বিএনপি অবৈধ অর্থ ব্যয় করে দেশের বিরুদ্ধে বিদেশে লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করেছে
‘বিএনপি অবৈধ অর্থ ব্যয় করে দেশের বিরুদ্ধে বিদেশে লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করেছে, এর পরেও এদেশে তাদের রাজনীতি করার অধিকার থাকে কি না,’ এ প্রশ্ন রেখেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহ্মুদ।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি’র নেতৃত্বাধীন জোট বিশেষ করে বিএনপি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত -এই কথাটা আমরা বহুদিন ধরে বলে আসছি তারপরও হয়তো অনেকের মনে নানা প্রশ্ন ছিল। প্রকৃতপক্ষে দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি রুখে দেয়ার জন্য, দেশের রপ্তানি বাণিজ্যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির জন্য বিএনপি রীতিমতো অর্থ ব্যয় করে লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন জায়গায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করছে।’
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, ‘২০১৫ সালে বিএনপি রাজনৈতিক দল হিসেবে লবিস্ট ফার্মের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তথ্য দাখিল করে। সেখানে বিএনপি এই ফার্মের সাথে একটি চুক্তিতে আবদ্ধ হয় যেটি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম গতকাল পার্লামেন্টে জানিয়েছেন। বিএনপি তাদের নয়াপল্টনের অফিসের ঠিকানা দিয়ে এই ফার্মের সাথে চুক্তিটা করেছে। এই ফার্মকে তারা প্রতি মাসে পঞ্চাশ হাজার ডলার করে এবং শুরুতে দেড় লাখ ডলার এডভান্স দিয়েছে। অর্থাৎ তারা তিন বছরে প্রায় দুই মিলিয়ন ডলার ‘পে’ করেছে। নয়াপল্টনের অফিসের ঠিকানা দিয়ে করা চুক্তি অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। শুধু তাই নয় বিভিন্ন ঠিকানা দিয়ে বিভিন্ন নামে তারা ১২টিরও বেশি লবিস্ট ফার্মের সাথে চুক্তি করেছে এবং মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার তারা এই ক্ষেত্রে ব্যয় করেছে। অর্থাৎ দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার জন্য দেশবিরোধী অপপ্রচার চালানোর জন্য, দেশের উন্নয়ন, অগ্রগতি রুখে দেয়ার জন্য, দেশের রপ্তানি বাণিজ্যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার জন্য বিএনপি লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করে এই কাজগুলো করছে।’
ড. হাছান মাহ্মুদ স্মরণ করিয়ে দেন, ‘আপনারা জানেন যে, কয়েক বছর আগে ওয়াশিংটন টাইমসে বেগম খালেদা জিয়া নিজ নামে নিবন্ধ লিখেছিলেন। সেই নিবন্ধে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পণ্য আমদানি বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। একটি রাজনৈতিক দলের নেত্রী কীভাবে দেশের বিরুদ্ধে বিদেশি একটি পত্রিকায় নিবন্ধ লিখে বলেন যে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে যাতে আমদানি না করে!’
মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি দেশে তাদের অফিসের ঠিকানা দিয়ে চুক্তি করে বিদেশি লবিস্ট ফার্মকে লাখ লাখ ডলার ‘পে’ করছে, নির্বাচন কমিশনে তারা যে ব্যয়ের হিসাব দিয়েছে, সেখানে তো এই হিসাব দেয়নি, নির্বাচন কমিশনের উচিত তাদেরকে তলব করা। দ্বিতীয়ত এই লাখ লাখ ডলার তারা কোথা থেকে পায়, কোথা থেকে আসে, সেটিও তো তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। আমি মনে করি এখানে দুদকেরও ভূমিকা রাখা প্রয়োজন। পাশাপাশি আয়কর বিভাগ থেকেও এ বিষয়ে তদন্ত ও তাদের তলব করা প্রয়োজন। অর্থাৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত এবং সেটার দালিলিক প্রমাণ আমাদের হাতে আছে। যে রাজনৈতিক দল দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত সে দলের কি দেশে রাজনীতি করার অধিকার আছে!’
এ বিষয়ে সরকারের মনোভাব প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি জনগণের ওপর, জনগণের রায়ের ওপর বিশ্বাস করে না। তারা মনে করছে এ ধরনের প্রোপাগান্ডা চালালে তাদেরকে কেউ কোলে করে এনে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। সরকারের পররাষ্ট্র দপ্তরসহ নানা মেকানিজম এ বিষয়ে কাজ করছে। তবে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার এটি একটি রাজনৈতিক সরকার। আমরা বিশ্বাস করি, এদেশের ক্ষমতার মালিক হচ্ছে জনগণ। জনগণ যাদেরকে মনে করবে তাদেরকেই ক্ষমতায় বসাবে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জনগণের রায় ও জনগণের শক্তির ওপর ভর করেই দেশ পরিচালনা করেছে। আর বিএনপি বিশ্বাস করে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের ওপর এবং সন্ত্রাস, নৈরাজ্যের ওপর।’
বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর মন্তব্য ‘সরকারের সিংহাসন টলোমলো’ এর জবাবে ড. হাছান বলেন, ‘সিংহাসন মধ্যযুগীয় শব্দ। বেগম খালেদা জিয়া যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন হয়তো তারা সিংহাসন মনে করতেন। সরকার কিন্তু দেশ পরিচালনা করছে জনগণের রায়ে, সিংহাসনে নাই। আর সরকারের অবস্থান টলোমলো -এটি আমরা বারো বছর ধরে শুনে আসছি। তাদের কর্মীরা যে হতাশ হয়ে গেছে সেই হতাশা থেকে মুক্ত রাখার জন্য রিজভী সাহেবদের এই কথাগুলো বলতে হয়।’
তথ্যবিবরণী: পিআইডি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন