যানজটের নতুন উপসর্গ উবার : ডিএমপি কমিশনার
ভাড়ায়চালিত মোবাইল অ্যাপসভিত্তিক সেবা ‘উবার’কে রাজধানীতে যানজটের নতুন উপসর্গ হিসেবে দেখছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। উবারের গাড়ির কারণে রাজধানীতে সম্প্রতি যানজট বেড়ে গেছে বলে মনে করেন তিনি।
বুধবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১২তম বোর্ড সভায় ডিএমপি কমিশনার এই কথা বলেন।
আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘যানজটের অনেক কারণ আছে। এর মধ্যে উবার এখন একটি বড় ফ্যাক্টর। এপর্যন্ত উবারে ৫০ হাজার গাড়ি রেজিস্ট্রেশন হয়েছে। দেখা গেছে, এরমধ্যে একজন কর্মকর্তার গাড়িও আছে। আগে তিনি অফিসে আসার পর যে গাড়িটি পার্কিংয়ে থাকতো, সেটি এখন রাস্তায় উবারে পাঠিয়ে দেয়া হয়। উবারে থাকার কারণে সারাদিন ওই গাড়িটি শহরে চলাচল করে। তাতে গাড়ির ফ্লো মারাত্মকভাবে বেড়ে গেছে। এটি যানজটের জন্য বড় একটি উপসর্গ হয়ে পড়েছে।’
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা বিআরটিএ’র চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি। জনসেবার জন্য উবার চলবে। কিন্তু এর একটি নীতিমালা প্রয়োজন। কোন ধরনের গাড়ি, কত বছরের গাড়ি উবারে চলতে পারবে, সে বিষয়ে একটি নিয়ম থাকা দরকার। এখন নিয়মনীতি না থাকার কারণে পুরনো গাড়ি, লক্কড়ঝক্কর গাড়ি উবারে রেজিস্ট্রেশন হয়ে যাচ্ছে। একারণে যানজট পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে।’
নগর পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘অবৈধ জায়গা দখল ও রাস্তা দখলের বিষয়টি আমরা পর্যায়ক্রমে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছি। আমি আমাদের ক্রাইম পেট্রোল ও ট্রাফিককে বলে দিয়েছি, কোনোভাবেই যাতে রাস্তায় এক ইঞ্চি জায়গাতেও হকার বসতে না পারে।’
রাজধানীতে গাড়ি পার্কিংয়ের বিষয়ে আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘আরও একটি বিষয় হচ্ছে আমরা সবখানে নো-পার্কিং দিয়ে রেখেছি। প্রতিদিন গাড়ি বাড়ছে। সে হিসেবে বাড়ছে না রাস্তা। তাহলে নাগরিকেরা কীভাবে গাড়ি রাখবেন, কোথায় রাখবেন? আমরা বলেছি, অনলাইন গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা। আমার প্রস্তাব থাকলো, দুই সিটি মেয়র যেন ঘোষণা দিয়ে একটি টোকেন সিস্টেমের মাধ্যমে সড়কের একলাইনে অনলাইন পার্কিং চালুর ব্যবস্থা করেন। আমি মনে করি, যানজট নিয়ন্ত্রণে এটি একটি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।’
ফেব্রুয়ারিজুড়ে চলবে উচ্ছেদ অভিযান
রাজধানী ঢাকা শহরের যানজট নিয়ন্ত্রণে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে উচ্ছেদ অভিযান চলবে বলে বোর্ডসভায় জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন।
অভিযান পরিচালনার জন্য ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তার নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন ডিএসসিসি ট্রাফিকের যুগ্ম কমিশনার, স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর, জোনের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও ডিপিডিসির প্রতিনিধি।
সাঈদ খোকন বলেন, রাজধানীর যানজট নিয়ন্ত্রণে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ডিএসসিসির প্রতিটি এলাকায় বিশেষ অভিযান চালানো হবে। অভিযানে ফুটপাত অবৈধ দখলমুক্ত করা ও রাস্তায় অবৈধ গাড়ি পার্কিং বন্ধ করা হবে। অভিযানে সব রকমের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও ফুটপাত দখলমুক্ত করে পথচারীদের চলাচল উপযোগী করা হবে। পরবর্তী সময়ে কমিটি চাইলে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে এ কার্যক্রম বাড়ানো যেতে পারে।
মেয়রের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপপচালক জামাল উদ্দিন আহমেদ, ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বিলাল, পরিবহন বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী শামসুল হক, নগর বিশেষজ্ঞ স্থপতি ইকবাল হাবিব, মানাস সভাপতি অধ্যাপক ডা. অপরূপ চৌধুরী প্রমুখ।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন