লকডাউনকে কেন্দ্র করে ক্রেকডাউনে নেমেছে সরকার

করোনায় আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ভালো আছেন বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, বেগম খালেদা জিয়া এখনো ভালো আছেন, তার নেগেটিভ কোনো উপসর্গ দেখা যায়নি।

উল্লেখ্য, গত রোববার (১১ এপ্রিল) খালেদা জিয়ার করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে বাসাতেই তার চিকিৎসা চলছে।

সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল বলেন, ভারতের প্রধাননন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনকে কেন্দ্র করে হেফাজতের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচির সঙ্গে বিএনপিকে জড়িয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ২০০ নেতাকর্মী গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘লকডাউনকে কেন্দ্র করে ক্রেকডাউনে নেমেছে সরকার। বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার করছে। এখন পর্যন্ত ১৮১ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে পাবনায় গ্রেফতার অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে একজনের। গ্রেফতার হওয়াদের মধ্যে ছাত্রদলের বিভিন্ন ইউনিটিরে ৮১ জন, স্বেচ্ছাসেবক দলের ১১, যুবদলের ৩০ জনেরও বেশি নেতাকর্মীকে রয়েছেন। এছাড়া অন্যান্য নেতাকর্মীদের বাসায় প্রতিনিদিই পুলিশ গিয়ে হয়রানি করছে। যার কারণে নেতাকর্মীরা বাসায় থাকতে পারছে না।’

তিনি আরও বলেন, জনসমর্থন নেই বলে পবিত্র রমাজান মাসেও গ্রেফতার-নির্যাতনের হীন কার্যে লিপ্ত রয়েছে। লকডাউনের সুযোগ নিয়ে বিরোধী নেতাকর্মীদের নির্যাতনে নেমেছে সরকার।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকের এই সংবাদ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে আহ্বান জানাচ্ছি অবিলম্বে আমাদের নেতাকর্মীদের মুক্তি দিন এবং তাদের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে তা প্রত্যাহার করুন। দেশে একটা গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি করুন, গণতান্ত্রিক স্পেস তৈরি করুন। অন্যথায় এর খেসারত আপনাদের অবশ্যই দিতে হবে। জনগণের কাছে তার দায়-দায়িত্ব আপনাদের বহন করতে হবে।

সরকার হেফাজতে ইসলামকে নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে বিএনপির ওপর নির্যাতন বাড়াচ্ছে কিনা জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে একটা কর্তৃত্ববাদী এক দলীয় সরকারকে পুরোপুরিভাবে প্রতিষ্ঠা করা। সেই লক্ষ্যে তারা সবার উপরে নিপীড়ন-নির্যাতন চালাচ্ছেন যাতে করে কোনো বিরোধীকন্ঠ উচ্চারিত না হয়, ভিন্ন মত না আসে-এটাই হচ্ছে তাদের প্রধান লক্ষ্য।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘এই যে অবস্থা তৈরি হয়েছে, এটাকে হালকা করে নেওয়ার কিছু নেই। আমরা বরারবরই যেটা দেখিছি, আওয়ামী লীগের ওপর যেহেতু জনগণের কোনো সমর্থন ও জনভিত্তি নেই। তাই তারা এভাবে অত্যাচার, নির্যাতন, হত্যার মধ্যে দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে হবে। সেই কারণে এই পবিত্র রমজান মাসেও তারা এ ধরনের হীন কাজে লিপ্ত হয়েছে। বিরোধী দলের সংবিধান সম্মত অধিকার হরণ করে তারা অতীতে যে একদলীয় শাসন ব্যবস্থার স্বপ্ন দেখেছিল তা বাস্তবায়ন করতে খুন, গুম ও গ্রেফতারের ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে।’

দেশে এখন কোনো গণতন্ত্র নেই দাবি করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না। তারা জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এ কারণে বাম, ডান, ইসলামী দল, বিএনপিসহ সব দলের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে। সবার মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করছে।’

করোনার এ মহাদুর্যোগের মধ্যেও বাগাড়ম্বর বক্তব্য দেওয়া ছাড়া সরকার জনকল্যাণে কোনো কাজ করছে না উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ’করোনা মোকাবিলায় সব ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়ে আওয়ামী সরকার আরও বেশি আগ্রাসী নাৎসীবাদী পথ অবলম্বন করে বিরোধী দলকে নিঃশেষ করার কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।’