যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাপলের সিইও টিম কুকের ৪০ শতাংশ বেতন কমেছে
যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাপলের শেয়ারের দাম কমায় প্রতিষ্ঠানটির সিইও টিম কুকের বার্ষিক বেতন এই বছর ৪০ শতাংশ কমেছে। সব মিলিয়ে চলতি বছরে তিনি পাবেন প্রায় ৫১১ কোটি টাকা। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিনিয়োগকারীদের সমালোচনার মুখে টিম কুক নিজেই বেতন কমানোর ঘোষণা দেন। একটি প্রতিষ্ঠানের সিইওর নিজের বেতন কাটা খুবই বিরল। টিম কুক ৪০ শতাংশ বেতন কাটার প্রস্তাব দিয়ে সিইওদের সেই বিরল তালিকায় যোগ দেন।
অ্যাপলের নির্বাহী ক্ষতিপূরণ কমিটি এই বছর টিম কুকের জন্য ৪৯ মিলিয়ন বেতন নির্ধারণ করেছে। সরবরাহ বিলম্ব ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের কারণে গত বছর আইফোন নির্মাতার শেয়ারের দাম পড়েছিল।
মার্কিন অর্থ বিষয়ক নিয়ন্ত্রক সংস্থায় জমা দেওয়া বিবৃতিতে অ্যাপল জানিয়েছে, পারিশ্রমিক কমিটি টিম কুক ও অ্যাপলের ব্যবসায়িক অবস্থার সুপারিশের ভিত্তিতে সিইওর বেতন সমন্বয় করেছে, শেয়ারহোল্ডারদের মতে।
এই সমন্বয়ের সঙ্গে টিম কুকের বার্ষিক বেস বেতনে কোন পরিবর্তন নেই। তিনি ৩০ লাখ ডলার মূল বেতনের পাশাপাশি ৬০ লাখ ডলার পর্যন্ত বোনাস পাবেন। তবে বেতনের অংশ হিসেবে অ্যাপল কর্তৃপক্ষ তাকে যে পরিমাণ শেয়ার দেবে তাতে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে।
২০২২ সালে অ্যাপল টিম কুককে ৭৫ মিলিয়ন ডলারের শেয়ার দিয়েছে। এর অর্ধেক ছিল শেয়ারবাজারে অ্যাপলের পারফরম্যান্সের ওপর ভিত্তি করে। এ বছর তাকে দেওয়া শেয়ারের পরিমাণ কমেছে চার কোটি ডলার। এর ৭৫ শতাংশ নির্ভর করবে পুঁজিবাজারে অ্যাপলের অবস্থা কেমন হবে তার ওপর।
গত বছর টিম কুকের বেতন নির্ধারণ করা হয়েছিল ৮৪ মিলিয়ন। কিন্তু বছর শেষে তিনি পেয়েছেন মোট ৯ দশমিক ৯৪ মিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে ৬ লাখ ৩০ হাজার ৬০০ ডলার তাঁর ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বাবদ ও ৭ লাখ ১২ হাজার ৫০০ ডলার ব্যক্তিগত জেট বিমানের খরচ বাবদ দেওয়া হয়।
একটি শীর্ষস্থানীয় বিনিয়োগ উপদেষ্টা সংস্থা টিম কুকের বেতন বাতিল করার জন্য অ্যাপল শেয়ারহোল্ডারদের গত বছর আহ্বান করেছিল। ইন্সটিটিউশনাল শেয়ারহোল্ডার সার্ভিসেস (আইএসএস) নামের ওই প্রতিষ্ঠানটি অ্যাপলের শেয়ার হোল্ডারদের চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, তারা টিম কুকের বেতন প্যাকেজ সম্পর্কে ‘বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন’।
কোম্পানির অভিযোগ, কুকের বেতন একজন সাধারণ অ্যাপল কর্মচারীর চেয়ে এক হাজার ৪৪৭ গুণ বেশি। ২০১১ সালে টিম কুক সহ-প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবসের মৃত্যুর কয়েক সপ্তাহ আগে অ্যাপলের সিইও হিসেবে দায়িত্ব নেন।
তার নেতৃত্বে প্রথম কোম্পানি হিসেবে অ্যাপলের শেয়ার বাজার মূল্য দাঁড়ায় তিন ট্রিলিয়ন। এর আগে, প্রযুক্তি শিল্পে একটি অস্থির অবস্থার কারণে, অ্যাপলের শেয়ারের মূল্য দুই শমিক এক ট্রিলিয়নে পড়েছিল।
করোনা ভাইরাস মহামারী, চীনে কারখানা লকডাউন, সরবরাহ বিলম্ব ও বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকটের কারণে অ্যাপলের শেয়ারের দাম গত বছরে ২০ শতাংশের বেশি কমেছে।
ফোর্বস সাময়িকীর তথ্য অনুযায়ী, ৬২ বছর বয়সী টিম কুকের ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ প্রায় এক দশমিক সাত বিলিয়ন। তিনি তার সমস্ত সম্পদ দান করার প্রতিশ্রুতি দেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন