বাংলাদেশের অগ্রগতি বিএনপির অপপ্রচারের ওপর চপেটাঘাত : তথ্যমন্ত্রী
জাতিসংঘের সুখী দেশের তালিকায় বাংলাদেশের ৭ ধাপ অগ্রগতি বিএনপি’র ক্রমাগত দেশবিরোধী অপপ্রচারের ওপর প্রচণ্ড চপেটাঘাত, বলেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহ্মুদ।
আজ রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মোঃ জিল্লুর রহমানের ৯ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় সমসাময়িক প্রসংগে তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেব সম্প্রতি প্রেসক্লাবে বক্তব্যে বলেছেন, দেশের মানুষ অসুখী, নয়াপল্টনে বলেছেন, দেশের মানুষ ভালো নেই। আবার গয়েশ্বর রায় বলেছেন, দেশের মানুষ ভালো নেই, খন্দকার মোশাররফ সাহেব বলেছেন, দেশের মানুষ খুব কষ্টে আছে। তাদের ক্রমাগত এই বলার মধ্যেই জাতিসংঘের সুখী ইনডেক্স রিপোর্টে বাংলাদেশ ৭ ধাপ এগিয়েছে। এটি তাদের এসব অপপ্রচার বক্তব্যের প্রতি জাতিসংঘের পক্ষ থেকে প্রচণ্ড চপেটাঘাত।’ পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
‘শুধু বিএনপি নয় আরেকটি পক্ষ আছে যারা মনে করে তারা খুব জ্ঞানী এবং সেটা প্রমাণ করার জন্য শুধু ভুল ধরা ছাড়া তাদের অন্য কোনো কাজ নেই’ উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘বিশ্ব সুখী ইনডেক্সে যে আমরা ভারত, পাকিস্তানকে অনেক পেছনে ফেলে ৭ ধাপ এগুলাম, আমাদের অবস্থান ৯৪, ভারতের অবস্থান ১৩৬ পাকিস্তানের অবস্থান ১২৬, এটি নিয়ে তাদের কোনো বক্তব্য নেই। তারা জনগণকে পাঁচটি টাকাও দেয় না, জনগণের পাশে দাঁড়ায় না, এই করোনাকালে দূরবীন দিয়েও কারো পাশে দাঁড়াতে আমরা দেখিনি। ঘূর্ণিঝড় বা নানা সংকটের সময় কোথাও তাদেরকে দেখা যায় না কিন্তু মাঝে মধ্যে তারা হঠাৎ হঠাৎ একটা রিপোর্ট প্রকাশ করে।’
‘সিপিডি আসলে কোনো গবেষণা করে না, তারা সময়ে সময়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত রিপোর্ট পেশ করে’ বলেন মন্ত্রী হাছান মাহ্মুদ। তিনি বলেন, ‘ইউরোপে যখন কয়েক দশকের মধ্যে খাদ্যপণ্যের দাম সর্বোচ্চ, সেখানে রুটির দাম বেড়েছে ৮০ শতাংশ, চালের দামও বেড়েছে, আমেরিকাতেও খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। ভারত, পাকিস্তানসহ সারা দুনিয়াতেই করোনা এবং যুদ্ধের কারণে দাম বেড়েছে। বাংলাদেশে কিছুটা বেড়েছে কিন্তু তাদের তুলনায় কম। অথচ সিপিডি বলছে উল্টা কথা। ভুল তথ্য উপস্থাপন করে তারা যে জ্ঞানী এটা প্রমাণ করতে চায়।’
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘বিভিন্ন সংগঠনের মধ্যে একটি হচ্ছে ‘সিপিডি’ যাদের সুখী ইনডেক্স নিয়ে কোনো কথা নেই। সিপিডির রিপোর্ট দেখে খুব আশ্চর্য হলাম। বাংলাদেশের মানুষ যে সুখী হচ্ছে এটি নিয়ে কোনো কথা নেই বরং উল্টা কথা বলে বসলো। সারা দুনিয়ায় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশে কিছু ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়েছে যেগুলো মূলত আমদানি নির্ভর। সেটিকে সামাল দিতে কম আয়ের মানুষ যাতে স্বল্পমূল্যে এই পণ্যগুলো কিনতে পারে সেজন্য সরকার রোববার থেকে ১ কোটি মানুষকে কার্ডের মাধ্যমে পণ্য দেয়ার কাজ শুরু করেছে। দেশের মানুষের মধ্যে একটি স্বস্তি ফিরে এসেছে যে স্বল্প আয়ের মানুষ স্বল্পমূল্যে এই পণ্যগুলো পাবে। এ বিষয়ে সিপিডি পরামর্শ দিতে পারতো, সেটি না করে তারা একটা রিপোর্ট দিয়েছে। সরকারের এই উদ্যোগের প্রশংসা না করে উল্টা বলাই যেন সিপিডি’র কাজ।’
এ প্রসঙ্গে হাছান মাহ্মুদ বলেন, ‘বাংলাদেশে কতো ধরনের বিশেষজ্ঞ আছে, তা রাত ১২টার পর টেলিভিশন চ্যানেল খুললে দেখতে পাবেন। এদের মধ্যে অনেকে ভালো বিশেষজ্ঞ তাদেরকে আমি সম্মান জানাই, ধন্যবাদ জানাই, সমাজের জন্য রাষ্ট্রের জন্য তাদের মতামত প্রয়োজন আছে। আর কিছু আছেন সব বিষয়েই বিশেষজ্ঞ আর কিছু আছেন বিশেষ কারণে অজ্ঞ বিশেষজ্ঞ, আর কিছু আছেন আমি এদের নাম দিয়েছি ভুল ধরা পার্টি। শুধু ভুল ধরা ছাড়া এদের কোনো কাজ নেই। দেশের মানুষ সুখে আছে সেটা এদের ভালো লাগে না। বিএনপি’র ভালো লাগে না, বিএনপি’র সাথে যে সমস্ত বুদ্ধিজীবীরা আছে তাদেরও ভালো লাগে না। সমালোচনা হবে কিন্তু সেটা বাস্তবসম্মত হওয়া দরকার। অন্ধ এবং বধিরের মতো সমালোচনা হওয়া সমীচীন নয়।’
এর আগে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ড. হাছান মাহ্মুদ বলেন, আপাদমস্তক ভালো মানুষ জিল্লুর রহমান রাজনীতিকে দেশসেবা ও সমাজ পরিবর্তনের ব্রত হিসেবে নিয়েছিলেন। তার কাছে অনেক কিছু শেখার আছে। আমাদের দলের সংকটকালে জিল্লুর রহমানের ভূমিকা আমাদের দলের ইতিহাসে তো বটেই বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে অম্লান থাকবে।
পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম বলেন, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান নেতা এবং মানুষ দুই হিসেবেই বড় মাপের ছিলেন। তিনি দেশের কল্যাণে রাজনীতি করেছেন, সবসময় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার পাশে থেকেছেন। তার স্মৃতি আমাদের হৃদয়ে চিরজাগরূক।
জিল্লুর রহমান পরিষদের সভাপতি ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ আখতারুজ্জামানের সঞ্চালনায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি দিলীপ কুমার রায়, আওয়ামী লীগ নেতা এম এ করিম, বঙ্গমাতা পরিষদের সভাপতি শেখ শাহ আলম, সাংবাদিক মানিক লাল ঘোষ প্রমুখ সভায় প্রয়াত রাষ্ট্রপতির স্মৃতিচারণ করেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন