মঠবাড়িয়ায় অনিয়মের তদন্তে গিয়ে নিজেই অনিয়ম করলেন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার
অনিয়মের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে গিয়ে নিজেই অনিয়ম করলেন পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মীর একেএম আবুল খায়ের। একজন সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ থাকা স্বত্বেও টাকার বিনিময়ে অনিয়মের পক্ষে প্রতিবেদন দিয়েছেন তিনি।
জানা গেছে, মঠবাড়িয়া উপজেলার টিকিকাটা ইউনিয়নের দধিভাঙ্গা গ্রামের আব্দুল খালেক ফরাজীর ৩ ছেলে – আফজাল হোসেন,হারুন অর রশীদ এবং ফারুক হোসেন।এদের মধ্যে হারুন অর রশীদের জন্ম তারিখ ১৯৭১ সালের ১ মার্চ এবং ফারুক হোসেনের জন্ম তারিখ ১৯৭৫ সালের ২ ডিসেম্বর। হারুন অর রশীদ ১৯৮৬ সালে এসএসসি পাশ করে সামরিক বাহিনীতে যোগদানের চেষ্টা করতে করতে নির্ধারিত বয়স অতিক্রম হয়ে যায়। এরপর তিনি তারেক নাম ধারন করে বয়স কমিয়ে নতুন জন্ম তারিখ (১৯৭৭ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর) দিয়ে পুনরায় নবম শ্রেনীতে ভর্তি হয়ে বামনা সরকারি সরোয়ার জাহান উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৯৩ সালে পুনরায় এসএসসি পাশ করেন। এরপর বিমান বাহিনীতে যোগদান করেন।
অন্যদিকে ফারুক হোসেন হলতা কুমিরমারা আবু জাফর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ১৯৯১ সালে এসএসসি পাশ করেন। অতঃপর হারুন অর রশীদ নাম ধারন করে কৃষি ডিপ্লোমায় ভর্তি হন।ভর্তির ক্ষেত্রে ডকুমেন্টস হিসেবে হারুন অর রশীদের এসএসসি পাশের কাগজ পত্র জমা দেন।ফারুক হোসেন হারুন অর রশীদ নাম ধারন করে কৃষি ডিপ্লোমার সনদ নিজে অর্জন করলেও হারুন অর রশীদ নামে এসএসসি সনদটি ফারুকের নিজের নয় বরং তা হারুনের নিজের অর্জিত (যিনি তারেক নাম ধারন করেছেন)।
ফারুক হোসেন কেন হারুন অর রশীদ নাম ধারন করেছেন – এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, হারুন অর রশীদ ভুয়া জন্ম তারিখ ব্যবহার করে তারেক নাম ধারন করে বিমান বাহিনীতে চাকরি নেওয়ায় ভেরিফিকেশনে সঠিক তথ্য বের হয়ে যাওয়ার ভয়ে ছোট ভাই ফারুক হোসেন হারুন অর রশীদ নাম ধারন করেছে।
বিষয়টি নিয়ে জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্রিকায় নিউজ প্রকাশিত হয়।বিশেষ করে দৈনিক আজকের বার্তা ও দৈনিক ভোরের ডাক সহ একাধিক পত্রিকায় নিউজ প্রকাশের পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল কাইয়ুম লিখিতভাবে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে তদন্তের নির্দেশ দেন।দায়িত্ব পেয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মীর একেএম আবুল খায়ের তদন্তের নামে টালবাহানা শুরু করেন। ফারুক হোসেনের এসএসসি পাশের প্রত্যয়ন পত্র সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় থেকে সংগ্রহ না করে ফারুক হোসেন এবং হারুন অর রশীদ একই ব্যক্তি বলে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।পর্যাপ্ত ডকুমেন্টস থাকা স্বত্বেও টাকার বিনিময়ে দুই জন আলাদা ব্যক্তিকে একই ব্যক্তি দেখিয়ে প্রতিবেদন দাখিল করে অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা মঠবাড়িয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মীর একেএম আবুল খায়ের। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার বিষয়টি তিনি নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল কাইয়ুম এবং জেলা শিক্ষা অফিসার ইদ্রিস আলী আযিযী বিষয়টি অবগত হয়েছেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন