বিএনপি একাই জিততে পারে, জামায়াত প্রসঙ্গে ফখরুল
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অনেকটা ক্ষোভের সুরে বলেছেন, বিএনপি একাই জিততে পারে। অতীতে বিএনপি একা জিতেছে সেই উদাহরণও দেন তিনি।
শুক্রবার বিকালে নয়াপল্টনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করেছি ২০ দলকে একসঙ্গে নির্বাচন করানোর জন্য। জামায়াতে ইসলামী এখন পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে আছে, তারা থাকতেই পারে। তারা এখন পর্যন্ত আমাদের সমর্থন দেয়নি।’
ফখরুল বলেন, ‘১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিএনপি একাই অংশগ্রহণ করেছিল, একাই সরকার গঠন করেছিল। সুতরাং বিএনপির জেতার জন্য কারোর ওপর নির্ভর করতে হয় না। বিএনপি একাই জেতার জন্য স্বয়ংসম্পূর্ণ।’
৩০ জুলাই রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন। বাকি দুই সিটিতে বিএনপির প্রার্থীকেই ২০ দলীয় জোট সমর্থন দিলেও বিএনপির বড় শরিক জামায়াত সিলেটে প্রার্থী দিয়েছে। সিলেটে ধানের শীষের প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী এবং জামায়াতের প্রার্থী এহসানুল মাহবুব জুবায়ের।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা জামায়াতের সঙ্গে ঐক্য করেছি বৃহত্তর স্বার্থে। এই দানব সরকারের হাত থেকে গণতন্ত্র মুক্ত করতে। সবকিছু ধ্বংস করে পশুশক্তি আমাদের ওপর চেপে বসেছে। এই ভয়াবহ সরকারকে সরানোর জন্যই এই ঐক্য। নির্বাচন হচ্ছে দ্বিতীয় তৃতীয় ঐক্য। স্থানীয় নির্বাচনে এর কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’
সিলেটে জামায়াত ইসলামীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে তারা আশা করে বিএনপি তাদের সমর্থন দেবে, এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আশা তো করতেই পারে। আমরা তো কারোর আশায় বাধা দিচ্ছি না।’
এত অভিযোগ সত্ত্বেও বিএনপি স্থানীয় পর্যায়ে কেন বর্তমান কমিশনের অধীনে নির্বাচনে যাচ্ছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘বিএনপি একটি লিবারেল ডেমোক্রেটিক রাজনৈতিক দল। আমরা জনগণের সঙ্গে রাজনৈতিক দল হিসেবে থাকতে চাই। কারণ স্থানীয় নির্বাচন ক্ষমতার পরিবর্তন করে না।’
‘কাদের সাহেব ফোন করলে আমরাও করবো’
সংলাপ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা বহুবার আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছি। আজকে আপনাদের মাধ্যমে আবারও আহ্বান করছি। কোথায় বসবেন, কী করবেন- আমরা বসতে রাজি। যেকোনো স্থানে, যেকোনো সময় আলোচনায় বসতে প্রস্তত আছি।’
ফখরুল বলেন, ‘আমরা কতবার সংলাপের কথা বলেছি। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের একটা সুবিধা আছে, উনি খুব সুন্দর করে যখন যা খুশি বলতে পারেন। সেই ব্যাপারে তার কোনো রকমের সমস্যা নেই। উনি বলতেই পারেন। আমরা তো আলোচনাই চেয়ে আসছি বরাবরই।’
‘আমরা একটা সুস্থ অবস্থায় যাওয়ার জন্য একটা নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথ বের করতে তাদের সঙ্গে আলোচনার জন্যে সব সময় আহ্বান জানাচ্ছি। আজকেও আপনাদের মাধ্যমে আবারো আহ্বান জানালাম- আসেন আলোচনায় বসি, কথা বলি। কোথায় বসবেন কী করবেন বলুন। আমরা সবসময় প্রস্তুত আলোচনার জন্য।’
ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন সংলাপ না হলেও ফোনে তো আলাপ হতে পারে- এই রকম প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ঠিক আছে আমরা অগ্রিম ম্যাসেজটা জানলাম। গুড ম্যাসেজ। আশা করার মতো ম্যাসেজ। উনি যদি আমাদের ফোন করেন আমরাও ফোন করবো।’
নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, আইন বিষয়ক সম্পাদক সানাউল্লাহ মিয়া, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাসুদ আহমেদ তালুকদার, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, আবদুল আউয়াল খান উপস্থিত ছিলেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন