রায় শুনতে আদালতের পথে খালেদা
নিজের বিরুদ্ধে দায়ের করা বহুল আলোচিত জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় শুনতে আদালতের পথে রওয়ানা করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে তিনি গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’ থেকে আদালতের উদ্দেশে রওয়ানা করেন।
চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বহুল আলোচিত জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণার প্রস্তুতি সম্পন্ন। ইতোমধ্যে বিচারকও আদালতে এসেছেন। তবে মামলার প্রধান আসামি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এখনো আদালতে পৌঁছাননি। তিনি বেলা ১১টার মধ্যে আদালতে পৌঁছাবেন এমনটা জানা গেলেও পৌনে ১২টা পর্যন্ত গুলশানের বাসা থেকে তার রওয়ানা হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে রাজধানীর পুরান ঢাকার বকশিবাজারের আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে এই মামলার রায় ঘোষণা করবেন ঢাকার বিশেষ জজ-৫ আদালতের বিচারক আকতারুজ্জামান। ইতোমধ্যে আদালতের ভেতর বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বসার জন্য একটি চেয়ার ও চেয়ারের সামনে দুটি ছোট টেবিল রাখা হয়েছে। এরই মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের কয়েকজন আইনজীবী হাজির হয়েছেন।
কারাগারে থাকা মামলার আসামি ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ ও বিএনপির সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামালকে আদালতে হাজির করা হয়েছে।
গত ২৫ জানুয়ারি রাজধানীর বকশিবাজারের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫নং বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামান রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য ৮ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন।
২০০৮ সালের ৩ জুলাই সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় রমনা থানায় মামলাটি করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সেখানে অভিযোগ করা হয়, এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে পাওয়া দুই কোটি ১০ লাখ টাকা ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দেয়া হলেও, তা এতিম বা ট্রাস্টের কাজে ব্যয় করা হয়নি। বরং সেই টাকা নিজেদের হিসাবে জমা রাখার মাধ্যমে আত্মসাৎ করা হয়েছে।
তদন্ত শেষে ২০০৯ সালে অভিযোগপত্র দেয়া হলেও ২০১৪ সালের মার্চে মামলার অভিযোগ গঠন করা হয়।
এই মামলায় অপর আসামিরা হলেন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান, মাগুরার সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ।
প্রায় ১০ বছর ধরে ঢাকার বকশি বাজারের বিশেষ জজ আদালতে এই মামলার বিচার কার্যক্রম চলেছে। এরমধ্যে ৩২ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন এবং ১৬ দিন ধরে যুক্তিতর্ক চলেছে। আদালতে হাজির না হওয়ায় কয়েকবার খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করা হয়।
খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আদালতে বলেছেন, এই ঘটনায় খালেদা জিয়া জড়িত নন, এবং সেই টাকাও আত্মসাৎ করা হয়নি, কারণ এসব টাকা এখনো ব্যাংকের হিসাবেই জমা রয়েছে।
আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থন করতে গিয়ে খালেদা জিয়া বলেছিলেন, তার বিরুদ্ধে করা সবগুলো মামলাই রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে করা, যার কোনোটির আইনি ভিত্তি নেই। এই মামলাটিও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনটিকে বানোয়াট বলেও তিনি বর্ণনা করেন।
তবে রাষ্ট্রপক্ষের দাবি, আদালতে তারা অভিযোগ প্রমাণ করতে পেরেছেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন