‘যতদিন বাঁচবেন লাইফ সাপোর্টেই থাকবেন এরশাদ’
নানা রোগে আক্রান্ত বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ কয়েকদিন ধরেই আছেন লাইফ সাপোর্টে। তার শারীরিক অবস্থার কখনো অবনতি আবার কখনো উন্নতির কথা বলা হয় দলের পক্ষ থেকে। এবার এরশাদের ছোট ভাই ও জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জি এম কাদের জানিয়েছেন, যতদিন বেঁচে থাকার সম্ভাবনা থাকবে, ততদিন এরশাদ লাইফ সাপোর্টে থাকবেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় পার্টির বনানী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
জি এম কাদের বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ১০টায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ওনাকে (এরশাদ) দেখে এসেছি। তার বেডের পাশে দাঁড়িয়ে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলেছি। ডাক্তাররা গতকালের চেয়ে কিছু বিষয়ে উন্নতি, কিছু বিষয়ে অবনতি দেখছেন।’
জাপার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘ওনার ডাইজেস্টিভ সিস্টেমে সমস্যা ছিল, ব্লাড আসছিল, এখন সেই সমস্যা কমে গেছে। কিডনি ডায়ালাইসিস করার পর বিরতি দিয়ে পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় ৬০ মিলিলিটার ইউরিন সংগ্রহ হয়েছে। এটা কমপক্ষে এক লিটার হওয়ার কথা ছিল। সপ্তাহে তিন দিন ডায়ালাইসিস করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
অনেক দিন ধরেই অসুস্থতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন এরশাদ। ঠিকমতো হাঁটাচলার শক্তি হারিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। গত বছরের ২০ নভেম্বরের পর আর কোনো দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতে দেখা যায়নি তাকে। হাসপাতাল-বাসার মধ্যেই আবদ্ধ ছিলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি। গত ২৬ জুন অসুস্থতা বেড়ে গেলে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হন। প্রথমে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে ভর্তি করা হয়। অবস্থা আরও অবনতি হলে তাকে লাইফ সার্পোট দেওয়া হয়। এখনও লাইফ সাপোর্ট বহাল রয়েছে।
জি এম কাদের বলেন, ‘তার অর্গানগুলো কাজ করছে। তবে সেটি হচ্ছে ওষুধ ও যন্ত্রের সাহায্যে। তার পালস ও রক্তচাপ স্বাভাবিক রয়েছে। ডাক্তাররা মনে করছে এমন রোগীর ক্ষেত্রে কিছুদিন পর অর্গানগুলো কাজ করতে শুরু করে। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ক্ষেত্রেও তেমন কিছু আশা করছেন।’
সংবাদ সম্মেলনে জাপা মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, ‘আমরা নিয়মিত তার স্বাস্থ্যের অবস্থা আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীকে অবগত করছি। তারপরও কেউ কেউ ফেসবুকে এটা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। কেন তাকে সিঙ্গাপুর নেওয়া হচ্ছে না ইত্যাদি।
তিনি বলেন, ‘আমি সংসদে একটি ভিন্ন প্রেক্ষাপটে সেখানে বলেছিলাম, এরশাদকে দুর্নীতিবাজ বলা হয়। যদি দুর্নীতি করতেন তাহলে চিকিৎসার জন্য টাকা রাখতেন। টাকার জন্য তার কোনো সমস্যা হবে না। তিনি মন্ত্রী পদমর্যাদা ভোগ করেন। সরকারও তার চিকিৎসার ভার বহন করবে। আমাদের শরীরের শেষ বিন্দু থাকা পর্যন্ত তার চিকিৎসার কোন সমস্যা হবে না।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায়, এস এম ফয়সল চিশতী, সফিকুল ইসলাম সেন্টু, আলমগীর শিকদার লোটন, যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক এমএ রাজ্জাক খান প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনের আগে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের রোগমুক্তির জন্য দোয়া ও বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন