সাফারি পার্কে জন্ম নিলো সাদা সিংহ শাবক

গাজীপুরের শ্রীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে আফ্রিকা থেকে কয়েক দফায় সাতটি সাদা সিংহ আনা হয়েছিল। এর মধ্যে রোগে ভুগে তিনটি সিংহ মারা গেছে। বর্তমানে এ পার্কে চারটি সাদা সিংহ রয়েছে। দুইটি মাদি ও দুইটি পুরুষ। গত ২৪ মে বৃহস্পতিবার তাদের পরিবারে আরও এক নতুন সদস্য জন্ম নিয়েছে।

সিংহের নিরাপত্তা ও বিভিন্ন রকমের জটিলতার কারণে বৃহস্পতিবার ৫ জুন গণমাধ্যমের কাছে বিষয়ে জানান সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে পার্কে সাদা সিংহের সংখ্যা হলো পাঁচটি।

সাফারি পার্কের বন্যপ্রাণি সুপারভাইজার মো. সারোয়ার হোসেন খান বলেন, সাদা সিংহ কিন্তু আলাদা কোনো প্রজাতির সিংহ নয়। এদের দেহে চিনচিলা নামে এক ধরণের জিন থাকে। এ জিনের উপস্থিতির কারণে এদের বর্ণ হয় সাদা। এদের শরীরের রং সাদা হলেও চোখের রং সোনালী, নীলচে-ধূসর এমনকি নীলও হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, ২০১৩-১৬ সালের মধ্যে আফ্রিকা থেকে ৭টি সাদা সিংহ আনা হলেও রোগে ভুগে তিনটি মারা যায়। পরে এ দুই দম্পতির ঘরে ২০১৬ সালে দুইটি বাচ্চার জন্ম হয়। কিন্তু এক বছরের মধ্যে ওই দুইটি বাচ্চাও মারা যায়। এর প্রায় দুই বছর পর চলতি বছরের মে মাসের শেষ সপ্তাহের কোনো এক সময় এ পার্কে আবার জন্ম নিল একটি শ্বেত সিংহ শাবক। জন্মের সময় বাচ্চাদের সাধারণত চোখ ফুটে না। এদের চোখ ফুটতে ৩-১১ দিন সময় লাগে। জন্মের সময় এদের ওজন ১-৫ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। এ সময় বাঘিনী বাচ্চাকে নিয়ে জঙ্গলের আড়ালে রেখে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখে। শাবকরা ১০-১৫ দিনে হাঁটতে শেখে। ৪-৫ মাস বয়স থেকে মায়ের দুধের পাশপাশি অন্য খাবার খাওয়ানো শেখানো হয়। এদের প্রধান খাদ্য গো মাংস। তবে প্রতি শুক্রবার জীবিত খরগোস দেয়া হয়।

প্রায় মাস পর মা সিংহটি বাচ্চাটি নিয়ে প্রকাশ্যে নিয়ে এলে তা পার্ক কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। শাবকটি মায়ের সঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুল মোতালেব জানান, এ শাবকগুলো দেড় থেকে দুই বছরের বাচ্চাগুলো প্রজননক্ষম হয়। এদের আয়ুষ্কাল পুরুষ ১০-১২ বছর এবং মাদি ১২-১৩ বছর। পূর্ণ বয়ষ্ক মাদি সিংহের দৈর্ঘ ৪ ফুট, ওজন ১৫০-২০০ কেজি এবং পুরুষদের দৈর্ঘ ৬ ফুট ও ওজন ২০০-৩০০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। এ পার্কে সাদা সিংহ ছাড়াও ১৬টি ব্রাউন সিংহ রয়েছে। প্রতিদিন পর্যটকরা সাফারি পার্কে থাকা এসব প্রাণি দেখতে ভিড় জমিয়ে থাকে। দিন দিন এখানে প্রাণিরা শাবক জন্ম দিচ্ছে, পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়ছে। আয় বাড়ছে পার্কের।