বস্তিতে ওয়াসার পানি বদলেছে জীবনমান

সিন্ডিকেট করে বস্তিতে পানি বিক্রি, পানির জন্য দীর্ঘ লাইন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে এ নিয়ে ব্যাপক মারামারি ছিল প্রতিদিনের চিত্র। আর সুপেয় পানির অভাবে পানিবাহিত রোগ তো ছিলই। অথচ বস্তির অবস্থান সরকারি জমিতে হওয়ায় বৈধভাবে পানির লাইন দেওয়ার সুযোগ ছিল না।

কিন্তু নিয়ম ভেঙে ওয়াসা সুপেয় পানির লাইন দিয়েছে। এর পরেই পালটে গেছে পুরো চিত্র। এখন প্রতিটি সংযোগ থেকে ছয় থেকে আটটি পরিবার পানি পাচ্ছে।

পানির সংযোগ দেওয়ার বিষয়ে ঢাকা ওয়াসার উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ) এ কে এম শহীদ উদ্দিন জানান, ‘বস্তি এলাকায় আমরা পানির সংযোগ দেওয়ার কয়েক বছর পর কয়েকটা এনজিও আসছে, তারা গ্যাস দিতে চায়, বিদ্যুত্ দিতে চায়। তারা বলছে, ওয়াসা যেভাবে পানি দিচ্ছে, এটা কীভাবে সম্ভব! এটা তো বেআইনি। আবার তারা ঠিকভাবে বিলও পাচ্ছে, টাকা আদায় হচ্ছে, বকেয়া পড়ছে না। এই একই মডেলে বসতির লোকজন এখন বিদ্যুত্ও পেয়েছে, গ্যাসও পেয়েছে। এর ফলে তাদের জীবনমানের উন্নয়ন হয়েছে ব্যাপক আকারে।’

জানা যায়, ঢাকায় যাদের জমি বা ভবনের মালিকানা নেই, নিয়ম অনুযায়ী তাদের বৈধ পানির সংযোগ দিতে পারে না ওয়াসা। এই নিয়মের কারণে সুপেয় পানির অভাবে নানা রকম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছিল ঢাকার বস্তিবাসীদের। তবে এ নিয়ম পাশ কাটিয়ে বস্তিগুলোতে পানির সংযোগ দেওয়ার পর বদলে যায় বাসিন্দাদের জীবনযাত্রার মান। ঢাকা ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে, বৈধ উপায়ে সংযোগ দেওয়ার সুযোগ না থাকায় স্থানীয় প্রভাবশালীরা সিন্ডিকেট করে ওয়াসার পানি চুরি করে অনেক দামে বিক্রি করছিল। এ সমস্যা সমাধানে লো ইনকাম কমিউনিটি (এলআইসি) নামে শাখা খুলে কয়েকটি বেসরকারি সংস্থার সহযোগিতায় ২০১৩ সাল থেকে বস্তিগুলোতে পানি সরবরাহ শুরু করে ওয়াসা। এখন পর্যন্ত এ শাখার অধীনে ৯ হাজারের বেশি সংযোগ দেওয়া হয়েছে।

ওয়াসার বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক উত্তম কুমার রায় বলেন, ‘স্বল্প আয়ের এসব মানুষ রাজধানীর যেসব এলাকায় থাকছেন, সেই সব জায়গার মালিক সরকারি সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান। তাদের জায়গায় তো আমরা পানির লাইন দিতে পারি না। এ কারণে আমরা ওয়াটার অ্যান্ড স্যানিটারি নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংস্থাগুলোর (এনজিও) সঙ্গে একটা চ্যানেল করে প্রথমে তাদের পানি দেওয়ার চেষ্টা করি।’