বিমানবন্দরকে আরেক ‘শাপলা চত্বর’ বানানোর হুমকি
বিশ্ব ইজতেমায় এক মাওলানার আগমন ঠেকাতে বিমানবন্দর এলাকায় তবলিগ জামাতের বিক্ষোভ থেকে ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরের মতো পরিস্থিতি তৈরির হুমকি দেয়া হয়েছে।
দিল্লির মাওলানা সাদ ২০১৪ সাল থেকেই আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করে আসছিলেন। তবে তার বেশ কিছু বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে এবার তাকে নিয়ে তবলিগ জামাতের মধ্যে বিরোধ দেখা দিয়েছে। এক পক্ষ তাকে ইজতেমায় যোগ দেয়ার পক্ষে, অপর অংশ তাকে বাংলাদেশে আসার বিপক্ষে।
বুধবার সকাল ১০টায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছার কথা মাওলানা সাদের। তার আগে থেকেও বিভিন্ন কওমি মাদ্রসার ছাত্র-শিক্ষক এবং তবলিগ জামাতের অনুসারীরা বিমানবন্দর মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ জানাতে থাকে।
এক পর্যায়ে বিমানবন্দর সড়কের দুই দিকেই যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এতে বিমানবন্দর মোড় থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে গাজীপুর অংশ পর্যন্ত এবং বিমানবন্দর মোড় থেকে বনানীর দিকে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। মূল সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গাড়িগুলো উত্তরার বিভিন্ন ভেতরের সড়কে ঢুকে আগানোর চেষ্টা করে সেখানেও আটকে যায়। এতে উত্তরার অলিগলিতেও ছড়িয়ে পড়ে যান জন আর লাখ লাখ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়ে। তারা যানবাহন থেকে নেমে হেঁটে চলতে বাধ্য হয়।
বিক্ষোভকারীরা বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার গাড়ি এমনকি অ্যাম্বুলেন্সগুলোতেও মাওলানা সাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করে।
পাশাপাশি বিমানবন্দর এলাকায় সড়কে অবস্থান নিয়ে চলতে থাকে সমাবেশ। এই সমাবেশ থেকে দফায় দফায় মাওলানা সাদ ফিরে না গেলে আরেকটি শাপলা চত্বরের মতো পরিস্থিতি তৈরির হুমকি দেয়া হতে থাকে।
২০১৩ সালে ধর্মভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের ঢাকা অবরোধের সময় রাজধানীর শাপলা চত্বরে সমাবেশ করা হয়। পরে সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় আর দিনব্যাপী চলে তাণ্ডব। পরে রাতে শাপলা চত্বরে অবস্থান নেয়া নেতা-কর্মীদেরকে উচ্ছেদ করে পুলিশ। আর সেই অভিযানে ব্যাপক প্রাণহানি নিয়ে গুজব ছড়ায় আর এ জন্য সরকারকে বেশ চাপে পড়তে হয়। পরে অবশ্য হেফাজতে ইসলামী নিহত কারও নাম দিতে পারেনি।
বিমানবন্দরকে আরেকটি শাপলা চত্বর করার হুমকি দিয়ে করা সমাবেশে বক্তব্য চলাচালে একজন বক্তা অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাদেরকে তার সহকর্মীরা বিমানবন্দরের উল্টোপাশে এতিমখানা মাদ্রাসায় নিয়ে যান।
বেলা বাড়ার সাথে সাথে বিমানবন্দর এলাকার দিকে কওমি মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকদের বিভিন্ন মিছিল আসতে শুরু করে। তারা মূল সড়কে অবস্থান নিয়ে থাকলেও তাদেরকে সেখান থেকে সরিয়ে দিতে কোনো উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি।
তবে বিমানবন্দর এলাকায় অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা আছে। তারা পুরো বিমানবন্দর চত্বর এলাকা ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছে।
বিক্ষোভকারীদের এই অবস্থানের কারণে ঢাকায় চলাচলকারী লাখো মানুষের পাশাপাশি বিপাকে পড়েছে বিদেশ থেকে আসা হাজারো মানুষ। তারা বিমানবন্দরেই আটকে আছেন।
তবে বিক্ষোভকারীরা জনদুর্ভোগের বিষয়টি গুরুত্ব দিচ্ছে না। একজন বিক্ষোভকারী বলেন, ‘আমরা মাওলানা সাদের ফিরে যাওয়ার ঘোষণা না শুনে এলাকা ছাড়ব না।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন