বিশ্বজিৎ হত্যা: চার আসামির রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন
পুরান ঢাকায় দরজি দোকানি বিশ্বজিৎ দাস হত্যা মামলায় খালাসপ্রাপ্ত চার আসামির রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।
সোমবার চেম্বার আদালতে আবেদনটি করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নজিবুর রহমান। তিনি জানান, খালাসপ্রাপ্ত চার আসামির রায় স্থগিত চেয়ে চেম্বার আদালতে আবেদন করা হয়েছে। আজই এ আবেদনের উপর শুনানি হতে পারে। এছাড়া এ মামলায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
গত ৬ আগস্ট বিশ্বজিৎ দাস হত্যা মামলায় রায় ঘোষণা করে হাইকোর্ট। বিচারপতি রুহুল কুদ্দস এবং বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর দ্বৈত ডিভিশন বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আট আসামির মধ্যে দুইজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে হাইকোর্ট। এছাড়া মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও দুইজনকে খালাস দিয়েছেন আদালত। এছাড়া যাবজ্জীবনপ্রাপ্তদের মধ্যে থেকে আপিলকারী দুইজনকে খালাস দিয়েছেন আদালত। যারা আপিল করেননি তাদের বিষয়ে কোনো রায় দেননি আদালত।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুইজন হলেন- রফিকুল ইসলাম ওরফে শাকিল ও রাজন তালুকদার। যাবজ্জীবনপ্রাপ্তরা হলেন- মাহফুজুর রহমান ওরফে নাহিদ, জিএম রাশেদুজ্জামান ওরফে শাওন, নূরে আলম ওরফে লিমন, ইমদাদুল হক এমদাদ।
খালাসপ্রাপ্ত চারজন হলেন- কাইয়ুম মিয়া, সাইফুল ইসলাম, গোলাম মোস্তফা ও এএইচএম কিবরিয়া। এদের মধ্যে প্রথম দুজনকে মৃত্যুদণ্ড থেকে খালস দেয়া হয়।
২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে বাহাদুর শাহ পার্কের কাছে পথচারী বিশ্বজিৎ দাসকে নৃশংসভাবে হত্যা করে ছাত্রলীগ কর্মীরা।
হত্যার ঘটনায় ওই রাতেই সূত্রাপুর থানায় মামলা করে পুলিশ। পরদিন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবি ও ভিডিও ফুটেজ দেখে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন। এরপর সাত আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে মামলাটি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশে (ডিবি) স্থানান্তর করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের এক বছরের মাথায় ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর বিশ্বজিৎ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪-এর বিচারক এ বি এম নিজামুল হক।
রায়ে ২১ আসামির মধ্যে আটজনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। বাকি ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত। দণ্ড পাওয়া সবাই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কর্মী।
২১ আসামির মধ্যে এখন পর্যন্ত আটজন গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। বাকি ১৩ জন পলাতক রয়েছেন।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া ১৩ জন হলেন- এ এইচ এম কিবরিয়া, গোলাম মোস্তফা, খন্দকার ইউনুস আলী, তারেক বিন জোহর, আলাউদ্দিন, ওবায়দুল কাদের, ইমরান হোসেন, আজিজুর রহমান, আল আমিন শেখ, রফিকুল ইসলাম, মনিরুল হক পাভেল, কামরুল হাসান ও মোশাররফ হোসেন। এদের মধ্যে এস এম কিবরিয়া ও গোলাম মোস্তফা কারাগারে আছেন। বাকি ১১ জন পলাতক।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন