রাজবাড়ীতে প্রেমে ভাটা পড়ায় ফেসবুকে সুইসাইড নোট পোস্ট, পুলিশ গিয়ে দেখে আড্ডা দিচ্ছেন যুবক!

রাজবাড়ীর শহরের ৭নং ওয়ার্ডের ভবানীপুর গ্রামে প্রেমের সম্পর্কে ভাটা পড়ায় এক যুবক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সুইসাইড নোট লিখে আত্মহত্যার মিথ্যা হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু সুইসাইড নোটটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে জেলা পুলিশের নজরে আসে। এ সময় তাৎক্ষণিক পুলিশের মোবাইল টিম ওই যুবককে উদ্ধার করতে বাড়িতে গিয়ে জানতে পারে তিনি ফেসবুকে মিথ্যা পোস্ট দিয়েছেন।

বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাজবাড়ী জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. রেজাউল করিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সুইসাইড নোট লেখা ব্যক্তি হলেন, ভবানীপুর এলাকার মৃত গোলাম ফয়েজের ছেলে ফেরদৌস নাঈম। তার দেওয়া পোস্টে দাবী করেছেন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

পুলিশ জানায়, রাত ৯টা ৩৭ মিনিটে ফেরদৌস নাঈম নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে জেলা পরিষদের প্যাডে একটি সুইসাইড নোট ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ভাইরাল হওয়া সুইসাইড নোটে লেখা ছিল ‘আমি ফেরদৌস নাঈম, ৮৭১২৬১০..,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি নং ২০১৯০১৫৮..। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আমার ব্যক্তিগত প্রেমের সম্পর্কের ঝামেলা, সংকট মোকাবিলায় আপনারা স্ব-প্রণোদিত হয়ে যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ এবং একই সাথে ক্ষমাপ্রার্থী। কারণ আমার ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে আপনাদের অপমানিত ও লজ্জিত হতে হয়েছে। আমার বিধবা মাকে যেই মেয়ে (অশ্লীল ভাষা) বলে গালাগাল করেছে এবং আমার আম্মুর সম্মানহানী হয় এমন কথা বলেছে সেই মেয়ের বিচার আপনারা না করলেও আমার বলার কিছু নেই। কিন্তু মৃত বেলাল ফয়েজের সন্তান হিসেবে এই বিচার আমি করব। আমার মৃত্যু হলে কবরটা যেন আমার বাবার কবরেই হয় এই শেষ অনুরোধ। এর নিচে বিশেষ দ্রষ্টব্য দিয়ে আবার লেখা ছিল, এক সেট ব্লেড যেটা দিয়ে সবেমাত্র হাত কাটছি। আরেক সেট আমার বাসায় লুকানো আছে।’

এদিকে ফেসবুকে পোস্টটি ভাইরাল হলে পুলিশ তাৎক্ষণিক ওই যুবকের বাড়িতে গিয়ে জানতে পারে তিনি সুস্থ আছেন। এ ছাড়াও তিনি আত্মহত্যার মিথ্যা হুমকি দিয়েছিলেন।

এ বিষয়ে জানতে ফেরদৌস নাঈমের নম্বরে একাধিকবার কল করা হলে মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. রেজাউল করিম জানান, ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া সুইসাইড নোটটি নজরে এলে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশের মোবাইল টিম ছেলেটির বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। পরে সেখানে গিয়ে পুলিশ দেখতে পায় ছেলেটি দিব্যি সুস্থ। সে তার মা ও আত্মীয়দের সঙ্গে বসে গল্প করছিল। পরে ছেলেটিকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে জানান, ‘সে মজা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সুইসাইড নোটটি লিখেছিল।’ তবে তাকে মানসিকভাবে একটু অসুস্থ বলেও মনে হয়েছে।