রংপুরে বৃদ্ধার দোকানঘর দখল ও মালামাল লুটের অভিযোগ পুত্রবধুর বিরুদ্ধে

রংপুরের মিঠাপুকুরে স্বামীর উপর অভিমান করে বৃদ্ধা শ্বাশুড়ির বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন বাড়ির সামনের একটি মুদি দোকান ঘর দখল এবং স্বামী ঢাকা শহরে অবস্থান কালীন সময়ে ঘরের প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে এক পুত্রবধুর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই বৃদ্ধা বাদী হয়ে ছেলের বউ এবং বেয়াই সহ কয়েকজনকে অভিযুক্ত করে মিঠাপুকুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, মিঠাপুকুর উপজেলার বলদিপুকুর মমিনপুর গ্রামের মৃত- তাজুল ইসলাম (ক্বারীর) পালিত পুত্র পল্লী চিকিৎসক মোঃ মোস্তাফিজার রহমান লিটন মিয়ার সাথে একই গ্রামের পাশ্ববর্তী আবুল কালাম মিয়ার কন্যা মোছাঃ মরিয়ম বেগমের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠলে উভয় পরিবারের সম্মতিতে প্রায় একযুগ পূর্বে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের দাম্পত্য জীবন ভালোই চলছিলো এবং তাদের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।

লিটন মিয়া এবং তার স্ত্রী মরিয়ম বেগম ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ঢাকা শহরে যায় এবং উভয়ে চাকরিতে যোগদান করেন। পারিবারিক বিষয়কে কেন্দ্র করে তাদের স্বামী স্ত্রীর মধ্যে গন্ডগোল হলে লিটনের স্ত্রী মরিয়ম বেগম তার উঠানো বেতন স্বামীকে না দিয়ে তার ভাই আল আমিনকে পাঠিয়ে দিতেন। এ নিয়ে কথা-কাটাকাটি হলে লিটনের স্ত্রী শ্যালক আল-আমীনের প্ররোচনায় লিটনকে না জানিয়ে মমিনপুরে তার বাবার বাড়িতে আসেন। বাবার বাড়িতে আসার পর আল-আমীনের ইন্ধনে মরিয়ম বেগম স্বামী লিটনের ঘরের প্রায় কয়েক লক্ষ টাকার মালামাল বের করে নিয়ে যান। এ ঘটনায় তাকে সহযোগিতা করেন লিটনের শ্যালক আলামিন,মমিনুল এবং শ্বশুর আবুল কালাম। শুধু লিটনের ঘরের মালামাল লুটপাটেই নয় এসময় লিটনের মা এবং ওই পুত্রবধুর শ্বাশুড়ি মোহসেনা বেওয়ার একমাত্র অবলম্বন একটি টিনের দোকান ঘর সেটিও তারা নিয়ে যায়।

বৃদ্ধা মোহসেনা বেওয়ার দাবি, ওই দোকান দিয়ে তিনি জীবিকা নির্বাহ করতেন কিন্তু পুত্রবধু মরিয়ম তার বাবার বাড়ির লোকজনের সহায়তা ও কুপরামর্শে সেটাও দখল করে নিয়েছে। এখন তিনি নিঃশ্ব। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, ওই বৃদ্ধা দোকানটি নিজের টাকায় তৈরি করেছেন। তার স্বামী তাজুল ইসলাম মারা যাওয়ার পর থেকে ওই দোকান দিয়েই তার জীবিকা নির্বাহ হতো। কিন্তু সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে ওই নারী দোকানটি নিয়ে গিয়েছেন।

অভিযুক্ত ওই পুত্রবধু বলেন, তার স্বামী লিটনকে ফেরাতে এসব বাবার বাড়িতে জমা রেখেছেন।লিটন আসলে সব বুঝিয়ে দেওয়া হবে।

অভিযুক্তের স্বামী লিটন মিয়া বলেন, আমার অনুপস্থিতিতে আমার শ্বশুর বাড়ির লোকজন আমার ঘরের সমস্ত মালামাল নিয়ে গিয়েছে। এমনকি আমার মায়ের একটি মুদি দোকান ছিলো,তারা সেটাও নিয়ে গিয়েছে।

এ বিষয়ে মিঠাপুকুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, ওই বৃদ্ধার অভিযোগের আলোকে ঘটনা স্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। দোকানটি ফেরত দেওয়ার জন্য পুত্রবধুকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।