‘বাংলাদেশ ছয় লাখেরও বেশি রোহিঙ্গার প্রাণ বাঁচিয়েছে’

ছয় লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে আক্ষরিক অর্থেই বাংলাদেশ তাদের প্রাণে বাঁচিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরের সুরক্ষাবিষয়ক সহকারী হাইকমিশনার ভোলকার তুর্ক। পাঁচ দিনের বাংলাদেশ সফর শেষে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকার একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের এ মহানুভবতার জন্য বিশ্ব এ দেশের পাশে আছে এবং সংকট সমাধানে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে।
বাংলাদেশ সফরের আগে মিয়ানমার সফর করে সে দেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনা করেছেন ভোলকার তুর্ক।

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের আশাবাদী কি না—জানতে চাইলে গতকালের সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আশাবাদী হওয়া ছাড়া আর কোনো পথ নেই। মিয়ানমার একটি রোডম্যাপ ধরে এগিয়ে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় এ ধরনের কোনো রোডম্যাপও ছিল না।

ভোলকার তুর্ক বলেন, ‘কক্সবাজারে ৮০ বছরের এক রোহিঙ্গার সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। তিনি এ নিয়ে চারবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, যা অনেক কষ্টকর। অন্তত রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ বসতভূমিতে ফিরে যাওয়ার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের সংগ্রাম করতে হবে। ’

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনপ্রক্রিয়ায় জাতিসংঘকে সম্পৃক্ত করার কোনো সম্ভাবনা দেখছেন কি না—জানতে চাইলে ইউএনএইচসিআরের এই কর্মকর্তা বলেন, তিনি মৃদু হলেও আশা দেখতে পাচ্ছেন।

গত সপ্তাহে মিয়ানমার সফরের সময় দেশটির কর্মকর্তারা তাঁকে গ্রহণ করেছেন। মিয়ানমারে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনবিষয়ক আন্ত মন্ত্রণালয় সেমিনারেও তিনি অংশ নিয়েছেন।
ভোলকার তুর্ক বলেন, রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার প্রক্রিয়াটি অবশ্যই স্বেচ্ছায়, নিরাপদ ও সম্মানজনক উপায়ে হতে হবে। বাংলাদেশে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি সরেজমিন দেখার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, অনেক বছর ধরে জীবিকা নির্বাহ ও চলাফেরার অধিকার থেকে বঞ্চনা এবং নাগরিকত্বের স্বীকৃতির অভাবই আজ তাদের এই পরিস্থিতিতে এনে ফেলেছে। রোহিঙ্গারা তাঁকে বলেছে যে কেউই তাদের নিজের বলে মনে করে না।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশে ইউএনএইচসিআরের প্রতিনিধি শিনজো কুবে উপস্থিত ছিলেন।

ইন্টার সার্ভিসেস কো-অর্ডিনেশন গ্রুপের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৫ আগস্ট থেকে গতকাল পর্যন্ত অন্তত ছয় লাখ ১১ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।