বিজয়ের ঝড় ছাপিয়ে মৃত্যুঞ্জয়ের হ্যাটট্রিক, নাটকীয় ম্যাচে জয় পেল চট্টগ্রাম

বিপিএল অষ্টম আসরের ১২তম ম্যাচে সিলেট সানরাইজার্সকে ১৬ রানে হারিয়েছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। এই ম্যাচে আসরের প্রথম হ্যাটট্রিক করেছেন চট্টগ্রাম টিমের পেসার সাতক্ষীরার কলারোয়ার সন্তান মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। তিনি খেলতে নেমেছিলেন নিজের অভিষেক ম্যাচ।

ম্যাচটিতে হ্যাটট্রিক করেন চট্টগ্রামের অভিষিক্ত খেলোয়াড় মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। তিনি ম্যাচের ১৮তম ওভারে এসে হ্যাটট্রিকের দেখা পান।

আর তার হ্যাটট্রিকেই ঘুরে যায় ম্যাচের ভাগ্য। একটা সময় এনামুলের ব্যাটে সিলেট জয়ের কিছুটা স্বপ্ন দেখলেও মৃত্যুঞ্জয়ের হ্যাটট্রিকের সুবাদে সেই স্বপ্নের মৃত্যু ঘটে। তাছাড়া নাসুম আহমেদ দুটি উইকেট তুলে নেন।

মৃত্যুঞ্জয় ১৮তম ওভারটি করতে এসে এই ওভারের তৃতীয় বলে সিলেটের হয়ে সর্বোচ্চ রান করা এনামুলকে ক্যাচ আউট করে সাজঘরে পাঠান। এনামুল ৪৭ বল খেলে ৭৮ রান করেন।

এরপর ওভারের চতুর্থ বলে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন সিলেটের অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন। তিনি প্রথম বলেই আউট হন। তিনি আউট হওয়ার আগে প্রান্ত বদল করেন অপর প্রান্তে থাকা রবি বোপারা।

এই সময় মৃত্যুঞ্জয়ের সামনে তৈরি হয় হ্যাটট্রিক তুলে নেয়ার সুযোগ। আর সেই সুযোগটি তিনি কাজে লাগান বোপারাকে সরাসরি বোল্ড আউট করে।

ম্যাচটিতে সিলেটের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫০ রান করেন কলিন ইনগ্রাম। এনামুল ও ইনগ্রাম সর্বোচ্চ চেস্টা করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারেননি।

অন্যদিকে, বিজয়ের ব্যাট থেকে আসে সর্বোচ্চ ৭৮ রান। ৪৭ বলের মোকাবেলায় তিনি হাঁকান ৯টি চার ও ৩টি ছক্কা।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ২০২ রান জড়ো করে স্বাগতিক দল। দারুণ শুরু এনে দেওয়া উইল জ্যাকস ১৮ বলে অর্ধশতক হাঁকিয়ে গড়েন বিপিএলের ইতিহাসের দ্বিতীয় দ্রুততম অর্ধশতকের রেকর্ড, যা এবারের আসরে সবচেয়ে দ্রুততম।

তার ১৯ বলে ৫২ রানের ইনিংস গড়ে দেয় বড় সংগ্রহের ভিত। এরপর আফিফ হোসেন ধ্রুবর ২৮ বলে ৩৮ (১টি চার ও ৩টি ছক্কা), সাব্বির রহমানের ২৯ বলে ৩১ (৩টি চার) ও বেনি হাওয়েলের ২১ বলে ৪১ রানের অপরাজিত ইনিংস দলকে পথ দেখায়।

শেষদিকে ৪ বলে ১৩ রানের অপরাজিত থাকেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুতেই লেন্ডল সিমন্সকে হারিয়ে ফেলে সিলেট। দ্বিতীয় উইকেটে ১১২ রানের পার্টনারশিপ গড়েন এনামুল হক বিজয় ও কলিন ইনগ্রাম। ৩৭ বলে ৫০ রান করে ইনগ্রাম বিদায় নিলেও বিজয় ঝড়ো ব্যাটিং অব্যাহত রাখেন।

তবে রবি বোপারার ১২ বলে ১৫ রান ছাড়া আর কোনো ইনিংস বিজয়কে সঙ্গ দিতে পারেনি। ১৮তম ওভারে মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীর প্রথম ২ বলে ১০ রান নেন বিজয়। পরের ৩ ডেলিভারিতে বিজয়, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও রবি বোপারাকে আউট করে আসরের প্রথম হ্যাটট্রিক করেন মৃত্যুঞ্জয়। ষষ্ঠ বাংলাদেশি বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টি হ্যাটট্রিক করা মৃত্যুঞ্জয়ের হাত ধরে আসে বিপিএলের ষষ্ঠ হ্যাটট্রিক।

শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৮৬ রান জড়ো করে সিলেট।

এতে চট্টগ্রাম পায় ১৬ রানের জয়। চট্টগ্রামের পক্ষে মৃত্যুঞ্জয় তিনটি ও নাসুম আহমেদ দুটি উইকেট শিকার করেন।