ভোটের কৌশলেই জোটকে ক্ষমতাসীনদের ‘সাধুবাদ’
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জোট নিয়ে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের। আসন্ন নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করতে রাজনীতির মাঠে চলমান জোট প্রক্রিয়াগুলো নিয়ে কোনো আপত্তি নেই দলটির। ভোটের কৌশলের অংশ হিসেবেই জোটগুলোকে সাধুবাদ জানাচ্ছে ক্ষমতাসীনরা।
আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা বলছেন, আগামী নির্বাচনে বিএনপির আসা, না আসা- দুটি বিষয়ই তারা মাথায় রাখছেন। বিএনপি নির্বাচনে না আসলেও অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচনের রূপ দিতে জোট প্রয়োজন। আবার বিএনপি আসলেও জোটকে সক্রিয় রেখে দলটি যাতে কম আসন পায় সেই কৌশলও অবলম্বন করা হচ্ছে। এ জন্য জোট প্রয়োজন। তাই জোট যতই হোক আওয়ামী লীগের দুশ্চিন্তার কিছু নেই।
দলটির নেতারা জানিয়েছেন, ভোটের আগে হিসাব-নিকাশ ওলট-পালট না হলে জোট প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয় এমন কিছু ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে করা হবে না। জোট প্রক্রিয়া নিয়ে আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা হয়। তাদের কারও কাছ থেকে এ প্রক্রিয়া নিয়ে নেতিবাচক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। বরং সাধুবাদ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও।
জোট গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের অধিকার আছে জোট গঠনের। এখানে আমাদের কিছুই বলার নাই। এটি তাদের অধিকার।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি নির্বাচনে না আসলেও একাদশ সংসদ নির্বাচন যেন প্রশ্নবিদ্ধ না হয়- এ বিষয়ে খুবই সচেতন আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারণী মহল। আন্তর্জাতিক কোনো সংস্থা বা বিদেশি রাষ্ট্রগুলো যেন এ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলতে না পারে, সেদিকে সজাগ দৃষ্টি তাদের।
নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলো যদি জোট গঠনের মাধ্যমে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তাহলে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে এবং এতে বিএনপি অংশ না নিলেও গ্রহণমূলক নির্বাচন হয়েছে- এটি বিশ্বসম্প্রদায়ের কাছে প্রমাণ করা যাবে। এমন সমীকরণে জোট গঠনে মনে মনে খুশি ক্ষমতাসীনরা।
সূত্রগুলো দাবি করছে, আগামী নির্বাচনে দেশি-বিদেশি বিপুল সংখ্যক পর্যবেক্ষক পর্যবেক্ষণে আসবেন। তারা যাতে নির্বাচনের উৎসবে বিএনপির অনুপস্থিতির বিষয়টি টের না পান, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য যত বেশি জোট তত বেশি প্রতিদ্বন্দ্বী, আর প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হলে নির্বাচন সফল হতে বাধ্য। আর সফল হলে বিএনপি নির্বাচনে না এলেও আন্তর্জাতিক মহল থেকে নির্বাচন নিয়ে তেমন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে না।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগের মধ্যম সারির নেতারা এ মুহূর্তে বিভিন্ন দলের জোট গঠনের দৌড়ঝাপকে নিজেদের জন্য আশীর্বাদ হিসেবে দেখছেন। ‘যেন মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি’র মতো অবস্থা। এরই অংশ হিসাবে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন, বিকল্পধারা প্রেসিডেন্ট ড. এ কিউ এম বদরুদ্দৌজা চৌধুরী, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহামুদুর রহমান মান্নার জোট গঠনের যেসব সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে এর প্রতিক্রিয়ায় ওবায়দুল কাদের ইতিবাচক মনোভাবের কথা প্রকাশ করেছেন।
আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন নেতা নাম প্রকাশ না করে জানান, জোট গঠনের প্রক্রিয়ায় থাকা এসব নেতারা কেউ শেখ হাসিনার শুভাকাঙ্ক্ষি নন, তবুও নির্বাচনে তাদের অংশ নেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা গেলে সুফল পাবে আওয়ামী লীগই।
বিএনপি নির্বাচনের বাইরে থাকলেও নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলকে যদি নির্বাচনে অংশ নেয়ার মতো ক্ষেত্র ও পরিস্থিতি আওয়ামী লীগ তৈরি করে দিতে পারে সেক্ষেত্রে বিএনপির অস্তিত্ব আরও বিলীন হবে। সেই চিন্তা থেকেও রাজনৈতিক কৌশল হিসাবে জোট গঠনের এ প্রক্রিয়াকে সাধুবাদ জানাচ্ছে আওয়ামী লীগ। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুল মতিন খসরু বলেন, জোট গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে আওয়ামী লীগের কোনো আপত্তি নাই। প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলেরই আলাদা আলাদা পরিকল্পনা থাকে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী দলের ভবিষ্যৎ কর্মকাণ্ড নির্ধারিত হয়।-প্রতিবেদন জাগো নিউজের সৌজন্যে প্রকাশিত।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন