বিশ্ব ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে, মৃত্যু হবে ৩ কোটি মানুষের!

মহামারি আকারে বিস্তার লাভ করা করোনাভাইরাসের প্রভাবে স্থবির হয়ে পড়েছে পুরো পৃথিবী। করোনার তাণ্ডবে থেমে আছে বিশ্বের অর্থনীতির চাকা। থেমে আছে উৎপাদন, বিপণন, কল-কারখানা। শুক্রবার জাতিসংঘের বিশেষায়িত সংস্থা ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের (ডব্লিউএফপি) নির্বাহী পরিচালক ডেভিড বেসলি জানিয়েছেন, অবিলম্বে সাহায্যের হাত না-বাড়ালে চরম খাদ্য সংকটে না খেতে পেয়ে অন্তত ৩ কোটি মানুষের মৃত্যু হবে।

বিশেষ করে আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যে প্রকট আকার ধারন করবে এ দুর্ভিক্ষ।

বৈশ্বিক খাদ্য সংকটের চতুর্থ বাৎসরিক প্রতিবেদন অনুযায়ী ইয়মেন, গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গো, আফগানিস্তান, ভেনেজুয়েলা, ইথিওপিয়া, দক্ষিণ সুদান, সুদান, সিরিয়া, নাইজেরিয়া ও হাইতিতে খাদ্য সংকট রয়েছে।

ভয়ানক এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় এখন থেকেই বিশ্বের বড় বড় ধনকুবেরদের কাছে হাত পাতছে জাতিসংঘ। ‘ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম’ (ডব্লিউএফও)-র পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, বিশ্বের ২৭ কোটি মানুষ খাদ্য সঙ্কটের মুখে পড়তে চলছেন।

এভাবে চললে এই বছরের শেষেই ১৩ কোটি ৮০ লক্ষ মানুষ খাদ্যাভাবের কবলে পড়বেন।

এই পরিস্থিতিতে ধনকুবেরদের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে জাতিসংঘের খাদ্য বিভাগের প্রধান ডেভিড বিসলি বলেন, খাবারের অভাবে মৃত্যুমুখে দাঁড়িয়ে থাকা ওই ৩ কোটি মানুষকে বাঁচাতে বছরে অন্তত ৪৯০ কোটি ডলার সাহায্য প্রয়োজন। বিশ্বে অন্তত দু’হাজার বিলিয়নিয়র রয়েছেন। তাঁদের মোট ধনসম্পদ, বার্ষিক আয় যোগ করলে ৮ লক্ষ কোটি ডলারেরও বেশি।

বিসলি আরও বলেন, এই মহামারী পরিস্থিতিতেও অনেকে কোটি কোটি ডলার কামিয়েছেন।

কেউ বিপুল অর্থ উপার্জন করতেই পারেন। তাতে আমার কিছু বলার নেই। কিন্তু মানব সভ্যতা এক ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে। এমন পরিস্থিতি আমরা অনেকেই জীবদ্দশায় দেখিনি।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এক ভার্চুয়াল সেশনে কিছু দিন আগে বেসলি বলেছেন, করোনাভাইরাসের সবচেয়ে খারাপ প্রভাব হিসেবে বিশ্বের তিন ডজন দেশে দুর্ভিক্ষ নেমে আসতে পারে। ইতিমধ্যে ১০টি দেশে প্রায় ১ মিলিয়ন লোক অনাহারে দিন কাটানোর দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। অনেক দেশে এই মানবিক সমস্যাটার কারণে নানাধরনের সহিংসতা, দ্বন্দ্ব ও বিবাদ তৈরি হতে পারে।