মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে টিউবওয়েলে উঠছে না পানি, সৃষ্টি হয়েছে চরম দুর্ভোগ

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। টিউবওয়েলে পানি ওঠা বন্ধ হওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। পানির অভাবে গবাদিপশু পালন ও সংসারের কাজকর্মও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

কমলগঞ্জের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর বলছে, পানির স্তর নিচে নামার কারণে হ্যান্ড টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। এবং এটি বরোর মৌসুম হওয়াতে এসময় প্রচুর পানির চাহিদা, মূলত সেচ কাজে প্রচুর পানি ব্যবহার হওয়াতে এই সমস্যা হচ্ছে। তবে বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলেও আশা করছে তারা।

সরেজমিনে কমলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ গ্রামের হ্যান্ড টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। ফলে মানুষ চমর দূর্ভোগের মধ্যে রয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় সেচ কাজের ব্যবহৃত ডিপটিউবওয়েল থেকে কলস, বালতি ও হাড়িতে করে সাংসারিক কাজের জন্য পানি আনতে দেখা গেছে। এই সমস্যার কারণ হিসাবে অনেকেই বরো ক্ষেতের জন্য নিয়মনীতির পরোয়া না করে যত্রতত্র ডিপটিউবওয়েল বসানোকে দায়ী করছেন।

উপজেলার পতনউষার ইউনিয়নের সোনারগাঁও (বলরামপুর) গ্রামের মিজানুর রহমান বলেন- সেচের জন্য যে নলকূপগুলো বসানো হয়েছে সেগুলো কোন নিয়ম মেনে বসানো হয়নি। এগুলো গভীর নলকূপ হওয়া কথা থাকলেও অধিকাংশ নলকূপই অগভীর এজন্য পানির লেয়ার নীচে নামায় হ্যান্ড টিউবওয়েলে পানি পাওয়া যাচ্ছে না।

তিনি বলেন- এবিষয়ে আমরা কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে প্রায় অর্ধশতাধীক ভোক্তভোগী মানুষের সাক্ষরিত ও পতনউষার ইউপি চেয়ারম্যান অলী আহমদ খানের সত্যায়নকৃত একটি লিখিত অভিযোগ প্রদান করেছি।

কমলগঞ্জ উপজেলার মুন্সিবাজারের ব্যবসায়ী নিহাদ ফয়সল বলেন, হ্যান্ড টিউবওয়েল যে লেয়ারে বসানো হয় সেই লেয়ারে সেচ কাজে ব্যবহৃত অধিকাংশ ডিপটিউবওয়েল বসানোর কারণে সাধারণ টিউবওয়েলের পানির স্তর নীচে নেমে যাওয়ায় আমরা পানি পাচ্ছি না। যার কারণে মানুষ এক প্রকার দুর্ভিক্ষের মধ্যে আছে।

মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। এব্যপারে আমরা প্রশাসনের সহযোগীতা কামনা করছি।
আলীনগর ইউনিয়নের মঙ্গলপুর গ্রামের ব্যবসায়ী ও সংবাদকর্মী মুজিবুর রহমান বলেন- টিউবওয়েলে পানি ওঠা বন্ধ হওয়ায় আমাদের চরম পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। পানির অভাবে গবাদিপশু পালন ও সংসারের কাজকর্মও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের বাল্লারপার গ্রামের ব্যাংক কর্মকর্তা মো. আব্দুল হাই বলেন- আমাদের টিউবওয়েল ও মোটরে পানি উঠছে না। আমাদের এলাকার মানুষ চরম বেকায়দায় পড়ছে। এব্যপারে প্রশাসনেরও কোন তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

এব্যাপবে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাখন চন্দ্র মূত্রধর বলেন- এবিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আমরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদেরকে নির্দেশনা দিয়েছি দিনের বেলায় যাতে কেউ পাম্প না ছাড়ে। এবং আমরা বিএডিসি সেচ এর একটি মিটিং করে তাদেরকে এগুলো তদারকি করে রির্পোট প্রদানের জন্য নির্দেশনা দিয়েছি। এবং কিছু পাম্প সাইসেন্স বিহীন বসানো হয়েছে এগুলোরও তালিকা করে দেবার কথা বলেছি। আমরা লাইসেন্স বিহীন পাম্পগুলো বন্ধ করে দেবো।