মহাসড়কে শৃংখলা ফেরানোর প্রচেষ্টা কুমিল্লা হাইওয়ে পুলিশের

কুমিল্লায় মহাসড়কে শৃংখলা ফেরানোর চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে হাইওয়ে পুলিশ। সে লক্ষে চালক হেলপারদের প্রশিক্ষণসহ সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করা হচ্ছে।

সূত্রমতে, দেশের লাইফ লাইন খ্যাত এ মহাসড়কে রয়েছে অসংখ্য প্রতিবন্ধকতা। অবৈধ হাট-বাজার, বেপারোয়া গতি, পাল্লা দিয়ে যানবাহন চালানো, আইন ভেঙ্গে ইউটার্ন করা, ত্রুটিপূর্ণ ও ফিটনেসবিহীন যানবাহন চালনা, ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার না করাসহ নানা অসতর্কতার কারণে সড়কে ঘটছে দুর্ঘটনা। আর এসব দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে নিরলস পরিশ্রম করছে কুমিল্লা রিজিয়নের হাইওয়ে পুলিশ।

চলতি বছরে কুমিল্লায় ৬ হাজার যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলা এবং ৮৭৯৯টি গাড়ি আটক করে দুই কোটি বিশ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া দুর্ঘটনা রোধে ১৮২টি কমিউনিটি পুলিশিং টিমের মাধ্যমে কাজ করছে ২৭৩০ জন স্বেচ্ছাসেবক।

জানা যায়, দেশের অর্থনীতির প্রধান লাইফ লাইন ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক। ব্যস্ততম এ মহাসড়কে প্রতিদিন লক্ষাধিক যানবাহন চলাচল করে। এ মহাসড়কে চালক এবং জনসাধারণের আইন ভাঙ্গার প্রবণতাও চোখে পড়ার মত। একটা সময় হাইওয়ে পুলিশের পেশাদারিত্ব এবং প্রযুক্তির অভাবে অনেক অনিয়ম হলেও সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া।

ইতিমধ্যে হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিয়নের উদ্যোগে ২৮২টি ফিডার রোডের মাথায় সচেতনতামূলক সাইনবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। দুর্ঘটনা প্রবণ এলাকা গুলো চিহ্নিত করেই এসব সর্তকতামূলক সাইন বোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। পরিবহন সেক্টরে চালক হেলপারদের নিয়ে ৩২টি প্রশিক্ষণ কর্মশালা পরিচালনা করে ১৬৫৫ জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। এ রিজিয়নে মহাসড়কে নিয়মিত অবৈধ হাট বাজার উচ্ছেদসহ জনসাধারণকে রাস্তা পারাপারে ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহারে উৎসাহিত করতে প্রতিনিয়ত কাজ করছে। স্থানীয় গণ্যমান্য ও আপামর জনগণকে নিয়ে ১৮২টি হাইওয়ে কমিউনিটি পুলিশিং ফোরাম গঠন করা হয়েছে। এতে কাজ করে যাচ্ছেন ২৭৩০ জন স্বেচ্ছাসেবক। মহাসড়কে চলাচল নিষিদ্ধ থ্রি-হুইলার, সিএনজি অটো রিকশা ও অযান্ত্রিক যানবাহনের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। এবছর ৮৭৯৯টি গাড়ি আটক করা হয়। এতে ২ কোটি ২০ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়। ১২৫টি স্পিডগান মেশিন ব্যবহার করে বেপরোয়া গতির প্রায় ৬ হাজার যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আরএফআইডি মেশিনের মাধ্যমে ক্রুটিপূর্ণ যানবাহন শনাক্ত করে প্রায় ১৬ হাজার যানবাহনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। মহাসড়কে এ বছর হাইওয়ে পুলিশ কুমিল্লা রিজিয়ন দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সচেতনতার লক্ষ্যে ২ লক্ষ লিফলেট বিতরণ করেছে যাত্রী সাধারণ ও পরিবহন চালক-হেলপারদের মাঝে।

কুমিল্লা মোটর এসোসিয়েশনের সভাপতি জামিল আহমেদ খন্দকার বলেন, হাইওয়ে পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ মহাসড়কের দৃশ্যপট পাল্টে দিতে কাজ করছেন। কঠোরতা নয়, মানবিকতা এবং আধুনিকতা দিয়েই মহাসড়ককে নিরাপদ করতে চান তিনি। এবিষয়ে প্রশাসনের সাথে পরিবহন মালিক,শ্রমিক,যাত্রী ও জনগণকেও আন্তরিক ভূমিকা রাখতে হবে।

এ বিষয়ে হাইওয়ে পুলিশ কুমিল্লা রিজিয়নের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, কঠোর আইন প্রয়োগ ছাড়াও মানবিকতা এবং আধুনিকতা দিয়ে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব। কুমিল্লা রিজিয়নের সকল সদস্যদেরকে মানবিক এবং পেশাদারিত্বের নির্দেশনা দিয়ে থাকি। জনসাধারণ এবং যানবাহন চালকরা সচেতন হলে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করা সহজ হবে।