অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার হয়ে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে এখনও সংখ্যালঘু রোহিঙ্গারা পালাচ্ছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। বুধবার সংস্থাটির মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনের প্রধান জেইদ রাদ আল-হুসেন এমন তথ্য জানান।

তিনি বলেন, রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গারা এখনও সহিংসতা, নির্যাতন ও হত্যার শিকার হচ্ছে। সেইসঙ্গে তাদের বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর এ কারণে রোহিঙ্গাদের পলায়ন এখনও অব্যাহত আছে এবং এ বছরও ১১ হাজার ৪৩২ জন রোহিঙ্গা পালিয়ে এসেছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের প্রধান বুধবার তার বিদায়ের আগে চূড়ান্ত মানবাধিকার প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। আগামী ৩১ আগস্ট তার মেয়াদ শেষ হবে।

এর আগে কমিশনে মিয়ানমারের এক শীর্ষ কর্মকর্তা যে বক্তব্য দেন তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন আল-হুসেন। কিয়াও মোয়ে তুন নামে মিয়ানমারের ওই কর্মকর্তা বলেন, তার সরকার বিশেষ কোনো সম্প্রদায় নয়, বরং সকলের মানবাধিকার রক্ষায় অঙ্গীকারাবদ্ধ।

জেইদ আল-হুসেন বলেন, ‘কমিশনে চার বছরের দায়িত্ব পালনকালে অনেক অযৌক্তিক দাবি শুনেছি, যেসব দাবি তাদের নিজের কাছেই অর্থহীন। আপনাদের কি কোনো লজ্জা নেই, জনাব- আপনাদের কি কোনো লজ্জা নেই। আমরা বোকা নই।’

তবে আল-হুসেনের বক্তব্যের ব্যাপারে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাননি মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই মহাপরিচালক।

এর আগে আলোচনায় কিয়াও বলেন, মানবাধিকার বিষয়ক যে প্রতিবেদন আল-হুসেন উপস্থাপন করেছেন তা বিকৃত ও অতিরঞ্জিত। রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতার জন্য নিরাপত্তা বাহিনীর চেকপোস্টে হামলাকেও দায়ী করেন তিনি।

কিয়াও বলেন, ‘এই ট্র্যাজেডির মূল কারণ সন্ত্রাসবাদ এবং সন্ত্রাসবাদকে কোনো অবস্থাতেই বরদাশত করা হবে না।’

মানবাধিকার কমিশন প্রধান বলেন, ‘কোনো ধরনের বক্তব্য দিয়ে বাস্তবতাকে ঢাকা যাবে না। নির্যাতনের শিকার হয়ে রাখাইন থেকে এখনও লোকজন পালাচ্ছে, এমনকি সাগরের ডুবে মরার মতো ঝুঁকি নিয়েও তারা পালাতে বাধ্য হচ্ছে।’

এ ছাড়া মিয়ানমার সরকারের ন্যাশনাল ভেরিফিকেশন কার্ড নিতে রোহিঙ্গাদের বাধ্য করা হচ্ছে বলেও জানান জেইদ রাদ। ওই কার্ড অনুযায়ী রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক নয়, বরং বিদেশী হিসেবে পরিচিত হবে।