যশোরের শার্শা আম বাজারে ট্র্যাকে চাঁদাবাজি ও বেপারীকে মারধর; প্রশাসন নীরব!
যশোরের শার্শার বেলতলা আম বাজারে এক আম ব্যাবসায়ীকে মারধরের ঘটনা উঠেছে। রবিবার (৭মে) রাত ১০ টার সময় এই ঘটানাটি ঘটে। মূলত চাঁদার টাকার জন্য তাকে মারধর করা হয়।
জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা থেকে মোঃ নুরুলহুদা নামে একজন আম ব্যাবসায়ী শার্শার বেলতলা আম বাজারে প্রতি বছর আম কিনতে আসেন। তিনি এখান থেকে আম কিনে ঢাকাতে বিক্রি করেন। গত রবিবার ঘটনার দিন রাত ১০ টার সময় ট্র্যাকে আম লোড করে ঢাকায় পাঠানোর উদ্দেশ্যে প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তখন রফিকুল ও রাসেলসহ ৪ জন চাঁদাবাজ এসে ১০০০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। তখন তিনি একটু পরে দেওয়ার কথা বললে, তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়। তার বাম চোখের উপর ঘুষি মেরে গুরুতর জখম করা হয়েছে।
মারধরের পরপরই এই বেপারীকে তুলে নিয়ে আসা হয় চাঁদা আদায় কারীদের গন্তব্য স্থানে, তখন তাকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখানো হয়, যাতে তিনি মারধর কথা কাউকে না বলে।
বেলতলা আম ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি মোঃ শাহজাহান কবির জানান,
আম বাজারের একজন বেপারীকে মারধর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, আমি খবর পেয়ে অনেক খুঁজাখুঁজির পর বেলতলা বাজারে এক পল্লী চিকিৎসকের দোকানের ভিতরে তাকে পায়। তখন সেখানে যারা মারধর করেছে তার মধ্যে অন্যতম চাঁদা আদায়কারী মনিরুল ছিলো। আমি মনিরুলকে জিজ্ঞাসা করলাম বেপারীকে কেন মারধর করা হলো, তখন সে আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এসময় বেলতলা আম বাজারে ডিউটিরত পুলিশ কর্মকর্তা এএস’আই আবু সাঈদ আমাদের পাশেই ছিলেন, কিন্তু তিনি অপরাধীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করে, উল্টো আমাকেই আটক করে পুলিশের গাড়িতে উঠায়।
বেলতলা আম বাজারের একাধিক আড়ৎদাররা জানান, যেখানে শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের পক্ষ থেকে বাজারে মাইকিং করে ঘোষণা দেয়া হয়েছে, কোন সংগঠনের পক্ষ থেকে কোনরকম চাঁদা আদায় করা যাবে না, সেখানে এ ধরনের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। এছাড়াও তারা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
আম ব্যাবসায়ী মোঃ নুরুলহুদা জানান, আমার বাসা চাঁপাইনবাবগঞ্জ, আমি এখানে ব্যাবসা করতে এসেছি, কারও সাথে মারামারি করতে নয়। ওই দিন ঘটনার পাশেই পুলিশ ভাইয়েরা ছিলেন, তারা কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করিনি। পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানালে বাগআঁচড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসে, আমার কাছে ঘটনার বিবরণ শুনে ডাইরীতে লিখে নিয়ে চলে যান। তিনি আরো জানান, আমি এঘটার সুষ্ঠু বিচার চাই।
বাগআঁচড়া মটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান কিনার কাছে ট্র্যাক থেকে চাঁদা আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমরা মনিরুলের কাছে ৩ বছরের জন্য ৭ (সাত) লক্ষ টাকা ডাক দিয়েছি, টাকা মনিরুল আদায় করে, এবং তকে বলা আছে ছোট ট্র্যাক থেকে ৪০০ শ’ টাকা ও বড় ট্র্যাক থেকে ৫০০ শত নিবে, যদি অন্য কোন সংগঠন বা ব্যাক্তি বেশি নেই ততে আমরা দায়ী নেই।
শার্শা থানার অফিসার ইনচার্জ এস এম আকিকুল ইসলাম জানান, আম ব্যাবসায়ীকে মারধরের বিষয়টি আমি শুনেছি, কিন্তু কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয় নাই, যদি লিখিত অভিযোগ দেয় তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এবিষয়ে সহকারি পুলিশ সুপার (নাভারণ সার্কেল) নিশাত আল নাহিয়ান জানান, সড়কে পণ্যবাহী ট্রাক থেকে চাঁদা নেওয়ার কোন আইন নেই, যদি কেউ চাঁদাবাজি করে তার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন