ভোটের দিনও থাকবে শৈত্যপ্রবাহ
রাত পোহালেই একাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। সারা দেশের ১০ কোটির বেশি ভোটার তাদের নাগরিক অধিকার প্রয়োগ করে বিজয়ী করবেন পছন্দের প্রার্থীকে। তবে সে দিন দেশের বেশিরভাগ এলাকার ভোটারদেরই প্রার্থীকে বিজয়ী করার আগে জয় করতে হবে তীব্র শীত। ভোটের দিন উৎসাহ আর উৎকণ্ঠার পাশপাশি থাকবে শৈত্যপ্রবাহও।
যার কারণে দেশের বেশিরভাগ এলাকার তাপমাত্রা থাকবে ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে। সকালের আকাশটাও থাকবে কুয়াশার দখলে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, শুক্রবার দেশের বিভিন্ন এলাকাজুড়ে যে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে তা অব্যাহত থাকবে ভোটের দিনও। পাশাপাশি থাকবে মাঝারি থেকে ঘন কুশায়া।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য মতে, রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগ এবং টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, শ্রীমঙ্গল, বরিশাল ও ভোলা অঞ্চলে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বিরাজ করছে। এর ফলে ওই সব এলাকার তাপমাত্রা নেমে এসেছে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে। রাজশাহীতে রেকর্ড করা হয়েছে সর্বনিম্ন ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা।
আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, এখন রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও ঢাকা বিভাগের বেশিরভাগ জেলার তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে রয়েছে। তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে থাকলে আমরা তাকে শৈত্যপ্রবাহ বলি। বাতাসের তাপমাত্রা ৬ থেকে ৮ ডিগ্রির মধ্যে হলে মাঝারি ও তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রির চেয়ে বেশি থেকে ১০ ডিগ্রির মধ্যে হলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলে। দেশে এখন মৃদু ও মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বইছে। এই অবস্থা ভোটের দিনও বিরাজ করবে।
তিনি বলেন, ভোটের দিন ভোর রাত থেকে সকাল পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে কুয়াশা থাকবে। যেখানে পানির উৎস কাছাকাছি বা গাছপালা বেশি সেখানে কুয়াশা বেশি পড়বে।
গত ২৫ ডিসেম্বর থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বইছে। এটা মৌসুমের প্রথম শৈত্যপ্রবাহ। গতকাল সন্ধ্যা ছয়টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, শ্রীমঙ্গল, বরিশাল ও ভোলাসহ রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে হালকা থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
এ সময় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। শেষরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।
আবহাওয়া অধিদফতরের ডিসেম্বর মাসের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে বলা হয়, মাসের শেষার্ধে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে এক থেকে দুটি মৃদু (০৮-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) অথবা মাঝারি (০৬-০৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
এদিকে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসের আবহাওয়ার চিত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ওই বছর ডিসেম্বর মাসের শেষ দিকে প্রায় সারা দেশে ছিল হাড়কাঁপানো শীত। ডিসেম্বরের শুরু থেকে শীত পড়তে শুরু করলেও তীব্রতা বাড়তে শুরু করে মাসের শেষার্ধে গিয়ে। শেষ সপ্তাহে শুরু হয় শৈত্যপ্রবাহ। সে বছর ২৭ ডিসেম্বর মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইতে শুরু করে উত্তর, উত্তর-পূর্ব ও মধ্যাঞ্চলে।
আবহাওয়াবিদদের মতে, ডিসেম্বর ও জানুয়ারি হলো দেশের শীতলতম মাস। প্রতিবছর এই দুই মাসে শীতের তীব্রতা থাকাটাই স্বাভাবিক। এ সময় সূর্য আলো দেয় দিনে গড়ে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা। এর সঙ্গে ঘন কুয়াশা বাড়ায় শীতের অনুভূতি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন