বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি নূর চৌধুরীকে ফেরত চাইলেন প্রধানমন্ত্রী
বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নূর চৌধুরীকে ফেরত দিতে কানাডা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার বেনোয়া পিয়েরে লাঘামে রোববার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাতে এলে এ আহ্বান জানানো হয়। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম পরে সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের দেশে ফেরত প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কানাডার হাইকমিশনারকে বলেন, ‘নূর চৌধুরী নামে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এক খুনি কানাডায় অবস্থান করছে। তাকে আপনারা ফেরত দিন।’
জবাবে বেনোয়া পিয়েরে লাঘামে প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আপনার অনুরোধ আমি পৌঁছে দেব।’
সাক্ষাৎকালে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রসঙ্গও আসে। হাইকমিশনার প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, আমরা সবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চাই। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার পর ২১ বছর এ দেশে কোনো গণতন্ত্র ছিল না। আমরাই মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেছি।
প্রধানমন্ত্রী স্বচ্ছ ব্যালটবাক্স চালুসহ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন উদ্যোগ ও অবদানের কথা এ সময় তুলে ধরেন।
গত সংসদ নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ না করা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা একটি কোয়ালিশন সরকার গঠনের কথা বলেছিলাম। বিএনপিকে বলেছিলাম, যে মন্ত্রণালয় তোমরা চাও দেব, নির্বাচনে তোমরা অংশ নাও।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, জাতির পিতা দেশকে স্বাধীন করেছিলেন। এই স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধু ২৪ বছর সংগ্রাম করেছিলেন। স্বাধীনতার পরে যুদ্ধবিধ্বস্ত জাতি গঠনে বঙ্গবন্ধু আত্মনিয়োগ করেন। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য তিনি অনেকগুলো পদক্ষেপও নেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা। উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়া। আমরা তার অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা ১৬ কোটি মানুষের উন্নয়নে কাজ করছি। মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ করাই আমাদের মূল লক্ষ্য।
বৈঠকে সন্ত্রাসবাদের বিষয় উঠলে প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাস ও জঙ্গি নির্মূলে সচেতনতা সৃষ্টির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বেনোয়া পিয়েরে লাঘামে বাংলাদেশে দায়িত্ব পালনকালে প্রধানমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি নিজ আগ্রহে বাংলা ভাষা শেখার বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, মায়ের ভাষা সংরক্ষণ ও রক্ষা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি রক্তের বিনিময়ে ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং ২১ ফেব্রুয়ারিকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের বিষয়টি উল্লেখ করেন।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রশংসা করেন বিদায়ী এ রাষ্ট্রদূত। প্রথমদিকে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানকারী দেশগুলোর মধ্যে কানাডা অন্যতম।
বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক ক্রমাগত আরও জোরদার হচ্ছে। বিশেষ করে অর্থনৈতিক সহযোগিতা। স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সেক্টরে বাংলাদেশের অগ্রগতিরও প্রশংসা করেন তিনি। হাইকমিশনার বলেন, উন্নয়নের কাজে বাংলাদেশ সফল।
কানাডা উন্নয়ন সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে এবং আরও জোরদার করবে বলেও জানান বেনোয়া পিয়েরে লাঘামে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন