বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ফেরাতে যুক্তরাজ্যকে চাপ সৃষ্টির আহ্বান মোমেনের

জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের দ্রুত মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার জন্য যুক্তরাজ্য সরকার এবং ব্রিটিশ পার্লামেন্টের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

তিনি বলেন, আমরা ব্রিটিশ সরকার ও পার্লামেন্টকে জোরপূর্বক মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ এবং স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসনের জন্য চাপ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।

শনিবার (২২ জানুয়ারি) কুতুপালং ও ভাসানচরে ব্রিটিশ পার্লামেন্টারি প্রতিনিধিদলের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যাওয়ার প্রাক্কালে তাদের সঙ্গে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।

রোববার (২৩ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের কনজারভেটিভ পার্টির এমপি টমাস প্যাট্রিক হান্ট এবং পল ব্রিস্টো কুতুপালংয়ে রোহিঙ্গা নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং দুটি ক্যাম্পের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পরিদর্শন করেন।

তারা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে তাদের সংহতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন এবং তাদের নাগরিকত্ব, নিরাপত্তা এবং মিয়ানমারে চলাফেরার স্বাধীনতার জন্য ন্যায্য দাবি আদায়ে তাদের সঙ্গে থাকার রাখার আশ্বাস দিয়েছেন।

যুক্তরাজ্যের এমপিরা আরও উল্লেখ করেছেন, ব্রিটিশ জনগণ, বিশেষ করে ব্রিটিশ মুসলিমরা রোহিঙ্গা পরিস্থিতি সম্পর্কে সহানুভূতিশীল এবং বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের উদার সমর্থন লাভকারী এই বিশাল জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়ানো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্ব।

ব্রিস্টো ২০১৭ সাল থেকে যুক্তরাজ্যের দেওয়া ৩২০ মিলিয়ন পাউন্ড মানবিক সহায়তার কথা উল্লেখ করে বলেন, প্রত্যাবাসনের অপেক্ষায় থাকা রোহিঙ্গাদের জীবনযাত্রার আরও উন্নতির বিষয়টি উত্থাপন করতে থাকবেন।

ড. মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাতকালে ব্রিটিশ প্রতিনিধিদল ব্রেক্সিট-পরবর্তী প্রেক্ষাপটে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ আরও বাড়ানোর বিষয়েও মতবিনিময় করেন। সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় এবং সেইসঙ্গে তাদের আদি বা পূর্বপুরুষের দেশে বৃটেনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের বহুমাত্রিক অবদানের জন্য বৃটিশ এমপিরা তাদের প্রশংসা পুনর্ব্যক্ত করেন।

এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন আশা প্রকাশ করেন, কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে দুই দেশের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক সফর বিনিময় হবে।

তিনি ২০২১ সালের নভেম্বরে গ্লাসগো এবং লন্ডন সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিভিন্ন কর্মসূচির কথা স্মরণ করেন এবং ‘ব্রিট-বাংলা বন্ধন’ উদ্যোগ গ্রহণের জন্য যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ এবং উন্নয়ন অফিসকে (এফসিডিও) ধন্যবাদ জানান।

প্রতিনিধিদলে অন্যদের মধ্যে ছিলেন ব্যবসা, পর্যটন, পরিবহন ও বন্দর সংক্রান্ত জিব্রাল্টার মন্ত্রী বিজয় শামদাস দারিয়ানি, কমনওয়েলথ এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কাউন্সিলের সিইও সামান্থা হেলেন কোহেন সিভিও এবং জি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা জিল্লুর হুসেন এমবিই।

এ সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ফারুক খান উপস্থিত ছিলেন।