মাদারীপুরে দুই শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে শিক্ষা অধিদপ্তরের তদন্ত
মাদারীপুরে দুই শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত শুরু করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। বুধবার (৬ মার্চ) দুপুরে সদর উপজেলা কার্যালয়ে ১১ জন শিক্ষকের সাক্ষ্য নেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক মো. সাজ্জাদ হোসেন। পরে অভিযুক্ত দুই শিক্ষা অফিসারেরও সাক্ষ্য নেয়া হয়।
জানা যায়, মাদারীপুর সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মাসুদ করিম ও সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার সৈয়দাতুন নেছা রূপার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১১ জন প্রধান শিক্ষক ও সহকারি শিক্ষক প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে প্রধান কার্যালয়ের সচিব বরাবর লিখিত দেন।
গত বছরের ০৪ ডিসেম্বরের এই অভিযোগে বলা হয়, ওই দুই উপজেলা শিক্ষা অফিসার অফিসে কাজের বিনিময়ে বিভিন্ন শিক্ষকের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণ, ক্ষমতার অপব্যবহার, অফিস ফাঁকি দিয়ে নেশায় আসক্ত হন, অবৈধভাবে বিলাস বহুল গাড়ি কিনে যাতায়াত করেন। যা সরকারি নিয়মপরিপন্থি কাজের সামিল। বিষয়টি আমলে নিয়ে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
পরে ০৬ মার্চ অভিযোগ দাখিলকারী ১১ জন শিক্ষকের সাক্ষ্য নেন তদন্ত কমিটির প্রধান ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক মো. সাজ্জাদ হোসেন। তদন্তের স্বার্থে কোন মন্তব্য দিতে রাজি হননি কমিটি।
মাদারীপুরের পুলিশ লাইনস্ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহমান বাচ্চু বলেন, ওই দুই শিক্ষা কর্মকর্তা ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়ম করেই যাচ্ছে। এজন্যই আমাদের ১১ শিক্ষকের এই প্রতিবাদ। আমরা চাই, সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কার্যালয় দুর্নীতিমুক্ত থাকুক। কোন অনিয়ম চাই না।
আরেক সহকারি শিক্ষক মাসুদ সুমন বলেন, আমরা ১১ শিক্ষক মিলে প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা মন্ত্রনালয়ে ওই দুই শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে লিখিত দেই। পরে আমাদের সাক্ষ্য নিলে সবাই আলাদাভাবে তদন্ত কমিটির কাছে ঘটনার সবকিছু পুনরায় লিখিত দিয়েছি। অভিযুক্ত দুই শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিবে অধিদপ্তর, এমনটাই প্রত্যাশা করছি।
এদিকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে মুঠোফোনে অভিযুক্ত সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার মাসুদ করিম বলেন, বেনামে কয়েকজন শিক্ষক একটি অভিযোগ দিয়েছে, যার কোন ভিত্তিই নেই। যেহেতু তদন্ত হচ্ছে, প্রতিবেদন পাওয়া গেলে পরবর্তীতে বিষয়টি বোঝা যাবে।
আরেক অভিযুক্ত ও সহকারি সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার সৈয়দাতুন নেছা রূপা বলেন, অভিযোগ তো যে কেউই দিতে পারি। তদন্তে সত্য মিথ্যা উঠে আসবে।
মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল মামুন বলেন, এমন অভিযোগের বিষয়টি অবগত থাকলেও সরাসরি মন্ত্রনালয় ও শিক্ষা অধিদপ্তর বিষয়টি তদারকি করছে। সেখান থেকেই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমাদের কাছে কোন তথ্য চাইলে সেটা সরবরাহ করা হবে। এখনো এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনকে কোন চিঠি দেয়া হয়নি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন