যবিপ্রবিতে নানা কর্মসূচিতে মহান বিজয় দিবস উদযাপন
যশোর শহরস্থ মণিহারের বিজয় স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে পুস্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে শহীদদের রূহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া-মোনাজাতসহ নানা কর্মসূচিতে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) মহান বিজয় দিবস ২০২৩ উদযাপন করা হয়েছে।
যবিপ্রবির মহান বিজয় দিবসের কর্মসূচি শুরু হয় আজ শনিবার সূর্যোদয়ক্ষণে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সম্মুখে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে সকাল ৯টায় যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেনের পক্ষ থেকে যশোর শহরের মণিহারে বিজয় স্মৃতিস্তম্ভে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন যবিপ্রবির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আনিছুর রহমান। পরে বিজয় শোভাযাত্রা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে নিয়ে যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেনের পক্ষ থেকে যশোর শহরের বকুলতলাস্থ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। একে একে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি, কর্মকর্তাবৃন্দ, কর্মচারী সমিতি, শহীদ মসিয়ূর রহমান হল ও শেখ হাসিনা ছাত্রী হলের পক্ষ থেকেও বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। অনুরূপভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালেও বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনও প্রধান ফটকে অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একাডেমিক ভবনের গ্যালারিতে ‘জাতির পিতা স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ ও ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার এবং মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাঁথার স্মৃতিচারণ’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন।
আলোচনা সখায় অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালিকে কখনো হিন্দু, মুসলমান বা অন্য জাতিগোষ্ঠী রূপে দেখেননি, সব সময় বাঙালি হিসেবেই দেখেছেন। তিনি অসাম্প্রদায়িক চেতনার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ছিলেন। বর্তমানে তাঁর এ চিন্তা চেতনাকে নস্যাৎ করতে সেই পুরানো হায়েনার দল, বাংলাদেশকে খামছে ধরার চেষ্টা করছে। তারা এ দেশকে পাকিস্তানের ভাবধারায় নিয়ে যেতে চায়। তাদের এ ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করেন ১০ নং সেক্টরের সাবেক নৌ-কমান্ডো বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ড. মো. কামরুল হুদা। দেশ মাতৃকার টানে স্বেচ্ছায় মুক্তিযুদ্ধে যোগদান, মুক্ত যুদ্ধকালীন কঠোর নৌ প্রশিক্ষণ এবং মোংলা বন্দরে দুঃসাহসিক অভিযানের স্মৃতিচারণ করেন তিনি। অনুষ্ঠানে আরেক বীর মুক্তিযোদ্ধা অশোক কুমার রায়ও মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের কোলকাতায় কিভাবে মুক্তিযুদ্ধকে সুসংগঠিত করা হয়েছে এবং মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে, সে বিষয়ে স্মৃতিচারণ করেন। তাঁদের স্মৃতিচারণ উপস্থিত সকলেই মন্ত্রমুগ্ধের মতো উপভোগ করেন।
ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোঃ আলম হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন যবিপ্রবির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আনিছুর রহমান, ডিনস কমিটির পক্ষে কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. মো. মুনিবুর রহমান, রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব প্রমুখ। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে যবিপ্রবির বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যানবৃন্দ, দপ্তর প্রধানগণ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভা পরিচালনা করেন ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের সহকারী পরিচালক তানভীর আহমেদ।
বাদ জোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে বাংলাদেশের মহান বিজয় অর্জনে নিহত সকল শহীদের রূহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন যবিপ্রবির কেন্দ্রীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মাওলানা মো. আকরামুল ইসলাম। এছাড়া মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি হলের শিক্ষার্থীদের মাঝে উন্নতমানের খাবারও পরিবেশন করা হয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন