ময়মনসিংহে বিদেশে পাঠানোর নামে কোটি টাকা আত্মসাৎ

বিদেশে পাঠানোর কথা বলে প্রতারণামূলকভাবে শতাধিক লোক জনের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে ব্যাংকার মতিউর রহমান মতির বিরুদ্ধে।

এ অভিযোগ তুলে গত শুক্রবার ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার লামাপাড়া গ্রামে প্রতারকের বাড়িতে বিক্ষোভ সমাবেশ, অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছেন ক্তভোগীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জাপানের মতো উন্নত দেশে পাঠানোর কথা বলে কারো কাছ থেকে ৮-১০ লাখ আবার কারো কাছ থেকে ২০-২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন তিনি। প্রতারক মতিউর রহমান জনতা ব্যাংকে সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার হিসেবে ঢাকার মতিঝিল কর্পোরেট শাখায় কর্মরত আছেন।

কর্মসূচীতে অংশ নেন ভুক্তভোগী মোজাম্মেল হক, মোঃ আনোয়ার হোসেন, জহিরুল ইসলাম রনি, মনিরুল ইসলাম, শরিফ মিয়া, মোঃ নিজাম উদ্দিন, রাব্বী, মোঃ আমিনুল ইসলাম, মোঃ জুনাঈদ তালুকদার, মোঃ কায়সুল আজম, আঃ মোমেন তালুকদার, মোঃ আবু ইউসুফ, হাফিজুর রহমান, গোলাম মোহাম্মদ ফারুক আহমেদসহ অনেকেই।

ভুক্তভোগী মো. ওবায়দুল হক তরুণ বলেন, মতিউর রহমান মতি জাপান নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ২০২০ সাল থেকে অদ্যাবধি পর্যন্ত বিভিন্ন ছলচাতুরির মাধ্যমে আমার কাছ থেকে ৪০ লক্ষ টাকা প্রতারণা করে নিছে। আমার বাবার পেনশনের টাকা ও জমি বিক্রি করে তাকে টাকা দিয়েছিলেম। আমাদেরকে ঢাকার আমি তার আত্মীয় স্বজনের কাছে বিচার চেয়েও কোন সুরাহা পাইনি।

টাকার জন্য চাপ দিলে সে আমাকে আমার টাকার বিপরীতে ব্যাংক চেক ও স্ট্যাম্প করে দেয়। আমি এগুলো দিয়ে মামলা করেও আমার টাকা উদ্ধার করতে পারিনি। আমার মতো প্রায় শতাধিক লোকজনের কাছ থেকে দেড় থেকে দুই কোটি টাকা নেয় এই প্রতারক। এ ঘটনায় আমি আমার টাকা ফেরৎ চাই ও তাঁর শাস্তি চাই।

ভুক্তভোগী আরিফ আহমেদ বলেন, জাপানে নেয়ার কথা বলে মতিউর রহমান আমার কাছ থেকে ৬ লক্ষ টাকা নিয়েছে। আমি এই টাকা জমি বন্ধক ও বিক্রি করে দেই। তিনি ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে আমাদেরকে রাজধানীর মিরপুর-১০ এ একটি ট্রেনিং সেন্টারে জাপানি ভাষা শিখার জন্য ভর্তি করে। দীর্ঘ ৪ মাস ট্রেনিং করার পর আমাদেরকে মেডিকেল করানো হয় এবং কিছুদিনের মধ্যে আমাদের ফ্লাইট হবে। বারবার আমাদেরকে পাঠানোর তারিখ পরিবর্তন করতে থাকে।
আমাদেরকে বলে ট্রেনিং এর এজেন্সি বিদেশে নেয়ার ব্যবস্থা করে দিবে। পরে আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারি এটি একটা ভুয়া এজেন্সি। আমরা টাকা দেয়ার জন্য চাপ দিলে তিনি দেই দিচ্ছি করে প্রায় দুই বছর পার করে দিছে। আমাদের টাকাটা উদ্ধার ও এই ঘটনার সুবিচার চাই।

ভুক্তভোগী মো. তোয়াহা বলেন, আমার ভাতিজা, ভাগিনা ও নাতিদেরকে বিদেশে নেয়ার কথা বললে আমি তাকে জমি বিক্রি করে ২৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দেই। কিন্তু দুই বছর পার হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত বিদেশ নেয়া তো দূরের কথা আমাদের টাকাও ফেরৎ দিচ্ছে না। আমাদের ব্যাংক চেক দিলেও কোন টাকা ফেরৎ দিচ্ছে না। আমরা এর বিচার চাই।

অভিযুক্ত মতিউর রহমান মতি বলেন, এলাকার লোকজনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিতেই ওআইসি ট্রেডিং নামে রাজধানী শহরের একটি কোম্পানীতে টাকা দিয়েছিলাম। কিন্তু কোম্পানীটি প্রতারণা করে। আমি এলাকার লোকজনের টাকা ফেরৎ দেয়ার জন্য চেষ্টা করছি।