মালোয়েশিয়া পাঠানোর প্রলোভনে ৯ যুবকের ২০ লক্ষাধিক টাকা ও পাসপোর্ট নিয়ে লাপাত্তা দালাল
মালোয়েশিয়া পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে উপজেলার ইতনা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের ৯ যুবকের প্রায় ২০ লক্ষাধিক টাকা ও তাদের পাসপোর্ট নিয়ে লাপাত্তা এক দালাল।
জানা যায়, উপজেলার ডিগ্রিরচর গ্রামের তৈয়ব আলীর স্ত্রী জামিলা বেগম অভাব অনটনের সংসারে জীবিকার তাগিদে ধার দেনা করে বড় ছেলে হাসান জামিলকে প্রায় ৬বছর আগে মালোয়েশিয়া পাঠায়। সেই সুবাদে ঢাকায় অবস্থিত মালোয়েশিয়ান দুতাবাসের সামনে পরিচয় হয় খুলনা জেলার দিঘলিয়া উপজেলার বাতিভিটা গ্রামের রহমান শেখের ছেলে সালমান শেখের সাথে। পরিচয়ের পর উভয় পরিবার উভয়ের বাড়িতে যাতায়াত করতেন। ফলে সালমান শেখ তাদের পরিবারের মধ্যে একটা নীবিড় সম্পর্ক তৈরি করতে সামর্থ হয়। যাতায়াতের এক পর্যায়ে জামিলা বেগমকে তার ছোট ছেলে হাসিবুর শেখসহ ৯ যুবককে মালোয়েশিয়া পাঠানোর প্রলোভন দেখান। তার লোভনীয় অফারে প্রলুব্ধ হয়ে পড়ে জামিলা বেগমসহ অন্য যুবকরা। দালাল তাদের পাসপোর্ট জমা নিয়ে মেডিকেল সম্পন্ন করেন। পরে অন্যান্য ভূয়া কাগজপত্র প্রস্তুত করে মালোয়েশিয়া গমনের দিন-ক্ষণ জানিয়ে জামিলা বেগমকে টাকা পাঠানোর কথা জানায়। জামিলা বেগম তার ছেলেসহ ৯ যুবকের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে জামিলা বেগমের নামীয় লোহাগড়া ইসলামী ব্যাংক সঞ্চয়ী হিসাব থেকে গত বছরের ২২ নভেম্বর থেকে বিভিন্ন তারিখে দালাল সালমান শেখের নামীয় ইসলামী ব্যাংক এ্যালিফ্যান্ট রোড, ঢাকা শাখায় ১৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা প্রেরন করেন। টাকা পাওয়ার পর দালাল ওই যুবকদের বিদেশ না পাঠিয়ে বিভিন্ন ভাবে টালবাহানায় সময় ক্ষেপন করতে থাকে।
এক পর্যায়ে দালাল তার মোবাইল ফোনের সুইচ বন্ধ করে আত্মগোপনে চলে যায়। তার আত্মগোপনে হতাশ হয়ে পড়েন ওইসব বিদেশ প্রত্যাশী যুবকসহ তার পরিবার। ক্ষতিগ্রস্থ যুবকরা টাকা ও পাসপোর্ট ফেরত পাওয়ার জন্য জামিলা বেগমের ওপর অব্যহত চাপ প্রয়োগ করতে থাকে।
এ ঘটনায় জামিলা বেগম বাদী হয়ে দালাল সালমান শেখকে প্রধান আসামী এবং তার পিতা ও দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে গত ৩ আগষ্ট নড়াইলের বিজ্ঞ আমলী আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। যার নম্বর সিআর ২১৫/২৩ (২)। আদালত আগামী ২৪ আগষ্ট আসামীদের আদালতে হাজির হওয়ার জন্য সমন প্রদান করেন। সমন প্রদানের খবর পেয়ে প্রধান আসামী সালমান শেখ আদালতের ধার্য্যকৃত তারিখের আগেই দেশ ত্যাগের জন্য জোর তৎপরতা চালাচ্ছে বলে ভূক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে।
সূত্রে আরও জানায়, সালমান শেখ তার নিজ এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতারনার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে বেকার যুবকদের পথে বসিয়েছেন। আদালতকে পাশ কাটিয়ে গোপনে যেন বিদেশ যেতে না পারে সে লক্ষে প্রশাসনের সহযোগীতা চেয়েছেন ভূক্তভোগী ইতনা ইউনিয়নের ডিগ্রিরচর গ্রামের তৈয়ব আলীর ছেলে হাসিবুর রহমান, মৃত আকতার শেখের ছেলে রবিউল ও হাফিজ শেখ,মোমরেজ’র ছেলে ইয়াছিন শেখ, চর-দৌলতপুর গ্রামের মৃত নূর মিয়া শেখের ছেলে মোরশেদ শেখ,লাভলু মোল্যার ছেলে পারভেজ মোল্যা,কামরুল শেখের ছেলে আলীম শেখ,নড়াগাতী থানা এলাকার সিরাজ তরফদারের ছেলে রহমান তরফদার ও গোপালগঞ্জ জেলার মানিকদিয়া গ্রামের কাইয়ুম মোল্যার ছেলে বাবু মোল্যা সহ তাদের পরিবার।
এ ব্যাপারে সালমান শেখের সাথে যোগাযোগের মোবাইল ০১৯৬৬৯৩৫..৬৬ ও ০১৬১৫১৫৫..৭১ দু’টি নম্বরে ফোন করলে ফোনের সুইচ বন্ধ পাওয়া যায়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন