বারবার কেন দুর্ভিক্ষের কথা বলছে সরকার, প্রশ্ন ফখরুলের

প্রধানমন্ত্রী একদিকে দুর্ভিক্ষের আভাস দিচ্ছেন, অন্যদিকে মুখ্য সচিবদের জন্য ৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে বাড়ি নির্মাণের অনুমতি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী কেন বারবার দুর্ভিক্ষের কথা বলছেন, সেই কথা বুঝতে পারছেন না বলেও সংশয়ের কথা জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব।

মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দুটি সমমনা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফ করার সময় তিনি এসব কথা বলেন।

ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের একক কর্মসূচি ঠিক করতে সমমনা সব দলের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ চালিয়ে আসছে বিএনপি। তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সাথে সংলাপে বসে বিএনপি।

সংলাপে বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। আর, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি- এনডিপি সভাপতি কে এম আবু তাহের ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম সভাপতি শায়খুল হাদীস আল্লামা মনসুরুল হাসান রায়পুরী নিজ দলকে নেতৃত্ব দেন।

সংলাপ শেষে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও এনডিপি সভাপতি জানান, বিএনপির নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির সাথে তারা একমত হয়েছেন। তারা জানান, দাবি আদায়ের এক হয়ে আন্দোলনের বিষয়েও একমত হয়েছে তারা।

এ সময় সরকার পতনের আন্দোলনে চমক দেয়ার মতো কর্মসূচি আসছে এমন ইঙ্গিত দিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, চট্টগ্রাম এবং ময়মনসিংহের বিভাগীয় বিএনপির সমাবেশে জনস্রোত দেখে ক্ষমতাসীনদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি বলেন, সমাবেশের আগের রাতে অঘোষিত কারফিউ জারি করা হয়েছে। রাতে ককটেল গুলিবর্ষণ করেও কোনো বাধার সৃষ্টি করতে পারে নাই। উল্টো পুলিশকে ব্যবহার করে আমাদের চারশ’ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। এভাবে দমন, গুলি, হত্যা ও গুম করে কোনোদিনই ক্ষমতায় টিকে থাকা যাবে না, যতই তারা শক্তিশালী হোক।

মির্জা ফখরুল বলেন, অবৈধ ভোটাধিকার হরণকারী লুটেরা সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আমরা সংলাপ করছি। আমরা প্রথম পর্যায় শেষ করে দ্বিতীয় পর্যায়ে আলোচনা শুরু করেছি। আজকে আলোচনা করেছি ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি) এবং জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের সাথে। আলোচনা মধ্যে যেসব বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি তা হলো এই সরকারের পদত্যাগের দাবিতে, গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধারের দাবিতে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের যে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে তা প্রত্যাহারের দাবিতে একমত হয়ে যুগপৎভাবে আন্দোলন করব।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি যে দুর্ভিক্ষের আভাস দিয়েছেন সে বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব বলেন, সমস্যাটাতো আমরাও বুঝতে পারছি না। কারণ ওনারা কিছুদিন আগেও দাবি করেছেন খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্ন হয়ে গেছেন। আজকে কি এমন ঘটলো যে তারা এখন ভয় পাচ্ছেন, খাদ্য সংকট দেখা দেবে।

তিনি বলেন, মূল বিষয়টা হচ্ছে প্রতিটি খাতে, প্রতিটি ক্ষেত্রে এত বেশি দুর্নীতি যে সেই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের সামাল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সবখানে এত বেশি দুঃশাসন হয়েছে মিস রুল হয়েছে যে নাথিং ইজ আন্ডার দেয়ার কন্ট্রোল। যে কারণে বিদ্যুতের সমস্যা তৈরি হয়েছে বিদ্যুৎ দিতে পারছে না। অন্যদিকে আট হাজার কোটি টাকার ইভিএম কিনতে যাচ্ছে জালিয়াতির ভোট করার জন্য। ৪৩ কোটি টাকা দিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব আর মুখ্য সচিবের বাড়ি তৈরি করা হবে। আপনি কী আসা করেন, অবিশ্বাস্য একটা ঘটনা। আজকে প্রতিটি ক্ষেত্রে এই দুর্নীতি চলছে। সেজন্য তারা এই অবস্থায় উপনীত হয়েছে।

বিপুল অর্থ ব্যয়ে ইভিএম ক্রয় এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও মুখ্য সচিবের জন্য বাড়ি তৈরির বিষয় উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, আট হাজার কোটি টাকায় ইভিএম কিনতে যাচ্ছে একটা জালিয়াতির ভোট করার জন্য। অন্যদিকে, ৪৩ কোটি টাকা দিয়ে মন্ত্রিপরিষদের সচিব ও মুখ্য সচিবের জন্য বাড়ি তৈরি করা হবে। আপনি কি আশা করেন, এটা অবিশ্বাস্য একটা ঘটনা। এ রকম প্রতিটি ক্ষেত্রে, একটা-দুইটা নয়—আজকে প্রতিটি খাতে এ রকম দুর্নীতি হচ্ছে। সে জন্যই আজকে তারা এ অবস্থায় উপনীত হয়েছে।

তথ্য সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এটার জবাব আমি দেব না। দ্যাটস নট মাই বিজিনেস।