বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে ইংল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্র বিদায় ইরানের

জিতলেই ইতিহাস। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের শেষ ষোলোতে খেলা নিশ্চিত। অন্যম্যাচে ইংল্যান্ড জিতলে বা ড্র করলেও আশা থাকবে। অন্যদিকে নকআউট পর্বে যেতে জিততেই হবে যুক্তরাষ্ট্রকে। এমন সমীকরণের ম্যাচে শুরু থেকে গোলের জন্য মরিয়া চেষ্টা চালালো যুক্তরাষ্ট্র।

সাফল্য পায় প্রথমার্ধের শেষ দিকে। ৩৮ মিনিটে মার্কিনিদের এগিয়ে নেন ক্রিস্টিয়ান পুলিসিক। শেষ পর্যন্ত এই গোল ধরে রেখে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে যুক্তরাষ্ট্র। এতেই তিন ম্যাচে ৪ পয়েন্টে তারা জায়গা করে নেয় নকআউট পর্বে। ‘বি’ গ্রুপ থেকে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে তাদের সঙ্গী ইংল্যান্ড।

আল রাইয়ান স্টেডিয়ামে ৩-০ গোলে হারায় ওয়েলসকে।   গ্রুপ পর্বের বৈতরণী পার হতে মাত্র এক পয়েন্ট দরকার ছিল ইরানের। সেই কাঙ্খিত একটি পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেনি এশিয়ার দলটি। গতকাল আল থুমামা স্টেডিয়ামে প্রথমার্ধে ঘর সামলাতেই বেশি ব্যস্ত থাকতে দেখা যায় ইরানকে। এই সময়ে গোলের জন্য একটি শটও নিতে পারেনি তারা। আর যুক্তরাষ্ট্রের ৯ শটের তিনটি লক্ষ্যে ছিল। প্রথমটি ছিল ম্যাচের একাদশ মিনিটে। ইউনুস মুসার ক্রসে পুলিসিকের হেডে জোর ছিল না তেমন, সহজেই বল ধরে ফেলেন ইরান গোলরক্ষক।

২৮তম মিনিটে সুবর্ণ সুযোগ হারান টিম উইয়াহ। ফাঁকায় থেকে এই ফরোয়ার্ড দুর্বল হেড করেন গোলরক্ষক বরাবর। ৩৮তম মিনিটে কাঙ্খিত গোলের দেখা পায় যুক্তরাষ্ট্র। ওয়েস্টন ম্যাকেনির ক্রসে হেডে বল ছয় গজ বক্সে বাড়ান সের্জিনো দেস্ত, আর দারুণ ভলিতে জালে পাঠান চেলসির ফরোয়ার্ড পুলিসিক। দ্বিতীয়ার্ধেও ইরানের অবস্থা খুব ভালো ছিল না। তবে ম্যাচের শেষ দিকে বেশ কয়েকটি ভালো সুযোগ তৈরি করেছিল ইরান। কখনো আক্রমণভাগের ভুলে, কখনো আবার যুক্তরাষ্ট্রের গোলকিপার ম্যাট টার্নারের দক্ষতায় গোলবঞ্চিত হয় তারা।

এ নিয়ে ষষ্ঠবারের মতো বিশ্বকাপের শেষ ষোলোতে উঠলো যুক্তরাষ্ট্র। এর আগে তারা শেষ ষোলোতে খেলেছে ১৯৩৪, ১৯৯৪, ২০০২, ২০১০ ও ২০১৪ বিশ্বকাপে। ২০০২ সালে কোয়ার্টার ফাইনালেও খেলেছে তারা। যুক্তরাষ্ট্র কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতে পারত ১৯৯৮ বিশ্বকাপেও। সেবার গ্রুপ পর্বে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ইরানের কাছে হেরেই বাদ পড়তে হয় মার্কিনিদের। বিশ্বকাপে গতকালের আগে এটাই ছিল রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক দিক থেকে ‘শত্রু’ দুই দেশের একমাত্র সাক্ষাৎ। অন্যদিকে পারস্য উপসাগরের তীরে কাতার বিশ্বকাপে ইরান খেলতেই এসেছে দেশের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতাকে সঙ্গী করে। দেশে সরকারবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত মানুষের সমর্থনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচের আগে দলটির খেলোয়াড়েরা জাতীয় সংগীতে কণ্ঠ মেলাননি। এ নিয়ে বিতর্ক আরও চাঙা হয়। সেই ম্যাচে শেষ পর্যন্ত ৬-২ গোলে উড়ে যায় ইরান। দ্বিতীয় ম্যাচের আগে আবার জাতীয় সংগীতে কণ্ঠ মেলান ইরানের খেলোয়াড়েরা। সেই ম্যাচটি তারা ওয়েলসের বিপক্ষে জেতে ২-০ গোলে।

অপরদিকে একটি পয়েন্ট পেলেই প্রাথমিক লক্ষ্য পূরণ হতো ইংলিশদের। তবে শক্তিশালী দলটি সেই ভাবনাতেই গেল না। ছন্নছাড়া ওয়েলসের ওপর শুরু থেকেই চাপ বাড়াল তারা। আর বিরতির পর বইয়ে দিল আক্রমণের ঢেউ। তাতে ভেসে গেল ওয়েলসের স্বপ্ন। গ্রুপ সেরা হয়ে নকআউট পর্বে উঠলো ইংল্যান্ড।

আল রাইয়ানের আহমেদ বিন আলি স্টেডিয়ামে ‘বি’ গ্রুপের শেষ রাউন্ডের ম্যাচে আলো ছড়ালেন মার্কাস রাশফোর্ড। তার জোড়া গোলের নৈপুণ্যে ৩-০ ব্যবধানে জিতলো গ্যারেথ সাউথগেটের দল। অন্য গোলটি ফিল ফোডেনের।