‘রোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশের পাশে সারাবিশ্ব’
রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সারাবিশ্ব এখন বাংলাদেশের পাশে রয়েছে। আর রাখাইনে বিপুলসংখ্যক মানুষের প্রাণহানিকে গণহত্যা বলে অভিহিত করেছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।
চলমান রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে রোববার বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী সাংবাদিকদের একথা জানান। রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে এদিন বিকেলে কূটনীতিদকদের ব্রিফ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য কূটনীতিকরা বাংলাদেশের প্রশংসাও করেছেন বলে জানান মন্ত্রী। এ ছাড়া সবাই একবাক্যে আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের ওপর জোর দিয়েছে।
গত ২৪ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইনে পুলিশ ও সেনা চৌকিতে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার অভিযোগে সেখানে নতুন করে সেনা অভিযান শুরু হয়। এর ফলে বাংলাদেশ সীমান্তে নতুন করে রোহিঙ্গাদের ঢল নামে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে প্রায় তিন লাখ রোহিঙ্গা।
এ অবস্থায় রোববার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, তুরস্ক, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ ও মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদ আলী বলেন, প্রতিটি দেশের প্রতিনিধি রোহিঙ্গাদের নিয়ে বাংলাদেশের নেওয়া ভূমিকা সমর্থন করেছেন। এত মানুষকে আশ্রয়, চিকিৎসা ও খাদ্যের ব্যবস্থা করার জন্য প্রশংসা করেছেন তারা।
রোহিঙ্গা ইস্যুকে একটি ‘জাতীয় সমস্যা’ হিসেবে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা আগে থেকেই বাংলাদেশে ছিল। আর গত মাসের ঘটনার পর বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে আরও তিন লাখ রোহিঙ্গা।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, নতুন তিন লাখ রোহিঙ্গাসহ এই মুহূর্তে বাংলাদেশে সাত লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। মিয়ানমার থেকে নতুন করে আসা লোকজনের জন্য প্রাথমিকভাবে আশ্রয়, মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করার ওপর বাংলাদেশ জোর দিচ্ছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশকে কীভাবে সহায়তা করতে চায়? এ বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রাজনৈতিক ও মানবিক দুই ক্ষেত্রেই সহযোগিতার আগ্রহ দেখিয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি দেশ বাড়তি তহবিল দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। জাতিসংঘের মাধ্যমে এ তহবিল সমন্বয় করা হবে।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামীকাল সোমবার বিকেলে এশিয়ার বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের ব্রিফিং করার কথা রয়েছে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর।
প্রসঙ্গত, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গত ২৪ আগস্ট সেনা ও পুলিশ চৌকিতে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা হামলা করেছে এ অভিযোগ করে সেখানে অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এতে নির্বিচারে রোহিঙ্গাদের হত্যা এবং বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা জানান।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন