মাদারীপুরে শহীদ মিনারে জুতা পায়ে ছাত্রলীগ নেতার শ্রদ্ধা, ক্ষোভের সৃষ্টি

মাদারীপুর মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে জুতা পরে ভাষাশহীদদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ছাত্রলীগের নেতা।

সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মনজুর ইসলাম এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এই নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। তবে সে দাবি করছেন ধাক্কাধাক্কির কারণে জুতা খুলার সময়ের সুযোগ হয়নি তার। ছাত্রলীগ সভাপতির এমন কর্মকাণ্ড নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও সুশীল সমাজ।

মঙ্গলবার ( ২১ ফেব্রুয়ারি ) রাতে মাদারীপুর সরকারি কলেজ মাঠে সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তাদের নেতাকর্মীদের নিয়ে শহীদ মিনারে ফুল দিতে গেলে এ ঘটনা ঘটে।

২১ শে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে রাত ১২টা ১ মিনিটে শহীদ মিনারে মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন প্রথমে ফুল দিয়ে ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। পরে পর্যায়ক্রমে মাদারীপুর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশীদ নীরব, পুলিশ সুপার মাসুদ আলম, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুনির চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগ, বিএনপি, যুবলীগ, যুবদল, ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ ফুল দিয়ে ভাষা শহিদদের প্রতি সম্মান জানিয়েছেন।

জুতা পায়ে শ্রদ্ধা জানানোর বিষয়ে জানতে চাইলে সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মনজুর ইসলাম বলেন, খুব ভীড় আর ধাক্কাধাক্কি থাকার কারণে জুতা খুলার সুযোগ হয়নি আমার। আমি জুতা খুলতে গিয়েছিলাম কিন্তু পেছনে আমাদের নেতাকর্মীর অনেক চাপ ছিল তখন জুতা পায়েই উঠে গিয়েছি।

এ ব্যাপারে মাদারীপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ হোসেন অনিক বলেন, আমি বিষয়টি জানিনা। প্রচন্ড ভীড়ের কারণে এই ঘটনা ঘটতে পারে। আমি তার সাথে কথা বলে দেখবো। তিনি ইচ্ছাকৃত নাকি অনিচ্ছায়কৃত কাজটি করেছেন।

মাদারীপুরের সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি ইয়াকুব খান শিশির বলেন, এটি আমাদের জন্য খুবই লজ্জাজনক কথা। যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা আজ বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারছি, তাদের শ্রদ্ধা জানানো হলো জুতা পায়ে দিয়ে। তাদের ছাত্রত্ব ও শিক্ষা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে যায়। ঘটনাটি দুঃখজনক।

এ বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর কবির বলেন, এটি অত্যন্ত গর্হিত কাজ। তিনি জুতা পায়ে দিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে পারেন না। আমি এর নিন্দা জানাই।