখজনক।’

এখনকার শিক্ষকদের নিয়েও অসন্তোষ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে এরশাদ বলেন, ‘আমাদের শিক্ষকরা বাবার মতো ছিল। উনাদের বাবার মতো সম্মান দিতাম। রাস্তায় দেখা হলে সালাম করতাম। সেই শিক্ষকরা আজ নেই। শিক্ষা ব্যবস্থা আজ ভুলপথে। সমাজের এই অধঃপতন।’

বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় শিশুরা বাংলা, ইংরেজি ও আরবি-কিছুই শিখছে- এমন মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ এই দূত বলেন, ‘ওলামারাই ভুলপথ থেকে সমাজকে ‘বাঁচাতে পারে’। আয়োজক সংগঠনের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে এরশাদ বলেন, ‘আপনারা রাস্তায় নামেন, আমি আপনাদের সাথে থাকব। সন্ত্রাস, নারী ধর্ষণ, খুন, গুম বন্ধ করতে হবে। আমরাই পারব, ইনশাল্লাহ।’

গেল ৭ মে জাতীয় পার্টির নেতৃত্বে ৩৪টি ইসলামপন্থি সংগঠনকে নিয়ে সম্মিলিত জাতীয় জোট-ইউএনএ’ এর আত্মপ্রকাশ ঘটে। ‘ইসলামি মূল্যেবোধের’ এ জোটের অন্যতম শরিক দল ‘শরীয়াহ আন্দোলন বাংলাদেশ’।

আয়োজক সংগঠনের আমির মুফতি রফিকুন্নবী হক্কানীর সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- জোটের চেয়ারম্যান আবু নাছের ওয়াহেদ ফারুক, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ফয়সাল চিশতী, আব্দুল লতিফ চৌধুরী প্রমুখ।