চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের টানা বৃষ্টিতে শীতকালে সবজি ব্যাপক ক্ষতি

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের টানা বৃষ্টিতে শীতকালে সবজি ব্যাপক ক্ষতি।

বুধবার সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া টানা বর্ষণে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন হাজীগঞ্জের শীতকালীন সবজি চাষীরা।

আর্থিকভাবে মুনাফা লাভ ও স্বাবলম্বী হওয়ার আশায় এই এলাকার অধিকাংশ কৃষক বাড়ির আশপাশে পতিতসহ কৃষি জমিতে আগাম শীতকালীন সবজি চাষ করে থাকেন। এরই ধারবাহিকতায় এবার ফুলকপি, পাতাকপি, সীম, মূলা, কাঁচামরিচ, টমেটো, বরবটি, বেগুন, পালংশাক, লালশাক ও লাউ চাষ করেছেন তারা। সবজি খেতগুলো সবুজ শ্যামল ছায়ায় ঢেকে গেছে। কিন্তু কয়েকদিনের টানা বর্ষণে তলিয়ে গেছে বেশির ভাগ সবজির খেত।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মোট আবাদি জমির পরিমাণ ৩২ হাজার ৮৯৬ হেক্টর। এর মধ্যে ৯০০ হেক্টর জমিতে আগাম সবজি চাষ করা হয়েছে। এবার খরিপ-২ মৌসুমে সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা ৯৫২ এবং রবি মৌসুমে দুই হাজার হেক্টর জমিতে সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

কিন্তু কয়েক দিনের তাপপ্রবাহের পর বুধবার সন্ধ্যা থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত উপজেলায় ৪৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ৮৩ মিলি মিটার বৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপসহকারী কৃষি মোঃ জহিরুল হক,

অতিবৃষ্টির ফলে উপজেলার সবজিগ্রাম খ্যাত হাজীগঞ্জ সদর ইউনিয়ন অলিপুর, বলাখাল, অর্ধশত গ্রাম ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার মাঠে থাকা আগাম সবজির ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন সবজি চাষিরা। সেই সঙ্গে নুইয়ে পড়েছে সবজি গাছের চারা এবং পচতে শুরু করেছে।

শ্রীনারায়ণ গ্রামের সবজি চাষি আহমেদ জুয়েল বলেন, আমি একটি বেসরকারি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে পাঁচ একর জমিতে আগাম জাতের ফুলকপি চাষ করেছি। প্রতিটি গাছ বেড়ে উঠেছিল কিন্তু বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার কারণে ফুলকপির গাছগুলো দুর্বল হয়ে যাচ্ছে এবং নুইয়ে পড়েছে মাটির সঙ্গে। একই কথা বলেন সবজি চাষি মো. আসাদুজ্জামান আসাদ।

উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা দিলরুবা খানম, জানান, উপজেলার বেশির ভাগ শীতের সবজি আবাদ হয় প্রাণনগর গ্রামে। এবার এখানে ৫০ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের সবজি চাষ হয়েছে।

আগাম সবজি চাষ একটু কঠিন কাজ। চারা রোপনের পর থেকে ফলন তোলা পর্যন্ত খেত পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনীয় পরিচর্যা করতে হয়। তা না হলে ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন কৃষকরা। বর্তমানে টানা বৃষ্টির ফলে আগাম সবজি চাষে আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। অতি বৃষ্টির ফলে শিকড়ে পচন ধরে চারা মরে যেতে পারে। এতে ক্ষতির মুখে পড়তে পারে আমাদের কৃষকরা।